গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
নারদ মামলায় শুনানি সোমবারের মতো শেষ,পরবর্তী শুনানি বুধবার, জানাল বেঞ্চ।
নেতা-মন্ত্রীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেবল রাজ্যপালের অনুমতি নিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্পিকারের অনুমতি নেওয়া হয়নি। বেঞ্চকে জানালেন সিঙ্ঘভি। বললেন, ‘‘আমার মতে এটা আসলে গণতন্ত্রের গ্রেফতার। কারণ গণতন্ত্রে অনুমোদিত প্রক্রিয়ায় এই গ্রেফতারি হয়নি। পাল্টা তুষার মেহতার প্রশ্ন, ‘‘এই বক্তব্য কি আদৌ মূল ইস্যুর সঙ্গে জড়িত? আমরা মনে হয় মূল বিষয় থেকে সরে যাচ্ছি। আমি আর এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’ জবাবে সিঙ্ঘভি বললেন, ‘‘আমি মূল বিষয়েই রয়েছি।’’
‘‘বলা হচ্ছে পরিস্থিতির জন্য অভিযুক্তদের ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিম্ন আদালিতে শুনানি করতে হয়েছে। সেখানে ওই আদালতের বিচারপতি কী কোনও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বা বিরোধীরা করেছেন? যদি না করে থাকেন তাহলে কেন অভিযুক্তদের সশরীরে না আনাকেই যুক্তি হিসেবে দাঁড় করানো হচ্ছে’’ জানতে চাইলেন সিঙ্ঘভি
সিবিআইয়ের আইনজীবীর কথায়, ‘‘যেভাবে নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারি নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে, তাতে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা উচিত বলে মনে হয়েছে । বিক্ষোভ দেখিয়ে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া হয়েছে। এটি কি বিবেচ্য হতে পারে না?’’
বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমি একটা অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ দিতে চাই, একটা বিষয় সাত বছর ধরে তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হল না কেন? আর এখন হঠাৎ চার্জশিট জমা দেওয়ার পরই বা গ্রেফতার করার প্রয়োজন পড়ল কেন?’’
বিচারের সঙ্গে যখন ব্যক্তিগত স্বাধীনতা জড়িয়ে রয়েছে তখন বিচার প্রক্রিয়াকে সতর্ক হতে হয়। তাঁর যুক্তি,
প্রথমত, ৪০৭ ধারা ব্যবহার করে আগেই জামিন পাওয়া ৪ নেতা-মন্ত্রীর জামিনের নির্দেশে কি স্থগিতাদেশ দিতে পারে?
দ্বিতীয়ত, জামিনে স্থগিতাদেশ দেওয়ার আগে অভিযুক্তদের বক্তব্য না শোনাকে কি সুবিচার বলা হবে?
তৃতীয়ত, জামিনের যে আদেশ দেওয়া হয়েছিল তার প্রাথমিকতার বিচার করলে একটা বিষয় স্পষ্ট, তা হল এই জামিনের নির্দেশ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আসেনি। যার ফলে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার হতে হয়েছে অভিযুক্তদের।
চতুর্থত, সিবিআই যা যা ইস্যু আদালতকে জানিয়েছে, তার ৯৫ শতাংশ ভিত্তিহীন। সিবিআইয়ের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে, যদি আজ আমাদের সিবিআইয়ের অধীনে থাকতে হত তবে মার্শাল আইন জারি হত পশ্চিমবঙ্গের এই রাজধানী কলকাতায়।
বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় জানতে চাইলেন, তদন্তের সময় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল কি না? জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বললেন, তাঁদের কখনওই গ্রেফতার করা হয়নি।
মামলা অন্য রাজ্যে সরানোর বিষয়ে যে ফৌজদারী মামলা করা হয়েছিল তার স্ট্যাটাস কী? জানতে চাইল বেঞ্চ। জবাবে মেহতা জানালেন, এ সংক্রান্ত চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল জানালেন, ‘‘সিবিআই কেবল জামিন বাতিল করতে চাইছে না। নিজাম প্যালেসে ঘটনার দিন বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতেও তৈরি হতে পারে ভেবে মামলাটি অন্যত্র সরানোর আর্জিও জানিয়েছে তারা।’’
বৃহত্তর বেঞ্চের এক বিচারপতির মতে সিবিআইয়ের আবেদন একটু ভাসা ভাসা ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘জামিনের আর্জি খারিজ করার কোনও আবেদন করা হয়নি। তাই এই বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন ছিল যে, হাই কোর্ট নোটিস ছাড়া জামিনের আবেদনে স্থগিতাদেশ দিতে পারবে কি না।’’
সিবিআইয়ের কাছে বেঞ্চ জানতে চাইল, আপনাদের আর্জি কি ছিল? প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর।
‘‘সিবিআই অফিসে মুখ্যমন্ত্রী। বাইরে জনতা ইট ছুড়ছেন। এই মামলায় অভিযুক্তদের সশরীরে আনার প্রয়োজন ছিল আদালতে কিন্তু আনা যায়নি। পরিস্থিতি বুঝে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই শুনানি করতে হয়েছিল।’’ আদালতকে ১৭ মে নিজাম প্যালেস চত্বরের ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন মেহতা
‘‘আমরা কী আবার বিস্তারিত বলব? না কি শুধুমাত্র মূল বিষয়গুলি জানাব?’’ জানতে চাইলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহতা
৫ মিনিটের বিরতি নিয়ে ফের শুরু জামিন মামলার শুনানি। সিবিআইয়ের আর্জি খারিজ করে বৃহত্তর বেঞ্চ বলল, ইস্যুর ভিত্তিতে আবার সবটা শুনতে চাই।
আদালতকে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা জানালেন, ‘‘নেতা-মন্ত্রীদের যে আইন মোতাবেক গ্রেফতার করা হয়নি, তা তদন্তকারী সংস্থাটি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাচ্ছে।’’ জবাবে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল মেহতা পাল্টা জানতে চাইলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আমাকে গ্রেফতার করুন এটাও কি আইন অনুযায়ী হয়েছিল? আমার মনে হয় এই সব প্রসঙ্গ তুলে রাস্তাঘাটের ঝগড়ার স্তরে নিজেদের না নামানোই উচিত।’’
শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী দিনগুলিতে আদালত হয়তো এই বিষয়ে শুনানি করতে পারবে না। তাই সেটাও মাথায় রাখতে হবে। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বলল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ।
বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এর আদেশকে তো বেঞ্চের আদেশ বলা যাবে না। ফলে তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করাও যাবে না। সিবিআইকে জানাল বৃহত্তর বেঞ্চ
বিচারপতি ইন্দ্র জানালেন, তাঁদের হাতে ৪টি বিকল্প রয়েছে। তাঁরা সেটা বলতে পারেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সিবিআই কি সেই বিকল্পগুলি শুনতে রাজি আছে? নাকি তারা অন্য কিছু করতে চায়?’’
ডিভিশন বেঞ্চ গৃহবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছিল। তার বিরোধিতা করেছিল সিবিআই। সে জন্যই কি ফের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে তারা? জানতে চাইলেন বিচারপতি হরিশ টন্ডন।
কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল বললেন, সুপ্রিম কোর্ট কী করবে তা এখন অনুমান করতে পারছি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy