রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদক চুরির তদন্তে সিবিআইকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট।
নোবেল চুরির ঘটনায় সিআইডি তদন্তের দাবি জানিয়ে জনস্বার্থে দায়ের করা একটি মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার ওই ঘটনা ঘটে। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি সিবিআই-এর কৌঁসুলির উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘‘আপনারা কিছুই করতে পারেননি। চুরির কিনারা যখন করতে পারেননি, তখন অন্য কোনও সংস্থাকে তদন্ত করতে দিন।’’
রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কারের মেডেল চুরির তদন্ত সিবিআই ব্যর্থ হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে ও সিআইডি তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় গত জুলাই মাসে। এ দিন সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি তিওয়ারি ও বিচারপতি হরিশ টন্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, বোলপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সিবিআই দু’বার জানিয়েছে যে এই তদন্তে তারা কোনও সূত্র পায়নি। তারা আর তদন্ত করতে চায় না। চূড়ান্ত রিপোর্টও জমা দিয়েছে। রাজ্য সরকার চুরির কিনারা করতে বিশেষ দল গঠন করেছে। সিবিআই-এর কাছে তাদের তদন্তের নথিপত্র চাওয়া হচ্ছে। তারা তা দিতে চাইছে না।
সিবিআই-এর কৌঁসুলি মহম্মদ আসরাফ আলি আদালতে জানান, ২০০৪ সালে নোবেল পদক চুরি হয়। তখনই রাজ্য সরকার সিবিআই-কে চুরির তদন্তের অনুমতি দেয়। সেই অনুমতি প্রত্যাহার করা যায় না। তদন্তের নথিপত্র রাজ্যের হাতে তুলে দিতে হলে কেন্দ্রের অনুমতি লাগবে।
তা শুনে বিচারপতি টন্ডন সিবিআই-এর কৌঁসুলির উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা তো বোলপুরে আদালতে জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ। যদি তদন্তে ব্যর্থই হন, তা হলে অনুমতির প্রয়োজন কোথায়? অন্য কোনও সংস্থা সেই তদন্ত করুক। রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদক জাতীয় সম্পদ। এখনই অন্য কোনও সংস্থার হাতে তদন্তের ভার তুলে দেওয়াই সঠিক পদক্ষেপ।’’ সিবিআই-এর কৌঁসুলি জানান, তাঁকে হলফনামা পেশ করে বক্তব্য পেশের সুযোগ দেওয়া হোক।
তা শুনে বিচারপতি তিওয়ারির পর্যবেক্ষণ, ‘‘জাতীয় সম্পদ চুরির কিনারা করতে সিবিআই দু’বারই ব্যর্থ। নিজেরাই বোলপুর আদালতে জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে কোনও সূত্র মেলেনি। অন্য কোনও সংস্থা যদি কোনও সূত্র পেয়ে তদন্ত করতে চায়, তা হলে তাদের হাতে তদন্তের নথিও তুলে দেবেন না? আমার কথা শুনতে রূঢ় লাগবে হয়ত, কিন্তু তাহলে স্বীকার করুন আপনারা দেশ-বিরোধী। নোবেল পদক দেশে ফিরে আসুক তা আপনারা চান না।’’ সিবিআই-এর আইনজীবী জানান, রাজ্য যদি কোনও সূত্র পেয়ে থাকে তা হলে বরং সেই সূত্র কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দিক।
তাতে আপত্তি জানান মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী সন্দীপ ভট্টাচার্য। তিনি জানান, বোলপুর আদালতে ২০০৯ সালে দ্বিতীয় বার চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। এও জানিয়েছে, তারা আর তদন্ত করতে চায় না। ২০১০ সালে ওই আদালত সিবিআই-এর বক্তব্য মেনেও নেয়। তার পরে আরও সাত বছর কেটে গিয়েছে।
ডিভিশন বেঞ্চ সব পক্ষের বক্তব্য নথিভূক্ত করে জানিয়ে দেয়, সিবিআই-এর যুক্তি এবং বক্তব্য আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছে না। তবে সিবিআই যখন হলফনামা পেশ করতে চাইছে, সেই সুযোগ তাদের দেওয়া পারে। সাত দিনের মধ্যে হলফনামা পেশ করতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে পনেরো দিন পরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy