Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Child Marriage

বাল্য বিবাহ নিয়ে ডিজিকে পত্রাঘাত জাতীয় কমিশনের

কয়েক দিন আগে পশ্চিমবঙ্গে এসে কলকাতা, মালদহে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেছিলেন ওই কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো।

child marriage.

পশ্চিমবঙ্গে বাল্য বিবাহের সমালোচনায় সরব জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৫০
Share: Save:

বাংলায় শিশু-নিগ্রহের পাশাপাশি বাল্য বিবাহের সমালোচনায় সরব হয়েছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। কয়েক দিন আগে পশ্চিমবঙ্গে এসে কলকাতা, মালদহে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেছিলেন ওই কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। তার কয়েক দিনের মধ্যেই এ রাজ্যে বাল্য বিবাহ রোধে ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে টুইট ও চিঠিতে মুখর হয়েছেন তিনি। সাম্প্রতিক কালে বঙ্গে ১৬৩০টি বাল্য বিবাহের ঘটনা জেনেও পুলিশ ‘নিষ্ক্রিয়’ ছিল বলে অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার টুইট করেন প্রিয়ঙ্ক। সেই সঙ্গে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কেও রীতিমতো পত্রাঘাত করেছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের কন্যাশ্রী প্রকল্পটিকে আজকের পশ্চিমবঙ্গের একটি বিশেষ পরিচয় হিসেবে তুলে ধরে রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সমীক্ষায় বাংলায় বাল্য বিবাহের প্রকোপ ধারাবাহিক ভাবেই উদ্বেগজনক বলে দেখানো হয়েছে। যদিও ইউনিসেফের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাও সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে বাল্য বিবাহ রোধে সরকারি কর্মসূচির প্রশংসা করেছে।

এই অবস্থায় অন্যান্য রাজ্যকে ছেড়ে প্রিয়ঙ্ক কেন পশ্চিমবঙ্গকে বার বার নিশানা করছেন, সেই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। কারও কারও ধারণা, জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনকেও অ-বিজেপি রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কেন্দ্র। প্রিয়ঙ্ক বলেন, “এখনও পর্যন্ত বাল্য বিবাহ নিয়ে সব রাজ্যের সাম্প্রতিক নথি খুঁটিয়ে দেখা না-হলেও পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা উদ্বেগজনক। বাল্য বিবাহের যে-সব ঘটনায় রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের পদক্ষেপের খতিয়ান নেই, তার সঙ্গে নাবালিকা পাচারেরও যোগ থাকতে পারে। রাজ্য পুলিশ, প্রশাসনের আরও তৎপর হওয়া উচিত ছিল।”

পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় উদ্বেগজনক ভাবে বাল্য বিবাহ বৃদ্ধির পিছনে বাংলার কর্তাব্যক্তিদের যুক্তি, এ রাজ্যে আসলে সব ক’টি ঘটনাই নথিবদ্ধ হয়। যদিও কয়েকটি প্রতিবেশী রাজ্যে সেই নথি লেখায় ফাঁক আছে বলে তাঁদের অভিযোগ। তবে এ-যাত্রায় জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান রাজ্যেরই দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রশ্ন তুলেছেন, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২-এর মার্চের মধ্যে ১০৬২টি এবং ২০২২-এর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৫৭৮টি বাল্য বিবাহের ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপের কোনও নথি নেই। ডিজি মনোজ মালবীয়কে চিঠি দিয়ে প্রিয়ঙ্কের প্রশ্ন, ২০০৬-এর বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইন এবং ২০১২-র পকসো আইন অনুযায়ী উল্লিখিত দেড় বছরে ১৬৩০টি বাল্য বিবাহের ঘটনায় রাজ্য পুলিশ কী পদক্ষেপ করেছে?

ওই দেড় বছরে ৬৭৩৩টি বাল্য বিবাহের চেষ্টার অভিযোগ পেয়ে তাঁরা ৫০৯৩টি চেষ্টা রুখতে পেরেছেন বলে রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ দিল্লিতে প্রিয়ঙ্ককে জানিয়েছেন। তবে বাল্য বিবাহ সংক্রান্ত কোনও এফআইআরের নথি তিনি পাননি বলে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে জানিয়েছেন প্রিয়ঙ্ক।

এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে ফোন বা এসএমএস করেও সাড়া মেলেনি। সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব বলেন, “দিল্লি থেকে সব রাজ্যের কাছেই নথি চাওয়া হয়েছিল। আমরাও দিল্লি গিয়ে নথি দিয়েছি। বাল্য বিবাহ রুখতে পশ্চিমবঙ্গ সর্বতোভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে এবং প্রচার করছে। বাল্য বিবাহের অভিযোগ পেলেও পদক্ষেপ করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো তা আটকানো যায় না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Child Marriage NCPCR West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy