পান্ডুয়ার স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বেদী ঢাকা থেকেছে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির ব্যানারে। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের নির্দেশ সত্ত্বেও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হল না হুগলির পান্ডুয়ার একটি স্কুলে। নেতাজির জন্মদিন ঘিরে শাসক ও বিরোধী পক্ষের নানা কর্মসূচিতে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। এই আবহে এ ঘটনা নিয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব হয়েছেন শাসক দলের বিধায়ক থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। যদিও প্রধান শিক্ষকের দাবি, এর আগেও নেতাজির জন্মদিনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি।
শনিবার রাজ্য জুড়েই নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তী পালিত হয়। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়েছে রাজ্য় রাজনীতি। এক দিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, রাজ্য জুড়ে নানা কর্মসূচিও রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অন্য দিকে, শনিবারই নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে কলকাতায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শহরে মমতার মতোই তিনি নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন। নেতাজিকে ঘিরে দু’জনের ‘দেশনায়ক দিবস’ বনাম ‘পরাক্রম দিবস’ টুইট ঘিরেও চর্চা শুরু হয়েছে। তবে এই আবহে পান্ডুয়ার শশিভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়ে দেখা গিয়েছে ভিন্ন চিত্র।
শনিবার শশিভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়ে নেতাজির জন্মদিন পালন করা হলেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। উল্টে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বেদী ঢাকা থেকেছে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির ব্যানারে। এ নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন পান্ডুয়াবাসীর একাংশ। এলাকার বহু মানুষ থেকে পান্ডুয়ার বিধায়ক, পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ— এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি সঞ্জীব ঘোষ বলেন, “রাজ্য সরকারের নির্দেশনামায় বলা হয়েছে যে সমস্ত স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে নেতাজির জন্মদিন পালন করতে হবে। কিন্তু পান্ডুয়া শশীভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং লজ্জাজনক ঘটনা। এ নিয়ে আমরা ম্যানেজিং কমিটি পক্ষ থেকে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।”
পান্ডুয়ার বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, “নেতাজfর জন্মদিনকে দেশনায়ক দিবস হিসাবে ঘোষণার দাবি করা হয়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয়েছে। শশিভূষণ স্কুলে যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। কিন্তু ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, তিনি শিক্ষারত্ন পেয়েছেন। তাই তিনিও এর দায় এড়াতে পারেন না। পরিচালন মণ্ডলীর সভাপতিকে এর জবাবদিহি করতে হবে।”
তবে সমালোচনার মুখে পড়লেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করার প্রসঙ্গে নিজের যুক্তি দিয়েছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মলয় ঘোষ। তাঁর দাবি, “কোভিড পরিস্থিতির কারণে স্কুলে কোনও জমায়েত করা হয়নি। শুধুমাত্র স্টাফ রুমে নেতাজির ছবিতে মালা দিয়ে তাঁর জন্মদিন পালন করা হয়েছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি ঠিকই। তবে নেতাজির জন্মদিনে কোনও বারই জাতীয় পতাকা তোলা হয় না। এই বিদ্যালয়ে শুধুমাত্র স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।”
যদিও প্রধান শিক্ষকের এই যুক্তিকে মানতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিষ সী। তাঁর কথায়, “নেতাজি জাতীয় বীর ছিলেন। তিনি শুধু বাংলার নন, গোটা দেশের গর্ব। আর তাঁর জন্মদিন মর্যাদার সঙ্গে পালন করে না শশিভূষণ বিদ্যালয়। এই স্কুলে পড়ার সময় ২৩ জানুয়ারি এবং ১৫ আগস্টের তফাৎ বুঝতাম না। ওই দু’দিনই জাতীয় পতাকা তোলা হত। জাতীয় সঙ্গীতও গাওয়া হত স্কুলে। এখন দেখছি সবই পাল্টে গিয়েছে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy