চার ওজনদার নেতা-মন্ত্রীর ভাগ্য নির্ধারণ আজ?
৪ নেতা-মন্ত্রীর জামিন হল না বৃহস্পতিবারও। বেঞ্চ জানাল, এই মামলায় শুক্রবার দুপুর ১২টায় ফের শুনানি হবে। তবে প্রথমে শোনা হবে রিকল অ্যাপ্লিকেশনটি।
শুক্রবার কখন শুনানি? তা লিখিত ভাবে আইনজীবীদের জানাতে বললেন বিচারপতি সৌমেন সেন।
শুক্রবার দুপুর ২টোয় মামলা শুনানির আর্জি জানান অভিষেক। কল্যাণ বললেন, ‘‘১১টায় করা হোক, অভিষকের অসুবিধা হলে আমি সওয়াল করব।’’ অভিষেকের অনুরোধ, তবে ১২টায় হোক শুনানি।
বেঞ্চকে কল্যাণের প্রশ্ন, ‘‘শুভেন্দু আর মুকুলকে ডাকা হচ্ছে না কেন? ওঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে?’’ জবাবে মেহতা বললেন, ‘‘আমি শুধুমাত্র আইনি প্রশ্নের জবাব দেব।’’
সিঙ্ঘভিকে বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘কেবল জামিন মঞ্জুর করাটাই একমাত্র প্রশ্ন নয়। জামিন মঞ্জুর হলে তো পুরো মামলারই নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। কিন্তু এখানে একটি উদ্বেগের প্রশ্ন রাখা হয়েছে। বিষয়টা কিন্তু অত সহজ নয়।’’
অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বললেন, ‘‘জনসাধারণের ভয় দেখিয়ে জামিনের বিরোধিতা করা কোনও যুক্তি হতে পারে না। সাধারণ বিচারে অভিযুক্তরা জামিন পাওয়ার যোগ্য।’’ অভিষেকের সংযোজন, ‘‘মেহতার প্রশ্ন শুনে মনে হচ্ছে তিনি আসলে জামিন নিয়ে কথা বলছেন না। অন্য বিষয়ে কথা বলছেন। আসলে মেহতা জামিনকে আটকানোর চেষ্টা করছেন।’’ সিঙ্ঘভির কথায়, ‘‘অভিযুক্তরা কিন্তু ১৭ মে মৌখিক আবেদনের ভিত্তিতে জামিন পেয়েছিল। আর তার দুদিন পরই আইনশৃঙ্খলা খারাপ হওয়ার কারণ দেখিয়ে দেখিয়ে হলফনামা করা হল।’’
কল্যাণের যুক্তি, ‘‘শুনানি ৪-৫ দিন ধরে চলবে। আমার মক্কেলরা হেফাজতে থাকবে? আমাদের আবেদনগুলো এক পাশে রাখা যায় না। মেহতার সমস্ত বিষয় নিয়ে আমাদের উত্তর দেওয়ার অধিকার রয়েছে। তাই আমাদের আবেদন পুনরায় শোনা হোক।’’
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমাদের দাবিগুলো আগে শুনতে হবে। সলিসিটর জেনারেল তো কয়েক ঘণ্টা ধরে বলেই যাবেন। এদিকে আমাদের কথা শোনা হচ্ছে না। আমাদের মক্কেলরা হেফাজতে রয়েছেন। সাধারণ বিচার পদ্ধতি লঙ্ঘন করে তাঁদের হেফাজতে রাখা হয়েছে।’’
এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানালেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। এডভোকেট জেনারেল বললেন, মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আদেশ পেয়েছেন।
ওটা ছিল মব তন্ত্র। গণতন্ত্র ছিল না। যদি বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েই থাকে, তবে আদালতে আসেনি কেন? প্রশ্ন করলেন মেহতা
সিবিআইয়ের আইনজীবীকে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, জামিন স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে ৪টি আবেদন করা হয়েছিল। অন্য দিকে আপনারা চাইছেন মামলাটি অন্য রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যেতে। আবার জন মানসে বিচার ব্যবস্থার প্রভাবের কথাও বলছেন। তবে কি জামিন মঞ্জুর করলে, সেটাই বেশি প্রাসঙ্গিক হবে?
বিচারপতি টন্ডন বললেন, ‘‘আমি মনে করি না, সাধারণ মানুষের আবেগ আইনের শাসনকে অবজ্ঞা করে। ন্যায় বিচার ব্যবস্থাকে এড়াতে পারে।’’
‘‘নিম্ন আদালতে মামলার উপর প্রভাব খাটানো হয়েছে বলে কোনও রেকর্ড নেই। তবে আদালতের নিয়ম অনুসারে আমরা অন্য বিষয়গুলি খতিয়ে দেখব’’, বললেন বিচারপতি মুখোপাধ্যায়। জবাবে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল মেহতা বললেন,
‘‘আমি নিম্ন আদালতের বিচারপতির বিরুদ্ধে না। বিচারপতি পক্ষপাতিত্ব করেছেন, এমন অভিযোগও তুলছি না। আমার প্রশ্ন, এই মামলায় সাধারণ মানুষের কী উপলব্ধি কি হবে? আমার কাছে এটাই গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণ মানুষের অজুহাত দেওয়া উচিত নয়। সাধারণ মানুষের মৌলিক নীতির গুরুত্ব অবশ্যই দেওয়া উচিত, তবে এই মামলার ক্ষেত্রে তা বিচার্য নয়। বললেন মেহতা
তাঁর যুক্তি, আইনের শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মেহতা বললেন, ‘‘জামিন মঞ্জুর করেছেন যে মহান বিচারপতিরা, তাঁদের কাছে আমর যুক্তি বিবেচিত হবে না।’’
এই মামলার ঘটনাগুলো অদ্ভুত। এ রাজ্যে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তদন্তকে অন্যত্র সরানো হোক। বিচারপতিদের বললেন মেহতা।
বিরতি চলাকালীন অন্য আইনজীবীরা ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে জানতে চাইলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে।
তুষার মেহতার আর্জি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে চাইলেন কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল। ১ মিনিটের বিরতি নিলেন আলোচনার জন্য।
এই মামলায় রাজ্যকে একটা পক্ষ বানানোর জন্য বেঞ্চের কাছে মৌখিক আর্জি জানালেন তুষার মেহতা। বললেন, অভিযুক্তরা নিজেদের কথা বলবেন। রাজ্যকেও তার বক্তব্য রাখতে হবে।
নারদ মামলায় ৪ নেতা-মন্ত্রীর জামিন মামলার শুনানি শুরু কলকাতা হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy