Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

বার্ধক্য ভাতা নিয়ে আশ্বাস দিল প্রশাসন

আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের ৮২৭ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার নাম কেন তালিকা থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে জানালেন মহকুমাশাসক সমীরণ মণ্ডল। পাশাপাশি, তিনি আশ্বাস দেন দরিদ্র ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা বার্ধক্যভাতা পাওয়ার যোগ্য হলে দ্রুত যাতে তাঁদের নাম তালিকায় তোলা হয়, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন তিনি। আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক অফিসের কর্মীদের গাফিলতিতে এলাকার ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শামুকতলা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৮
Share: Save:

আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের ৮২৭ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার নাম কেন তালিকা থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে জানালেন মহকুমাশাসক সমীরণ মণ্ডল। পাশাপাশি, তিনি আশ্বাস দেন দরিদ্র ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা বার্ধক্যভাতা পাওয়ার যোগ্য হলে দ্রুত যাতে তাঁদের নাম তালিকায় তোলা হয়, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন তিনি।

আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক অফিসের কর্মীদের গাফিলতিতে এলাকার ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বলে অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, এই ব্যাপারে ব্লক অফিসে দফায় দফায় অভিযোগ জানানো হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। তার জেরে গত বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক অফিসে অনশনে বসে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।

কোহিনূর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বছর সত্তরের হিরণবালা দেবনাথ ২০ মাস ধরে ভাতার টাকা না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। চাপরেরপার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের শোভাগঞ্জ গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধা ফুলন দাস আঠারো বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পেয়ে আসছেন। গত ২০ মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না তিনিও। ওই গ্রামের বছর তিয়াত্তরের অন্ধ বৃদ্ধ শশধর পাল ১৩ বছর ধরে প্রতিমাসে ৬০০ টাকা করে ভাতা পেতেন। কুড়ি মাস ধরে ভাতা না পেয়ে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। একই অবস্থা চন্ডিরঝার গ্রামের লক্ষেশ্বরী রায়, সাদা রায়, চাপরেরপাড়ের সত্তর বছরের বৃদ্ধ পুষ্পনাথ দাসের মত ব্লকের ৮২৭ জনের বেশী বৃদ্ধ বৃদ্ধার।

ফলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। পুষ্পনাথবাবু বলেন, “এক ছেলে দিনমজুরি করে দিনে ১৫০ টাকা পায়। তাও প্রতিদিন কাজ পায় না। বৌমা ও এক সন্তান-সহ ওদের তিনজনের সংসার। ওদেরই দিন চলে না, আমাকে খাওয়াবে কেমন করে। এভাবে অর্ধাহারে থেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ব্লক অফিসে গিয়ে অনশনে বসব। তাতেও যদি ভাতা পাওয়া না যায়, তাহলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেব। একই কথা শোনা গেল সুধীর রায়, সিন্ধুবালা রায়, অনিমা দাস, হাসিরানী ঘোষদের গলাতেও।

চাপরেরপাড় ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের শোভাগঞ্জ এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জন রায়ের অভিযোগ, ব্লক অফিসের যে সমস্ত কর্মীরা ওই তালিকা তৈরীতে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের চরম গাফিলতিতেই এমন ঘটনা। একই অভিযোগ শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গাব্রিয়েল হাঁসদার। তিনি জানান, শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মোট ৯৮ জন বৃদ্ধ বৃদ্ধার বার্ধক্য ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা নতুন হিয়ারিং করে কাগজপত্র ব্লক অফিসে পাঠিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভাতা পাচ্ছেন না তাঁরা। আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সজল তামাঙ্গ বলেন, “সেবা সফটওয়ারের তালিকায় যে সমস্ত বৃদ্ধ বৃদ্ধার নাম আছে তাঁদের বার্ধক্য ভাতা প্রতিমাসে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, যাঁদের নাম ‘সেবা সফটওয়্যারে’ নেই তাঁদের ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে কী কারণে তাঁদের নাম নেই, তার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে সমীক্ষা করে তালিকা থেকে বাদ পড়া বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের নামের তালিকা জেলাতে পাঠানো হয়েছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy