সত্যজিৎ বিশ্বাস। — ফাইল চিত্র।
কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে ‘সিট’ সদস্য জেরার মুখে স্বীকার করলেন, খুনের দিন অনেক বার লোডশেডিং হয়েছিল ফুলবাড়ি অঞ্চলে।
শুক্রবার বিধাননগর ময়ূখ ভবনে বিশেষ আদালতের বিচারক মনোজজ্যোতি ভট্টাচার্যের এজলাসে এই মামলার শুনানিতে একমাত্র সাক্ষী ছিলেন সিআইডি-র সাব-ইন্সপেক্টর সুবিমল বিশ্বাস। আদালতে সরকারি কৌঁসুলির প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী জানান, ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তভার পুলিশের হাত থেকে সিআইডি-কে দেওয়া হয়। তৃণমুল বিধায়কের হত্যার তদন্ত করার জন্য সিআইডি একটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’ গঠন করে। সাক্ষী ওই তার এক জন সদস্য ছিলেন। তখন তিনি নদিয়ায় কর্মরত ছিলেন। আদালতে সাক্ষী আরও জানান, সত্যজিৎ হত্যার তদন্তভার পাওয়ার পর তিনি কালীপদ মণ্ডল ওরফে কালিদাস নামে এক অভিযুক্তকে সিআইডি-র সদর দফতরে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ওই ব্যক্তি পুলিশ হেফাজতে ছিল। আদালতে আবেদন করে তাকে সিআইডি হেফাজতে নিয়েছিলেন সাক্ষী।
এর পাশাপাশি সাক্ষী তদন্তের স্বার্থে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা (ডব্লিউবিএসইডিসিএল) ডিভিশনাল ম্যানেজার, কৃষ্ণনগরের কাছে ‘রিকুইজিশন’ দিয়েছিলেন বা লিখিত ভাবে জানতে চেয়েছিলেন যে সত্যজিৎ খুন হওয়ার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল এবং সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ অব্যাহত ছিল কি না। সন্দেহের তালিকায় থাকা অভিযুক্ত, বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারকেও তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন বলে এ দিন আদালতে জানান সাক্ষী।
জেরার শুরুতেই অভিযুক্তের আইনজীবী সুবীর দেবনাথ বলেন, যে সময়ে ঘটনা ঘটেছিল সেই থেকে এখন পর্যন্ত এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল এবং সত্যজিৎ বিশ্বাস সেই দলের এক জন বিধায়ক ছিলেন। আইনজীবী জানতে চান, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা রাজ্য সরকারের একটি সংস্থা কি না। সাক্ষী তৈা স্বীকার করেন। আইনজীবী জানান, রাজ্যে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত বিষয়গুলি দু’টি পৃথক সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। একটি ডবলুবিএসইডিসিএল এবং অপরটি রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা বা ডবলুবিএসইটিসিএল। সাক্ষী সম্মতি জানান। আইনজীবী তাঁকে প্রশ্ন করেন, “বিদ্যুৎ দফতরে দেওয়া রিকুইজিশন অনুযায়ী আপনারা তদন্ত চলাকালীনই জানতে পেরেছিলেন যে ঘটনার সন্ধ্যায় ওই এলাকায় অনেক বার বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল?” সাক্ষী বলেন “হ্যাঁ, এটা জানতে পেরেছিলাম।”
আইনজীবী সাক্ষীকে উদ্দেশ করে বলেন, “ওই সন্ধ্যায় বার বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কথা জানতে পারা সত্ত্বেও আপনারা এবং পুলিশ সরকারি ওই সংস্থাকে নির্দেশ দিয়ে একটি মিথ্যা সার্টিফিকেট তৈরি করিয়েছেন যাতে বলা হয়েছে সে দিন ঘটনাস্থলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়নি।” সাক্ষী এ কথা অস্বীকার করেন। তাঁকে উদ্দেশ করে আইনজীবী আরও দাবি করেন, “যারা প্রকৃত বলতে পারত সে দিন ওই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল কি ছিল না, সেই ডবলুবিএসইটিসিএল-কে আপনি ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনও রিকুইজিশন দেননি অর্থাৎ তাদের কাছে কিছু জানতে চাননি। সাক্ষী দাবি করেন, বিষয়টি তিনি জানতেন না, তাই তাদের ‘রিকুইজিশন’ দেওয়া হয়নি।
আগামী সোমবার এই মামলায় ফের সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy