Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বিয়ের শংসাপত্র নেই, বধূ নিগ্রহের তদন্তে গড়িমসি

গত ১০ অক্টোবর নারায়ণগড় থানায় স্বামী শ্যামলকুমার মাইতি, শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে অভিযোগ দায়ের করেন অপর্ণা। অভিযোগপত্রে তাঁর দাবি, ২০০৬ সালে বিয়ের পর থেকেই পণের বাকি টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছিল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নারায়ণগড় শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:২০
Share: Save:

স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়েছিলেন এক মহিলা। কিন্তু পুলিশ পাল্টা তাঁর কাছেই বিয়ের শংসাপত্র চেয়েছে এবং সেই শংসাপত্র না দিলে তদন্ত হবে না বলেও জানিয়েছে, এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন নারায়ণগড়ের অপর্ণা মাইতি ও তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন।

গত ১০ অক্টোবর নারায়ণগড় থানায় স্বামী শ্যামলকুমার মাইতি, শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে অভিযোগ দায়ের করেন অপর্ণা। অভিযোগপত্রে তাঁর দাবি, ২০০৬ সালে বিয়ের পর থেকেই পণের বাকি টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। মেয়ে হওয়ার পরে আরও এক লক্ষ টাকা দাবি করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অপর্ণার পরিবার তা দিতে পারেনি। তার জেরেই শুরু হয় মারধর ও অত্যাচার। ৯ অক্টোবর মারধর করে তাঁকে গলা টিপে খুনের চেষ্টা হয় বলেও অপর্ণার অভিযোগ। তিনি কোনও রকমে পালিয়ে সবংয়ের বেলকিতে বাপের বাড়িতে চলে আসেন। অপর্ণার বাবা পূর্ণচন্দ্র দাস অধিকারী ও বাড়ির অন্যরা অপর্ণাকে প্রথমে সবং হাসপাতাল এবং পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করান। তার পরে বাপের বাড়িতেই রয়েছেন অপর্ণা। দশ বছরের মেয়ে ও সাত বছরের ছেলে অবশ্য রয়েছে শ্বশুরবাড়িতে।

অপর্ণা বলেন, ‘‘স্বামী প্রাথমিক শিক্ষক। টাকার জন্যেই অত্যাচার চলত।’’ ৯ তারিখ মারধরের পরেই ১০ অক্টোবর নারায়ণগড় থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ জানান অপর্ণা। কিন্তু পুলিশ পাল্টা বিয়ের শংসাপত্র চাইছে এবং তদন্তে গড়িমসি করছে বলে অপর্ণার বাড়ির লোকেদের অভিযোগ। অপর্ণার দাদা হরিচরণ দাস অধিকারী বলেন, ‘‘পুলিশে অভিযোগ জানালেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বোনের বিয়ের শংসাপত্র চাইছে পুলিশ। সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়েছে। শংসাপত্র কোথায় পাব!’’

পুলিশ সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ, ৩২৩, ৩২৫, ৩০৭, ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর নিয়ম মেনেই চাওয়া হয়েছে বিয়ের শংসাপত্র। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদও বলেন, ‘‘বধূ নির্যাতনের অভিযোগের ক্ষেত্রে বিয়ের প্রমাণপত্র তো লাগবেই।’’ পুলিশের ব্যাখ্যা, অভিযোগকারিণী বিবাহিত কিনা সেই প্রমাণ না পেলে তো বধূ নির্যাতনের তদন্ত করা সম্ভব নয়। বিয়ের শংসাপত্র না থাকলে ভোটার পরিচয়পত্র বা আধার কার্ডেও কাজ চলতে পারে। সব কিছু খতিয়ে দেখে পুলিশের তরফে অভিযুক্তকে নোটিস পাঠানো হয়। সময়সীমার মধ্যে অভিযুক্ত সাড়া না দিলে তদন্ত সাপেক্ষে গ্রেফতার করা হয়। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই নোটিস পাঠানো হয়েছে বলেই নারায়ণগড় থানা সূত্রে খবর।

অপর্ণার স্বামী শ্যামলকুমার মাইতির সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Certificate Police Torture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy