Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

কলকাতায় আনতে ঝক্কি, নবজাতকের মৃত্যু আগরতলায়

শিশুটিকে স্ট্রেচারে করে বিমানে উড়িয়ে আনার জন্য এয়ার ইন্ডিয়াকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু উড়ান সংস্থা জানায়, অক্সিজেনের সরঞ্জাম-সহ অসুস্থ যাত্রীকে নিয়ে যেতে গেলে দিন দুই অপেক্ষা করতেই হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুনন্দ ঘোষ ও বাপি রায়চৌধুরী
কলকাতা ও আগরতলা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫১
Share: Save:

ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল আগরতলার বাসিন্দা চন্দন দাসের পুত্রসন্তানের। কিন্তু চিকিৎসার জন্য অক্সিজেনের সরঞ্জাম-সহ শিশুটিকে আকাশপথে সময়মতো কলকাতায় পাঠানো যায়নি। ছ’দিনের মাথায় শিশুটি মারা যায় আগরতলাতেই।

চন্দনের জামাইবাবু পিন্টু দেব বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম, কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাব। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে উড়িয়ে আনতে গেলে লাগবে আট লক্ষ টাকা।’’ তাই শিশুটিকে স্ট্রেচারে করে বিমানে উড়িয়ে আনার জন্য এয়ার ইন্ডিয়াকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু উড়ান সংস্থা জানায়, অক্সিজেনের সরঞ্জাম-সহ অসুস্থ যাত্রীকে নিয়ে যেতে গেলে দিন দুই অপেক্ষা করতেই হবে। আগরতলার চিকিৎসক সুজিত গোপের আক্ষেপ, ‘‘আগে এমনটা হত না। মাস তিনেক আগেও সকালে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীকে অক্সিজেন-সহ সন্ধ্যার উড়ানে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু মাসখানেক ধরে সমস্যা বেড়েছে। রোগীর সঙ্গে অক্সিজেন থাকলেই জায়গা পেতে লেগে যাচ্ছে দিন দুইয়ের বেশি।’’ চন্দনের সদ্যোজাত সন্তানের অবস্থা এমনই সঙ্কটজনক হয়ে পড়েছিল যে, দু’দিনের অপেক্ষা সইল না।

এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, তারা রোগীদের অগ্রাধিকার দেয়। তবে রোগীকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যেতে গেলে রোগীর আত্মীয়দের তরফে কিছু নথিপত্র জমা দেওয়ার কথা। সেই নথিপত্র পেলে তবেই রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা হয়। অনেক সময় পরিকাঠামোগত সমস্যার যে-সব অভিযোগ যাত্রীরা তোলেন, তাড়াতাড়ি তার সমাধান করার চেষ্টাও চলছে বলে জানিয়েছে উড়ান সংস্থা। তবে অক্সিজেনের অভাবের কথা স্বীকার করা হয়নি।

রোগীকে স্ট্রেচারে নিয়ে আসার জন্য বিমানের পিছন দিকের পরপর তিনটি শ্রেণির ন’টি আসনকে শুইয়ে জুড়ে দেওয়া হয়। তার উপরে তোলা হয় স্ট্রেচার। এয়ার ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, এখন নতুন প্রজন্মের যে-বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে এই ব্যবস্থা করতে সমস্যা হচ্ছে। অক্সিজেন সরবরাহ নিয়েও কিছু সমস্যা রয়েছে। উড়ান সংস্থার এক কর্তার কথায়, ‘‘ন্যূনতম সময় না-পেলে রোগী বহনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না।’’

উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, মূলত আগরতলা থেকে নিয়মিত প্রচুর আশঙ্কাজনক রোগীকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আনা হয়।

তাঁদের জন্য বিমানে স্ট্রেচারের ব্যবস্থা করতে হয়। ইন্ডিগো, স্পাইসজেটের মতো সস্তার উড়ান সংস্থায় এই সুযোগ মেলে না। এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়াও জেট এয়ারওয়েজ এই পরিষেবা দিত। কিন্তু জেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে পুরো চাপটাই এয়ার ইন্ডিয়ার উপরে এসে পড়েছে। শুধু আগরতলা থেকেই প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ৩০ জন রোগীকে বিমানে স্ট্রেচারে করে নিয়ে আসা হয়। রোজ সেখান থেকে কলকাতায় দু’টি উড়ান রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার।

আগরতলার চিকিৎসক সুজিতবাবুর অভিযোগ, জুন-জুলাই পর্যন্তও স্ট্রেচার নিয়ে সমস্যা হয়নি। সমস্যা শুরু হয়েছে অগস্টে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, রোগীর আত্মীয়েরা সহায়তা করলে এই ধরনের সমস্যার দ্রুত সমাধান করা সম্ভব।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Baby Boy Air Ambulance Kolkata Agartala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy