Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
TMC

জনসংযোগ ফেরাতেই নয়া কর্মসূচি তৃণমূলের

লোকসভা ভোটের পরে গত জুন মাসে শুরু হয়েছিল ‘দিদিকে বলো’। ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পি কে) সংস্থার হাত ধরেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে দ্বিতীয় পর্বের কর্মসূচির।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০৪:৪৭
Share: Save:

তৃণমূল স্তরে নেতা-কর্মীদের একাংশের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগে ঘাটতির মাসুলও দিতে হয়েছে শাসক দলকে— লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরেই এই রোগ ধরা পড়েছিল তৃণমূলের ময়না তদন্তে। মানুষের সঙ্গে সেই সংযোগ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এ বার নতুন কর্মসূচি নিতে চলেছে তৃণমূল। যার লক্ষ্য আসলে বিধানসভা ভোট হলেও তার বিন্যাস এমনই যে, আসন্ন পুরভোটে দলের কাজও তার আওতায় এসে যাবে অনেকটাই।

লোকসভা ভোটের পরে গত জুন মাসে শুরু হয়েছিল ‘দিদিকে বলো’। ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পি কে) সংস্থার হাত ধরেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে দ্বিতীয় পর্বের কর্মসূচির। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কাল, সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই কর্মসূচির ঘোষণা করার কথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কর্মসূচির নাম থেকে দলের কোন স্তরের নেতার তাতে কী করণীয়— সবই ব্যাখ্যা করার কথা তাঁর। পুরোদস্তুর রাজনৈতিক এই কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে আড়াই মাস (৭৫ দিন)। তবে ‘দিদিকে বলো’র হেল্পলাইনে সমস্যা বা অভিযোগ জানানোর জানলা এখনকার মতোই খোলা থাকবে।

দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের আচরণ, জনবিচ্ছিন্নতা যে মানুষ ভাল ভাবে নেননি, লোকসভা নির্বাচনের পরে তা বুঝেই ‘কাটমানি’র প্রসঙ্গ তুলে তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মমতা নিজেই। সাংগঠনিক দায়িত্বে বেশ কিছু রদবদলও করেছিলেন। তার রেশ ধরেই এ বার আসছে ৭৫ দিনের নতুন কর্মসূচি।

পি কে-র সংস্থার এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘দিদিকে বলো-য় বেশির ভাগই সরকারি কাজ সংক্রান্ত সমস্যার সুরাহা করা হয়েছে। এখনও দিনে গড়ে প্রায় ৫ হাজার ফোন আসছে। নতুন যে কর্মসূচি হবে, জনসংযোগের জন্য বাংলায় কোনও রাজনৈতিক দলের এখনও পর্যন্ত এটাই বৃহত্তম পরিকল্পনা। রাজ্যের সব প্রান্তে তৃণমূলের এক লক্ষ পদাধিকারী এর সঙ্গে যুক্ত হবেন। দলের চেয়ারপার্সন থেকে সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাপতি, ব্লক সভাপতি পর্যন্ত সকলকে তাঁদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে হবে।’’

ওই সংস্থা সূত্রের বক্তব্য, তারা পুরভোটের জন্য কোনও পরিকল্পনা রচনার দায়িত্ব নেয়নি। কিন্তু ‘দিদিকে বলো’র সূত্র ধরেই গোটা রাজ্যে শাসক দলের নেতা-কর্মীরা কেমন দায়িত্ব পালন করছেন, তার পর্যালোচনা হচ্ছে দলের অন্দরে। তার মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই কাউন্সিলরেরাও আছেন। তাই দলের নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনাও পুরভোটকে ছুঁয়ে যাবে বলেই মনে করছে শাসক শিবির। পর্যালোচনা করতে গিয়েই এলাকা ভিত্তিতে দলের নেতা-কর্মীদের কাজ আতস কাচের তলায় ফেলেছে পি কে-র সংস্থা। ওই আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘সরকারে আসার পর থেকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে এর আগে পড়েনি শাসক দল। এখন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতেই সাংগঠনিক বেশ কিছু দুর্বলতা ধরা পড়েছে। শুধু সরকারের ভাল কাজ দিয়ে মানুষের নিঃশর্ত সমর্থন পাওয়া যায় না, যদি না স্থানীয় স্তরে শাসক দলের নেতারা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখেন। সেই কাজটার দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।’’ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ১৮টি আসন ও প্রায় ৪০% ভোট পাওয়ার পিছনে তৃণমূলের নিজস্ব ত্রুটিই অনেকটা দায়ী বলেই পর্যালোচনায় উঠে এসেছে।

আসন্ন পুরভোটে যাতে পঞ্চায়েতে ‘গা-জোয়ারি’র পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য সতকর্তাও জারি হয়েছে তৃণমূল শিবিরে। পি কে-কে পাশে নিয়ে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই এই ব্যাপারে দলকে সতর্ক করেছেন। পি কে-রও মত, পুরভোট পঞ্চায়েতের মতো হলে তার ফল হবে সুদূরপ্রসারী!

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Prashant Kishor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy