মমতা পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের বঞ্চিত করেছেন বলে অভিযোগ মোদীর।—ফাইল চিত্র।
কৃষক আন্দোলন নিয়ে শুক্রবার আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জড়িয়ে পড়ল বিজেপি-তৃণমূল। আরও স্পষ্ট করে বললে বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দেশের কৃষক সমাজের প্রতি বার্তা দিয়ে মমতার ক়়ড়া সমালোচনা করেন মোদী। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের বঞ্চিত করে মমতা পঞ্জাবের কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করছেন!’’ কালক্ষেপ না করে তৃণমূল শিবির থেকে সেই আক্রমণের জবাব দেন দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দাবি সর্বৈব মিথ্যা।”
শুক্রবার অভিযোগের সুরে মোদী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ বছর ধরে সরকার চালাচ্ছেন। রাজনৈতিক কারণেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু করতে দিচ্ছে না। ৭০ লক্ষ কৃষক অনলাইনে কৃষকনিধি সম্মান প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছেন। আমার দুঃখ, যে সারা দেশে এই প্রকল্প চালু হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গে তা চালু করা যাচ্ছে না।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরেই পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন সৌগত। তিনি বলেন, “কিসান নিধি প্রকল্পে রাজ্য সরকারের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু কেন্দ্রকে রাজ্যের কথা শুনতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যকে এড়িয়ে কেন্দ্র নাক গলাতে চাইছে।” সৌগত সরাসরি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কথা সর্বৈব মিথ্যা। রাজ্য সরকার বলেছিল কেন্দ্র কৃষকদের জন্য যে টাকা দেবে, তা রাজ্যের হাতে দিক। এটা খুব সহজ একটা দাবি ছিল। ওরা তা মেনে নিতে পারত। রাজ্য সরকারের অ্যাকাউন্টে টাকা দিলে রাজ্য সরকার তা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌছে দিত।”
আরও পড়ুন: শনিবার কলকাতায় শুভেন্দু, নবাগতদের নিয়ে বৈঠক রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের
উল্টে কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই রাজনীতি করার অভিযোগ এনে তৃণমূল সাংসদ বলেছেন, “মোদীরা টাকা পাঠিয়ে সরাসরি রাজনৈতিক সুবিধা নেবেন, এটা কেন রাজ্য সরকার মেনে নেবে? তাই বাংলার কৃষকরা যদি কিসান সম্মাননিধির টাকা না পায়, তার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী কেন্দ্রীয় সরকার ও মোদী নিজে। কেন্দ্রের জেদের জন্যই টাকা পাচ্ছেন না কৃষকরা।” জাতীয় কৃষি ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে দমদমের সাংসদ বলেন, “মহারাষ্ট্র, কর্নাটকে কৃষকরা ব্যাপক হারে আত্মহত্যা করছেন। মোদী তার সমাধান করেননি। মূল বিষয় থেকে সরে যাচ্ছেন মোদী। মোদী সরকার কৃষকদের সঙ্গে দীর্ঘ কথাবার্তা চালিয়ে আন্দোলন ভেঙে দিতে চাইছেন।” মোদীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের বঞ্চিত করে মমতা পঞ্জাবের কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করছেন।
আরও পড়ুন: সোমেনের জন্মদিনে একই মঞ্চে সব দলকে আমন্ত্রণ রোহন-শিখার
সৌগতর জবাব, “এ রাজ্যে কৃষকদের আয় তিনগুণ করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের ৪৭ লক্ষ কৃষকের জন্য ২,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কেন্দ্রের কিসাননিধির চেয়ে বেশি টাকা পান রাজ্যের কৃষকরা। রাজ্যের কৃষকরা ভাল আছেন। বাংলায় ১০ বছরে কোনও কৃষক আন্দোলন হয়নি।” তিনি আরও বলেছেন, “আলু-পেঁয়াজকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বাইরে রাখা হোক। নতুন কৃষি আইন কৃষিপণ্যের ব্যবসা তুলে দেবে। কৃষক-বিরোধী আইন গায়ের জোরে রাজ্যসভায় পাস করানো হয়েছে। এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ১১টি রাজনৈতিক দল মোদীকে চিঠিও লিখেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy