Advertisement
২১ অক্টোবর ২০২৪
Krishnanagar case

ধর্ষণ বা অন্য নির্যাতনের চিহ্ন নেই, প্রায় ৯০% দগ্ধ কৃষ্ণনগরের তরুণীর শরীর! বলছে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট

রিপোর্টে বলা হয়েছে, তরুণীর শরীরে ধর্ষণ বা অন্য কোনও শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন মেলেনি। শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ। আগুনে পুড়ে গিয়েছিল মৃতার মুখ এবং শরীরের নিম্নাংশ।

ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।

ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৫৮
Share: Save:

কৃষ্ণনগর-কাণ্ডে তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলেই প্রথম থেকে দাবি করে আসছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তার কোনও উল্লেখ মিলল না। রিপোর্টে বলা হয়েছে, তরুণীর শরীরে ধর্ষণ বা অন্য কোনও শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন মেলেনি। শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ। আগুনে পুড়ে গিয়েছিল মৃতার মুখ ও নিম্নাংশ। তবে শরীরের কোনও অংশে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই।

রিপোর্ট অনুযায়ী, তরুণীর শরীরে পুড়ে যাওয়ার যে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে, তার সব ক’টিই ‘থার্ড বা ফোর্থ ডিগ্রি’র। মাথার চুল, দু’টি হাত ও মুখের সিংহভাগই পুড়ে গিয়েছে। কেরোসিন তেল জাতীয় কিছু দিয়ে গায়ে আগুন দেওয়া হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। শ্বাসনালিতে কার্বনের অস্তিত্ব মিলেছে। ভিসেরা, ইউটেরাস, সার্ভিক্স, ফ্যালোপিয়ান টিউব, জরায়ু থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য।

গত বুধবার কৃষ্ণনগরে পুলিশ সুপারের দফতরের অদূরে একটি পুজোমণ্ডপ থেকে উদ্ধার হয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর দেহ। পরিবারের দাবি ছিল, তাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তরুণীর প্রেমিকের বিরুদ্ধেই সেই অভিযোগ তুলেছিল তারা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ধৃত বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়, তরুণী আত্মহত্যা করেছেন না কি তাঁকে ধর্ষণ করে খুনের পর জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরেই জানা যাবে। সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর তদন্তকারীদের একাংশ আপাতত আত্মহত্যার তত্ত্বেই সিলমোহর দিচ্ছেন।

আবার তদন্তকারীদের অন্য একটি অংশকে এখনও কয়েকটি প্রশ্ন ভাবাচ্ছে। এক, কলেজ মাঠে অন্য এক তরুণের সঙ্গে দেখা গিয়েছে তরুণীকে। কিন্তু সেখানে তিনি কী ভাবে গিয়েছিলেন? দুই, মৃতার প্রেমিকের পরিবারের দাবি অনুযায়ী, অভিযুক্ত ঘটনার দিন কৃষ্ণনগর নয়, রানাঘাটে উপস্থিত ছিলেন। ওই দিন তরুণীর ফোন থেকে একাধিক বার অভিযুক্ত যুবকের (প্রেমিক) মোবাইলে কল করা হয়েছে। সেটা কি সাধারণ কথাবার্তার জন্য, না কি দু’জনের মধ্যে কোনও গন্ডগোল হয়েছিল? তিন, মৃতা এবং ধৃত যুবকের সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় কোনও মানুষের প্রবেশ, না কি ধারের টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে দু’জনের মতানৈক্যের সূত্রপাত ঘটেছিল? চার, অভিযুক্তের দাবি, গত মঙ্গলবার, ঘটনার দিন তরুণীর সঙ্গে দেখা হয়নি তাঁর। তদন্তকারীদের তথ্য বলছে, প্রায় একই এলাকায় দু’জনের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন পাওয়া গিয়েছে। তরুণী এবং তাঁর প্রেমিকের কি আদৌ দেখা হয়েছিল?

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE