প্রতীকী চিত্র।
স্কুল থেকে বেরিয়ে শিক্ষিকা মাঠ পেরিয়ে আসছেন। তা চোখে পড়লেই মাঠের উল্টো দিকে থাকা গৃহস্থবাড়িতে হাঁকডাক শুরু হয়ে যায়, ‘‘বাথরুমে কেউ নেই তো?’’ কেউ বলেন, “দিদিমণি আসছে রে, এক বালতি জল তুলে রাখ।” কেন আসছেন? স্কুলে শৌচাগার নেই যে। তাই তাঁদের কাউকে এগিয়ে আসতে দেখলেই উল্টো দিকের গৃহস্থবাড়ির লোকজন বুঝে যান, এমনই কোনও প্রয়োজনে আসছেন তিনি।
জলপাইগুড়ি মণ্ডলঘাট বিএফপি স্কুলে এমনই হয়ে আসছে বহু দিন।
স্কুলে এখন ৬২ জন পড়ুয়া এবং ৩ জন শিক্ষিকা। কিন্তু শৌচাগার নেই। স্থানীয়দের একাংশের কথায়, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তা-ও আড়ালে আবডালে যেতে পারে। কিন্তু শিক্ষিকাদের পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। স্কুলের প্রবীণ শিক্ষিকা দীপালি সিংহ রায়ের কথায়, “শৌচাগারের প্রয়োজন পড়লেও আগে লজ্জায় কোনও বাড়িতে যেতাম না। কষ্ট করে থাকতাম। শেষে নানা অসুখ হতে শুরু করল। এখন বাধ্য হয়ে যাই।”
স্থানীয়দের কথা অনুযায়ী, এই স্কুলে কোনও সময়ই তাঁরা শৌচাগার দেখেননি। পাশেই হাইস্কুল। সেটির শৌচাগার পেরিয়ে আর একটি শৌচাগার আছে। কিন্তু সেটি এতটাই নির্জন এবং তার চার দিকে ঝোপঝাড়ে ভর্তি যে, ছাত্রীরা যেতে চায় না। বছর দশেক আগে তারও পাশে একটি শৌচাগার তৈরি হয়েছিল বলে শিক্ষিকারা দাবি করলেন। সেটি খোলা জায়গায় হওয়ায় সে ভাবে ব্যবহার করা যায়নি কখনওই। এখন সেটা আর ব্যবহারের উপযোগীও নেই। এই পর্যন্তই। আপাতত এই ভাবেই চলছে স্কুল। আরও দুই শিক্ষিকা রীতা রায়, প্রদীপ্তা দাস বলেন, “বাধ্য হয়ে আশেপাশের বাড়িতে যাই। বাড়ির লোকেরা মানা করেন না। কিন্তু স্কুলের ছোট মেয়েগুলোর জন্য খুব চিন্তা হয়।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় বলেন, “কিছু স্কুলে সমস্যা তো ছিলই। কোভিডের সময় বন্ধ থাকায় সেই সমস্যা আরও গুরুতর হয়েছে। সরকারের সব দিকে নজর আছে।”
স্থানীয়েরা জানান, গত দু’বছরে স্কুলের বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তা ঠিক হয়নি। উল্টো দিকের বাড়ির অনুপকুমার বৈদ্য বলেন, “শিক্ষিকারা বাধ্য হয়ে আসেন। আপত্তি করি না।” পঞ্চায়েত সদস্য ডলি বৈদ্যের বাড়িও কাছে। তিনি বলেন, “শিক্ষিকাদের বলেছি, আমার বাড়ির শৌচাগার ব্যবহার করতে পারেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy