Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Liquor

দোকানে মদ, ঠেক ভাঙলেন মহিলারা

স্থানীয়দের অভিযোগ, মুদির দোকানে দিনের পর দিন ধরে চলছে এই বেআইনি মদ বিক্রি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৬:১০
Share: Save:

মুদির দোকানে বেআইনি ভাবে মদ বিক্রির অভিযোগ তুলে দোকানির উপরে চড়াও হলেন গ্রামের মহিলারা। তাঁরা দোকানঘরের ভিতরে ঢুকে মদ খুঁজে বের করে নষ্ট করে দেন। অভিযোগ, সেই সময়ে ওই মুদির দোকানের মালিক তথা অভিযুক্ত মদ বিক্রেতাকে মহিলাদের দিকে ধারালো হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যান। বৃহস্পতিবার রাতে কৃষ্ণগঞ্জের মুকুন্দপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মুদির দোকানে দিনের পর দিন ধরে চলছে এই বেআইনি মদ বিক্রি। ঘরের ভিতরে থরে থরে সাজানো আছে চাল, ডাল, আটা আলু থেকে নানান খাদ্য সামগ্রী। দোকানের সামনে ঝুলছে প্যাকেটজাত নানান খাদ্য সামগ্রী। দোকান ফাঁকা থাকা অবস্থায় একটু চোখ টিপে চাইতে হবে ‘তেল’। চাইলেই কাজ হয়ে যাবে। সাদা সরষে বা সয়াবিন তেল নয়, খরিদ্দারের হাতে চলে আসবে বাংলা মদ। সাদা তেল চাইলে বাংলা আর সরষের তেল চাইলে বিলিতি। তবে এখন আর এর বিশেষ প্রয়োজন হয় না। কারণে খরিদ্দার সকলেই গ্রামের। সকলেই পরিচিত, নিত্যদিনের খরিদ্দার। নীরবে মদ আর টাকা হাত বদল হয়।

অভিযোগ, হাত বাড়ালেই গ্রামের দোকান থেকে মদ পেয়ে যাওয়ায় অনেকেই আরও বেশি করে আসক্ত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে অল্পবয়সি ছেলেরা। এই মহামারির আবহে যার যে টুকু আয় হচ্ছে তার অনেকটাই খরচা করে আসছে মদের দোকানে। পরিবারে অশান্তি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে, গ্রামের মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে অসন্তোষ। জানা গিয়েছে, এর আগেও তাঁরা একাধিক বার বিচ্ছিন্ন ভাবে সেই দোকানে গিয়ে মদ বেচতে বারণ করে এসেছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে তাই তাঁরা নিজেরাই সক্রিয় হয়ে দোকান ঘরের ভিতরে ঢুকে মদের বোতল উদ্ধার করে নষ্ট করে দিলেন।

এ দিন গ্রামের প্রায় শখানেক মহিলা সেখানে উপস্থিতি ছিলেন। তাঁরা মদের বোতল ভাঙতে গেলে দোকানের মালিক গদাধর মণ্ডল মারমুখী হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। মদের দোকানে হানা দেওয়া মহিলাদের মধ্যে শম্পা মণ্ডল বলেন, “দিনের পর দিন ওই মুদির দোকান থেকে মদ বিক্রি করছে। কিছু বলতে গেলে পাল্টা হুমকি দেয়। ছেলেরা মদের পিছনে সমস্ত টাকা খরচ করে ফেলছে। এই সময় এমনিতেই আয় নেই অনেক পরিবারে। তার উপর এমনটা চলতে থাকায় অনেক পরিবার সর্বনাশের কিনারে পৌঁছে যাচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “সহ্য করতে না পেরে গ্রামের মহিলারা গিয়ে সব ভেঙে দিয়েছি। সেই সময় গদাধর আমাদের দিকে হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে আসে।”

ঘটনার পরে মুদির দোকানের মালিক অভিযুক্ত গদাধর মণ্ডল অবশ্য বলছেন, “আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি আর কোনও দিন মদ বিক্রি করব না।” তিনি বলেন, “ওরা আমার স্ত্রীকে ধরে টানাটানি করছিল বলে মাথা ঠিক রাখতে না পেরে হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে গিয়েছিলাম। এমন ভুল আর হবে না।”

ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কৃ্ষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ। কিন্তু তারা গদাধরকে পায়নি বলে দাবি। কোনও পক্ষই পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তবে প্রশ্ন উঠছে কী ভাবে দিনের পর দিন মুদির দোকান থেকে মদ বিক্রি হচ্ছে? জেলার আবগারি দফতরের সুপার অর্ণব কুমার দে বলছেন, “আমরা জেলা জুড়ে এরকম বেআইনি ভাবে মদ বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। অনেকে গ্রেফতার হচ্ছে। মদও আটক হচ্ছে প্রচুর। মুকুন্দপুরে ঠিক কী ঘটেছে, তা খোঁজ নিয়ে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Liquor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy