ডিসি শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, ‘‘ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল, তা জানতে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকার আরও কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
অনুপম দত্ত। —ফাইল চিত্র।
পানিহাটিতে তৃণমূল কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছেন। রবিবার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নিহত অনুপম দত্তের বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চলে ওই সই সংগ্রহ। অন্য দিকে, আগরপাড়া নর্থ স্টেশন রোডে যেখানে ওই কাউন্সিলর খুন হন, এ দিন ফের সেখানে যান ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাকর্তারা।
এ বারের পুরভোটে পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অনুপমের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সিপিএম প্রার্থী সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়ও এ দিন সই করেন দাবিপত্রে। তিনি বলেন, ‘‘অনুপমের সঙ্গে আমার পরিচয় রাজনীতিতে আসার আগে থেকে। ওঁর মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। ওঁকে যারা খুন করেছে, তাদের চরমতম শাস্তি চাই। সেই জন্য আমিও এই দাবিপত্রে স্বাক্ষর করেছি।’’ ধৃতদের ফাঁসির দাবির পাশাপাশি অনুপমের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারা জড়িত, তাদের সকলকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিও এ দিন জানানো হয়।
আগরপাড়া মহাজাতি মোড়েও চলে সই সংগ্রহ। ৮ নম্বর তো বটেই, আশপাশের ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও অনুপম-হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির শাস্তির দাবিপত্রে সই করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষের স্বাক্ষর করা চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষের কাছে পাঠানো হবে। অন্য দিকে, ব্যারাকপুর আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুপম-হত্যায় ধৃত অমিত পণ্ডিত ও সঞ্জীব পণ্ডিতের হয়ে মামলা লড়তে চাইছেন না আইনজীবীরা। তাঁরাও চাইছেন অনুপম খুনে জড়িত সকলের কঠোর শাস্তি হোক।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত
ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্রীহরি পাণ্ডের নেতৃত্বে তদন্তকারীদের দল এ দিন আগরপাড়ার নর্থ স্টেশন রোডে যায়। যে-পশুপাখির ওষুধের দোকানের সামনে অনুপমকে গুলি করা হয়েছিল, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সেই দোকানের মালিককে। তদন্তকারীরা কথা বলেন স্থানীয় কিছু লোকজনের সঙ্গেও।
গত ১৩ মার্চ মিঠুন নামে এক পরিচিত যুবকের স্কুটিতে চেপে অনুপম গিয়েছিলেন পশুপাখির ওষুধের ওই দোকানে। এ দিন মিঠুনকে প্রশ্ন করে তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করেন, ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল। ওই দোকানের মালিক সৌম্য দে বলেন, ‘‘আমি
দোকানে খুব একটা থাকি না। ঘটনার দিনেও ছিলাম না। এক তরুণী কর্মী ছিলেন। আমি সেই সময় কোথায় ছিলাম, সব জানিয়েছি পুলিশকে।’’ খুনের পরে যে-গলিপথ ব্যবহার করে অমিত খোয়াড় রোডের হোগলার জঙ্গলে গা-ঢাকা দিয়েছিল, সেই সব জায়গাও ঘুরে দেখেন গোয়েন্দারা। এ দিন তাঁরা অনুপমের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্তের সঙ্গে কথা বলেন। ঘটনার দিন কেউ অনুপমকে ফোন করে ডেকে পাঠিয়েছিল কি না, সেটিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
যে-মাতঙ্গিনী হাজরা পল্লি খেলার মাঠ নিয়ে সঞ্জীবের সঙ্গে অনুপমের গণ্ডগোলের সূত্রপাত বলে তদন্তে উঠে এসেছে, তদন্তকারীরা সেই খেলার মাঠের সামনে গিয়ে এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। শনিবার সঞ্জীব পণ্ডিতকে তার পানিহাটির বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে ব্যাঙ্কের কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করেছিলেন তাঁরা। পুলিশি সূত্রের খবর, সঞ্জীব পণ্ডিত সুপারি কিলার অমিতকে ক’দফায় কত টাকা দিয়েছিল, ওই নথি থেকে সেটা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। ডিসি শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, ‘‘ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল, তা জানতে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকার আরও কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy