শনিবার পাঠানো ভিডিয়ো বার্তায় রত্না বলেছেন, ‘‘গত কয়েক বছরে হিংসা এবং ঘৃণার রাজনীতি দেশের সব অংশে ছড়িয়ে পড়েছে যা আমাদের দেশের ভবিষ্যতের পক্ষে শঙ্কার। নিবার্চনে জয়লাভের মূল্য লক্ষ্য এখন ব্যক্তিগত লাভ। কিন্তু যুব সমাজের একটা অংশ আবার রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন। তেমনই এক উদাহরণ হলেন সায়রা শাহ হালিম।’’
গোলমাল থ্রি-তে রত্না পাঠক ও মিঠুন চক্রবর্তী ছবি সংগৃহীত
সিনেমার পর্দায় যৌবনে চুটিয়ে প্রেম আর বুড়ো বয়সে বিয়ের জুটিটা ভেঙে গেল বাংলার ভোটে এসে। মিঠুন চক্রবর্তী এবং রত্না পাঠক শাহ, এক যুগ আগের জনপ্রিয় হিন্দি ছবির নায়ক-নায়িকা, আসানসোল আর বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে দুই আলাদা দলের প্রার্থীর হয়ে একই দিনে ভিডিয়ো-প্রচারে। ভিডিয়ো-বার্তায় আসানসোল লোকসভায় বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের হয়ে ভোট চাইলেন মিঠুন। অন্য দিকে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিমকে ভোট দিতে বলছেন বলিউড অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহের পত্নী অভিনেত্রী রত্না।
অগ্নিমিত্রা পালের সঙ্গে মিঠুনের ব্যক্তিগত পরিচয় অনেক দিনের। মিঠুনের কথায়, তাঁর সঙ্গে ‘অগ্নি’-র (ওই নামেই ডাকেন অগ্নিমিত্রাকে) সম্পর্ক দাদা-বোনের। শারীরিক ভাবে অসুস্থ মিঠুন ভিডিয়ো বার্তায় অগ্নিমিত্রার হয়ে ভোট চেয়েছেন। এক সময় বাম রাজনীতির ঘনিষ্ঠ ছিলেন মিঠুন। ‘সুভাষদা’র কাছের মানুষ পরে তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভার সাংসদ হন। গত বিধানসভা ভোটের আগে তিনি বিজেপি-র মঞ্চে ওঠেন। বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে লাগাতার মাঠে-ময়দানে প্রচার করেছেন। নিজের অভিনীত সিনেমার সংলাপ শুনিয়ে সভা মাতিয়েছেন। তা থেকে বির্তকও তৈরি হয়েছে। জল গড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত।
অন্য দিকে রত্নার স্বামী অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহর ভাইঝি সায়রা এ বার বালিগঞ্জের সিপিএম প্রার্থী। নাসির ধারাবাহিক ভাবেই বিজেপি বিরোধী। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সবর হয়েছেন। সরব হয়েছেন রত্নাও। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে, বিজেপি-কে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দেশের যে ৬০০ জন বিদ্বজ্জনের স্বাক্ষর সম্বলিত বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে সই করেছিলেন দু’জনেই।
শনিবার পাঠানো ভিডিয়ো বার্তায় রত্না বলেছেন, ‘‘গত কয়েক বছরে হিংসা এবং ঘৃণার রাজনীতি দেশের সব অংশে ছড়িয়ে পড়েছে যা আমাদের দেশের ভবিষ্যতের পক্ষে শঙ্কার। নিবার্চনে জয়লাভের মূল্য লক্ষ্য এখন ব্যক্তিগত লাভ। কিন্তু যুব সমাজের একটা অংশ আবার রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন। তেমনই এক উদাহরণ হলেন সায়রা শাহ হালিম। যিনি প্রথম নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। আমি তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। তিনি পরিশ্রমী, উৎসাহী এবং কর্মোদ্যোগী। তাই তাঁকে ভোট দিন যাতে তিনি বিধানসভায় যেতে পারেন এবং যুবসমাজের জীবনে বদল আনতে পারেন।’’ আরও বলেছেন, ‘‘আমরা অবশ্যই সামনের দিকে তাকাব, সামনে এগিয়ে চলব, পিছনে তাকিয়ে পিছনের দিকে হাঁটা নয়। সায়রা হালিম ভবিষ্যতের আশা। তাঁকে ভোট দিন।’’
আর একই দিনে প্রচারিত ভিডিয়োয় মিঠুন বলেছেন, ‘‘অগ্নি ভাল ঘর থেকে এসেছে। ওঁর কোনও অর্থের প্রয়োজন নেই। ও মানুষের জন্য কাজ করতে চায়। তাই ওকে জেতাতে হবে। ভয় না পেয়ে ভোট দিতে হবে। গ্যারান্টি দিয়ে বলছি ও সুখে, দুঃখে সব সময় পাশে থাকবে।’’
২০১০ সালে রোহিত শেট্টির ‘গোলমাল-থ্রি’ ছবিতে মিঠুনের প্রেমিকার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রত্না। ‘ডিস্কো ডান্সার’ পাপ্পুর (মিঠুন) প্রেমে পাগল ছিল গুড্ডি (রত্না)। তাদের প্রেম পরিণতি পেয়েছিল জীবনের ‘স্লগ ওভারে’ এসে। বলিউডের এই দুই প্রবীণ অভিনয়শিল্পীই এ বার বিপরীত ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল অবশ্য বলছে, যাঁদের হয়ে প্রচারে নেমেছেন মিঠুন এবং রত্না, তাঁদের কেউই তো জিততে পারবে না! আসলে ওঁদের লড়াইটা দু’নম্বর হওয়ার লড়াই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy