ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ।—নিজস্ব চিত্র।
সমবায় ব্যাঙ্কে তহবিল তছরুপের অভিযোগে ইতিমধ্যেই তল্লাশি হয়েছে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের বাড়িতে। তাঁর কয়েক জন আত্মীয়েরও নাম জড়িয়েছে এর সঙ্গে।
এরই মধ্যে আরও একটি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল অর্জুনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, অর্জুন ভাটপাড়ার চেয়ারম্যান থাকাকালীন চেয়ারম্যানের নামে বেসরকারি ব্যাঙ্কে ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। কিন্তু ওই অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পুরসভায় নেই। অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে পুরবোর্ডে আলোচনাও হয়নি বলে অভিযোগ।
ভাটপাড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, পুরসভাকে অন্ধকারে রেখে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পকেটে পুরেছেন অর্জুন। অ্যাকাউন্টটি থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা লেনদেন হলেও তার স্পষ্ট হিসেব নেই। অর্জুন চেয়ারম্যান পদ থেকে সরার পরে অ্যাকাউন্টে রয়েছে মাত্র কয়েক হাজার টাকা।
অর্জুন অবশ্য বলেন, ‘‘বোর্ড অব কাউন্সিলরস-এর অনুমোদন ছাড়া কোনও অ্যাকাউন্ট খোলা যায় নাকি! এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। আর চেয়ারম্যান ত্রাণ তহবিলের নথি পুরসভায় আছে। যা হয়েছে, সব নিয়ম মেনেই হয়েছে। ওরা আইন জানে না বলেই এত চিৎকার করছে। আমার বিরুদ্ধে যে এত অভিযোগ হচ্ছে, তাতে আমি বিন্দুমাত্র চিন্তিত নই।’’
পুলিশ ও পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১১০-র ফেব্রুয়ারিতে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ব্যারাকপুর শাখায় ‘চেয়ারম্যানস রিলিফ ফান্ড ফর দ্য ভাটপাড়া মিউনিসিপ্যালিটি’ নামে অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়। পরবর্তী কালে অ্যাকাউন্ট ওই ব্যাঙ্কেরই ভাটপাড়া শাখায় সরানো হয়। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাকাউন্টের কোনও বিস্তারিত তথ্য নেই বলে অভিযোগ। অর্জুন ব্যক্তিগত ভাবে অ্যাকাউন্টটি নিয়ন্ত্রণ করতেন। ২০১৯-এর মার্চে তাঁর ভাইপো সৌরভ সিংহ ভাটপাড়ার পুরপ্রধান হন। তার পরেও অ্যাকাউন্টটি অর্জুনের নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে অভিযোগ।
থানায় দায়ের করা অভিযোগের সঙ্গে ওই অ্যাকাউন্টের ২০১৪-২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত লেনদেনের জমা দেওয়া নথিতে দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ টাকা জমা পড়েছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, ঠিকাদার বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে। অধিকাংশ টাকা তোলা হয়েছে নগদে। ত্রাণ তহবিল থেকে ব্যারাকপুরের একটি ওষুধ বিপণীকে লক্ষ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে কেটারিং সংস্থাকেও টাকা দেওয়া হয়েছে।
ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা সোমনাথ শ্যাম বলেন, “ত্রাণ তহবিলের টাকা ত্রাণের কাজে লাগানোর কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে টাকা তুলে কী ধরনের কাজে লাগানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তার নথিও নেই। পুরসভাকে লুকিয়ে অর্জুন ওই অ্যাকাউন্ট অনৈতিক লেনদেনের জন্য খুলেছিলেন। ঠিকাদার, প্রোমোটারদের কাছ থেকে অনৈতিক ভাবে টাকা নিতেন ওই অ্যাকাউন্টে। সেই টাকা নগদে তুলে নিতেন।’’
অর্জুনের ভাইপো সৌরভ সিংহ তৃণমূলের আনা অনাস্থায় পুরপ্রধানের পদ থেকে অপসারিত হন। অরুণের অভিযোগ, দেখা যাচ্ছে তার আগে অ্যাকাউন্ট থেকে সিংহ ভাগ টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy