তৃণমূল কংগ্রেসের নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে নারদ স্টিং অপারেশনে কেডি সিংহ পুরো টাকা জুগিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তখন তো তিনি তৃণমূলের সাংসদ। তা হলে নিজের দলের নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে ওই অপারেশনে টাকা জোগালেন কেন?
কিছুতেই ধন্দ কাটছে না সিবিআইয়ের। নারদ তদন্তে চার্জশিট পেশের তোড়জোড় শুরু করেছে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তারই মধ্যে এই প্রশ্নের উত্তর পেতে কেডি-কে আরও এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রস্তুতি চালাচ্ছে তারা। ওই অপারেশনের হোতা ম্যাথু স্যামুয়েল এবং নারদ-কাণ্ডে যুক্ত আরও কয়েক জনকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অন্য কয়েক জনকেও নোটিস দেওয়া হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
কেডি কেন নারদ স্টিং অপারেশনে টাকা ঢেলেছিলেন, সেটা স্পষ্ট হওয়া দরকার বলে মনে করছে সিবিআই। কেডি-কে আগেই এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। কিন্তু কেডি ও ম্যাথুর বয়ান দেখে নারদ-কাণ্ডের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল, তা এখনও অস্পষ্ট বলে মনে করছেন সিবিআই-কর্তারা। তাই প্রথম দফার চার্জশিট চূড়ান্ত করার আগে আরও এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।
নারদ মামলায় প্রথম চার্জশিট পেশ করতে চেয়ে লোকসভার অধ্যক্ষের অনুমতি (চার তৃণমূল নেতার ক্ষেত্রে) চেয়েছে সিবিআই। লোকসভার সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষা সুমিত্রা মহাজন সিবিআইয়ের চিঠিটি দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল (এজি)-এর কাছে পাঠিয়ে মতামত চেয়েছিলেন। লোকসভা ভোট চলে আসায় এজি-র মতামত লোকসভায় পৌঁছয়নি। ভোট শেষ। এ বার সেটা দ্রুত আসবে বলে আশা করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
লোকসভার নতুন অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছ থেকে অনুমোদন এলেই তিন সাংসদ সৌগত রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হতে পারে বলে জানাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রের খবর, চার্জশিট পেশ করা মানেই চার জন অভিযুক্ত হবেন, এমন নয়। তদন্তে যা উঠে এসেছে, তা আদালতে জানানো হবে। ২০১৪ সালে নারদ স্টিং অপারেশনের সময় যাঁরা সাংসদ ছিলেন, তাঁদের সম্পর্কে আদালতে নথিপত্র পেশ করতে হলে লোকসভার অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। সেই প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান সিবিআই তদন্তকারীরা।
পরের ধাপে আরও আট জন বিধায়ক ও সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করার জন্য বিধানসভার অধ্যক্ষ এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। লোকসভার অধ্যক্ষের অনুমতি এসে গেলে বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি চাওয়া হবে।
তদন্তকারীদের দাবি, নারদ-কাণ্ডে অনেকের বিরুদ্ধেই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সিবিআই সংশ্লিষ্ট স্থানে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেছে। ফুটেজে দেখা ব্যক্তিদের ছবি ও কণ্ঠস্বর মিলে গিয়েছে বলে জানাচ্ছে ফরেন্সিক রিপোর্ট। নারদ-কাণ্ডে জড়িত এক অফিসার নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা শাসক দলের নেতাদের পৌঁছে দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন সিবিআইয়ের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy