আফিম চাষ করতে গিয়ে পুলিসের জালে দুই, ছবি: নিজেস্ব চিত্র
নোটবন্দিতে জমানো নগদ হারিয়ে তহবিল গড়তে ফের গাঁজা এবং আফিম চাষ শুরু করেছে মাওবাদীরা। বুধবার রাতে রানিগঞ্জ থেকে প্রায় ১০ কেজি আফিম উদ্ধারের পর এমনটাই ধারণা কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো বা এনসিবি)-র গোয়েন্দাদের।
বৃহস্পতিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এনসিবি-র গোয়েন্দারা পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে ওত পেতে ছিলেন ঝাড়খণ্ড থেকে আসা একটি এসইউভি-র জন্য। সেই গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করতে গিয়ে হদিশ মেলে ৯কিলো ৭৮০ গ্রাম আফিমের। এনসিবি-র কলকাতা জোনের সহকারি অধিকর্তা সুধাংশু কুমার বলেন,‘‘গাড়ির মধ্যে বিশেষ ভাবে বানানো একটি ফাঁকে লুকিয়ে রাখা ছিল ওই আফিম।” তিনি আরও বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে ওই আফিমের দাম প্রায় ৫০ লাখ টাকা।’’
আফিমের সঙ্গে ওই গাড়ির দুই আরোহী অরুণ কুমার এবং বীরবল কুমারকে গ্রেফতার করেন এনসিবি-র গোয়েন্দারা। ধৃতদের জেরা করেই জানা যায়, রানিগঞ্জের বাসিন্দা অশোক সিংহ বলে এক ব্যক্তিকে ওই আফিম পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। সেই সূত্র ধরেই রানিগঞ্জ থেকে অশোক এবং তার ছেলে বিক্রমকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা।
ধৃত অশোক এবং তার ছেলে বিক্রম , অরুণ কুমার, বীরবল কুমার, ছবি: নিজেস্ব চিত্র
এনসিবি-র আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ধৃত অরুণ এবং বীরবল জেরার মুখে জানিয়েছে যে, তারা ওই আফিম হাজারিবাগ থেকে সংগ্রহ করেছিল। এনসিবি সূত্রে খবর, হাজারিবাগ এবং পাশের ছাতরা ও খুন্তি জেলাতে আফিমের চাষ নিয়ন্ত্রণ করে মাওবাদীরা। তাদের তহবিলের একটা বড় অংশই আসে আফিম চাষের লেভি থেকে। ওড়িশাতে একই ভাবে মালকানগিরি এলাকায় গাঁজা চাষ নিয়ন্ত্রণ করে গেরিলারা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা যাঁরা ওই অঞ্চলে মাওবাদী দমনের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের মতেনোটবন্দির ফলে মাওবাদীরা তাঁদের সাংগঠনিক তহবিলের একটা বড় অংশ হারিয়ে এখন আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। এক গোয়েন্দা আধিকারিক বলেন,‘‘ওই এলাকার বিভিন্ন জেলা কমিটি এবং এরিয়া কমিটির হাতে থাকা লেভির কোটি কোটি টাকা নোটবন্দির পর বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে নতুন নোটে ফেরত পাওয়ার জন্য গচ্ছিত করেছিল গেরিলারা। সেই টাকা বহুক্ষেত্রেই ফেরত পায়নি গেরিলারা।”
সম্প্রতি বিহারের এক বিধায়কের বাড়িতে হামলা করেছিল মাওবাদীরা। বাড়িতে মাওবাদীদের ফেলে রাখা পোস্টারে উল্লেখ ছিল যে, ওই বিধায়ককে মাওবাদীরা পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছিল পুরনো থেকে নতুন নোটে পাল্টে দিতে। সেই টাকা বিধায়ক ফেরত না দেওয়াতেই হামলা বলে উল্লেখ করা হয় মাওবাদী পোস্টারে।। ঝাড়খণ্ড পুলিশেরও একটি অংশ জানিয়েছে, তহবিলের হাল ফেরাতে ফের আফিম চাষ করাচ্ছে গেরিলারা।
আরও পড়ুন: ক্যানসার রোগীদের চুল দান খুদের
আরও পড়ুন: ‘জয় শ্রীরাম’ না-বলায় এ বার মার পুরুলিয়ায়
ধৃত অরুণ এবং বীরবলের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগ নিয়ে সুধাংশু কুমার কোনও মন্তব্য না করলেও, এনসিবি গোয়েন্দাদের একটি অংশ নিশ্চিত হাজারিবাগ থেকে আনা ওই কনসাইনমেন্টের পিছনে মাওবাদীরাই রয়েছে। তবে গোয়েন্দারা এ ব্যাপারে শুধু সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনকেই দায়ী করছেন না। এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘পিএলএফআই-র মতো মাওবাদীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কয়েকটি সংগঠনও একই ভাবে মাদক চাষ করায় এবং বাজারে তা বিক্রি করে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy