পিসিশাশুড়ি সুমিতা ঘোষকে খুনের আগে তাঁকে তাঁর প্রাক্তন স্বামী সুদীপ্ত ঘোষের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাল্গুনী ঘোষ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, খুনের দিন তিনেক আগে পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটে গিয়েছিলেন তাঁরা। সুদীপ্তের সঙ্গে দেখাও হয়েছিল সুমিতার। সেখানে সুদীপ্তকে ফাল্গুনী বলেছিলেন, ‘‘পিসিমা সংসার ফিরে পেতে চান।’’ সুদীপ্ত অবশ্য কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি ওই সময়। তিনি সময় চেয়েছিলেন।
কিন্তু কেন সুমিতাকে সুদীপ্তের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাল্গুনী, তার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তদন্তকারীদের অনুমান, সুদীপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করে পরে সুমিতাকে ‘নিখোঁজ’ দেখানোর পরিকল্পনা করেছিলেন ধৃত ফাল্গুনী এবং তাঁর মা আরতি ঘোষ। যদি তাঁরা সুমিতার দেহ লোপাট করতে সক্ষম হতেন, তা হলে সুদীপ্তের সঙ্গে সুমিতার আবার যোগাযোগের কথাই পুলিশকে বলতেন তাঁরা।
পিসিশাশুড়িকে খুনের পরেও লোভ সামলাতে পারেননি আরতি ঘোষ এবং ফাল্গুনী ঘোষ। পুলিশ সূত্রে খবর, মা আরতি এবং মেয়ে ফাল্গুনী দু’জনে মিলে সুমিতাকে খুন করার পর তাঁর শরীর থেকে সোনার গয়না খুলে সেগুলি বিক্রিও করেছিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় সে কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, পুনর্নিমাণের পর আহিরীটোলা থেকে বৌবাজারের একটি সোনার দোকানে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সেই দোকানেই সুমিতার গলার হার, কানের দুল, নাকছাবি ও বালা বিক্রি করেছিলেন ফাল্গুনীরা। মোট ৪২ হাজার টাকার গয়না বিক্রি করা হয়েছিল ওই দোকানে। শুধু তা-ই নয়, অন্য একটি দোকানে গিয়ে দু’লাখ ৫৩ হাজার টাকার নতুন গয়নার বরাতও দিয়েছিলেন আরতি এবং ফাল্গুনী। ওই দোকানে যে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন তাঁরা, সেই টাকাও সুমিতার মোবাইল থেকে অনলাইনে দেওয়া হয়েছিল বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, শুধু পারিবারিক শত্রুতা নয়, খুনের নেপথ্যে আর্থিক লেনদেন বা অন্য কোনও গভীর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।