নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আর অভিযুক্ত নন জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। এই মামলায় অভিযুক্তের তালিকা থেকে তাঁর নাম সরানোর বিষয়ে মান্যতা দিয়েছে আদালত। কল্যাণময় ‘রাজসাক্ষী’ হওয়ার পরে তাঁকে অভিযুক্তের তালিকা থেকে অপসারণ করার জন্য আদালতে আর্জি জানিয়েছিল ইডি। সেই আবেদনই গ্রাহ্য হল।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থের সঙ্গেই অভিযুক্ত ছিলেন তাঁর জামাই কল্যাণময়ও। সম্প্রতি এই মামলায় ‘রাজসাক্ষী’ হতে চেয়ে ইডির বিশেষ আদালতে আবেদন করেন তিনি। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছিল, চার্জশিটে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা যাবতীয় অভিযোগ থেকে তাঁকে মুক্ত করার আর্জি জানান কল্যাণময়। পরে গোপন জবানবন্দি দেন তিনি। কল্যাণময়ের পাশাপাশি একই আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার (আইও)। আদালতে তাঁর আর্জি, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তের তালিকা থেকে সরানো হোক ‘রাজসাক্ষী’ কল্যাণময়ের নাম। সেই আর্জিই মঞ্জুর করেছে আদালত।
ইডির চার্জশিটে কল্যাণময় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন। কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে ইডির অভিযোগ ছিল যে, পার্থের টাকা নয়ছয়ের কারবারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। ওই কারবারের ‘অন্যতম সুবিধাভোগী’-ও ছিলেন। আরও অভিযোগ, অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে যে টাকা আসত পার্থের কাছে, তা সামাল দিতেন কল্যাণময়। ওই টাকায় ‘ভুয়ো সংস্থা’ তৈরি করে তা পরিচালনও তিনি করতেন বলে অভিযোগ। ইডি দাবি করেছিল যে, পার্থ যে সব সংস্থা তৈরি করেছিলেন, তার ডিরেক্টর পদে ছিলেন কল্যাণময়। রাজীব দে নামে এক ব্যক্তির নামে ‘এইচআরআই ওয়েলথ ক্রিয়েশন রিয়েলটরস পাবলিক লিমিটেড’ সংস্থা তৈরি করেছিলেন পার্থ। ২০১৯ সালের জুন মাসে সেই সংস্থার ডিরেক্টর হয়েছিলেন পার্থের জামাই। ইডি এ-ও দাবি করেছে যে, পার্থের কালো টাকা সাদা করার পন্থা জানতেন কল্যাণময়। পার্থের স্ত্রীর নামে ‘বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ তৈরি করা হয়েছিল। ইডি জানিয়েছে, কল্যাণময় ওই ট্রাস্টের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন। তদন্তকারীদের কাছে তিনি দাবি করেছিলেন, এক বার ওই ট্রাস্টের জন্য ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯১০ টাকা ‘ডোনেশন’ উঠেছিল। একাধিক ব্যক্তি চেকের মাধ্যমে সেই টাকা দিয়েছিলেন। অভিযোগ, তার আগে পার্থের কাছ থেকে নগদে টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই টাকাই ‘ডোনেশন’ দিয়েছেন। তা দিয়ে ১৫ কাঠা জমি কেনা হয়েছিল ২০১৯ সালে। এ বার অভিযুক্তের তালিকা থেকে বাদ গেল সেই কল্যাণময়ের নাম।