ইউক্রেনের ওই দম্পতির স্বাস্থ্য পরীক্ষা। নেপালে। নিজস্ব চিত্র
কাঠমান্ডু যাওয়ার সময় কাঁকরভিটা সীমান্তে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জ্বর, সর্দি-কাশি ধরা পড়ে ইউক্রেনের এক দম্পতির। তখন তাঁদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে নেওয়ার কথা জানানো হয়। ওই দম্পতি রাজি না হয়ে ভারতে ফিরে আসেন। বৃহস্পতিবারের ঘটনা। শুক্রবার সেই খবর পেয়ে ওই দম্পতির খোঁজ করার জন্য পুলিশকে জানিয়েছিল দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ দিনই দুপুরে শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে তাঁদের দেখতে পেয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরে জ্বর না থাকায় ওই দম্পতিকে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে উড়ান ধরতে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, তাঁরা দিল্লিগামী বিমানে গিয়েছেন। শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ওই দু’জনের নাম অ্যানড্রিল ল্যারিজিন ও তাঁর স্ত্রী ওলেনা ক্লিনকো।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই দম্পতি দার্জিলিং ঘুরে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন। তখন নেপালের কাঁকরভিটায় তাঁদের জ্বর ধরা পড়ে বলে দাবি। দার্জিলিঙের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘আমাদের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ওই দম্পতির ৯৭.৫ ডিগ্রির মতো জ্বর ছিল। সেটা স্বাভাবিক তাপমাত্রা বলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে নেপালের দিক থেকে খবর এলে ওই দম্পতির খোঁজ নিতে বলা হয়।’’
করোনার জেরে শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পানিট্যাঙ্কি-সহ সমস্ত ভারত-নেপাল সীমান্ত দিয়ে ভারতের দিকে বিদেশি নাগরিকদের আসা বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে শুল্ক দফতরের তরফ থেকে। এ দিনই নেপাল সরকারও ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাদের দেশে বিদেশি পর্যটক ঢোকা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে। তবে ভারত এবং নেপালের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কার্যকরী নয়।
এ দিন তাইল্যান্ডের ২২ জনের একটি দল নেপাল যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। সেই মতো পানিট্যাঙ্কি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে সীমান্ত বন্ধ থাকবে বলে এ দিনই ফিরতে হবে শুনে তাঁরাও চিন্তায় পড়েন। পরে আর নেপাল যাননি। এছাড়া অনেকে সফর বাতিল করছেন। অনেক বিদেশি বা নেপালের বাসিন্দা যাঁদের প্রয়োজন রয়েছে এ দিন তড়িঘড়ি নেপাল থেকে ভারতে চলে আসেন। চিন্তায় পড়েছেন সীমান্তের ব্যবসায়ীরাও। যদিও পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ করার কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি বলে জানান শুল্ক দফতরের সুপারেনটেন্ডেন্ট অফিসার নরবু শেরিং ভুটিয়া।
এক জার্মান পর্যটক ফিলিপ্স কার্গল শুক্রবার নেপালে যেতে পানিট্যাঙ্কি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে আসেন। কিন্তু এ দিন সন্ধ্যা থেকেই ওপার থেকে ভারতে ঢোকা এক মাসের বেশি বন্ধ থাকবে জেনে তিনি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ফিলিপ্স বলেন, ‘‘করোনার জেরে সীমান্ত বন্ধ থাকবে বলে সফর বাতিল করছি। এ দিন দার্জিলিং যাব। দ্রুত দেশে ফেরার পরিকল্পনা করছি।’’ নেপালের বাসিন্দা ঢাকার সিটি ডেন্টাল কলেজের ছাত্রী শনিকা ভগৎ, রংপুর কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া সঞ্জীব মণ্ডল, সুমিনা শ্রেষ্ঠাদের মতো ৫ জন এদিন নেপাল থেকে ভারতে আসেন বাংলাদেশ যেতে। শনিকা বলেন, ‘‘১৮ মার্চ থেকে পরীক্ষা রয়েছে। তাই আজকে চলে যাচ্ছি। না হলে পরীক্ষা দিতে যেতেই পারব না।’’
তবে এ দিন তাইল্যান্ডের ২২ জন দলটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের পরামর্শ দেন তাইল্যান্ড করোনা ‘ভালনারেবল’ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে। তাঁরা কোথায় গিয়েছিলেন, তাইল্যান্ড থেকে কবে এসেছেন, করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে তাঁরা এসেছেন কি না সে সব বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে। যে ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে ওই দলটি এসেছে তাদের একজন কৌশিক চন্দ বলেন, ‘‘ওই মহিলারা বেঙ্গালুরু থেকে এসেছেন। ১৮০ দিনের ভিসা থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের বেশি একটানা থাকা যায় না। তাই এক দিনের জন্য নেপালে গিয়ে বাকি ৯০ দিন থাকার অনুমোদন চাইছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy