পারদের ওঠানামা। — নিজস্ব চিত্র।
শীতের বেলা বরষ পরে সত্যিই এল। যে শীতের জন্য ডিসেম্বর ভর হাপিত্যেশ করেছিল মানুষ, ২০২৩ সালের শুরুই হল জাঁকিয়ে ঠান্ডার সঙ্গে। বাড়ির ছাদে গরিবের দার্জিলিং! সমাজমাধ্যমের চেনা মিম মঙ্গল সকালে কাঁটায় কাঁটায় মিলে গেল নদিয়ার সর্বত্র। রোদহীন আকাশ, ঘন কুশায়া আর তিরের মতো উত্তুরে হাওয়ার ত্র্যহস্পর্শে জবুথবু জেলার শহর থেকে গ্রাম। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এমন আবহাওয়া আরও দিন তিনেক থাকছেই। অবশ্য ঠান্ডা পড়ায় আদৌ অখুশি নন কেউ বরং জাঁকিয়ে পড়া শীত উপভোগের মেজাজেই রয়েছেন সকলে।
প্রায় ডিসেম্বর জুড়েই তাপামাত্রা যথেষ্ট চড়া ছিল। বছরের একদম শেষ দিকে একটু একটু করে কমতে শুরু করেছিল তাপমাত্রা। বছরের শেষ দিন কৃষ্ণনগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯.৮ ডিগ্রি। যদিও সে দিন কনকনে ঠান্ডার অনুভূতি হয়নি। অথচ মঙ্গলবারের বিকেল ৩টে পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রির সামান্য উপরে। তাতেও প্রবল ঠান্ডা অনুভূত হয়েছে। এ দিন কুয়াশাহীন আবহাওয়ায় কনকনে উত্তুরে হাওয়া ছুঁচের মতো বিঁধছে শরীরের খোলা অংশে। দশের নীচে নেমে যাওয়া তাপমাত্রায় মোটরবাইক, স্কুটি দূরে থাক, সাইকেল চালানোই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। স্নানের কথা ভেবেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন! কনকনে ঠান্ডায় হাতমোজা ছাড়া সাইকেলের হ্যান্ডেল ছুঁলেই ঠান্ডার ছোবল।
উপচে পড়া পর্যটকের ভিড় রাতারাতি হালকা হয়েছে নবদ্বীপ মায়াপুরে। দিনের বেলাতেও ভিড় পাতলা পথেঘাটে। সূর্য ডুবতেই শুনশান। যাঁরা বাইরে থাকছেন সুযোগ পেলেই কাঠকুটোয় আগুন জ্বেলে সেঁকে নিচ্ছেন নিজেকে। এই অবস্থায় বয়স্ক মানুষ, শিশু আর ধানগাছের যত্ন নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। আবহাওয়ার চরিত্র ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কৃষি আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাস বলেন, “কুয়াশার কারণে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। রোদের দিন এবং রাতের তাপমাত্রার ফারাক কমেছে। সঙ্গে উত্তুরে হাওয়া ঢুকছে। সব মিলিয়ে শীতের দাপট প্রবল হয়েছে।” আবহবিদেরা বলছেন, রোদের তাত না-থাকায় মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ চড়তে পারেনি। ২০-২২ ডিগ্রির মধ্যে থাকা দিনের তাপমাত্রা এ দিন ১৭-১৮ ডিগ্রিতে আটকে ছিল। যদিও অনুভূত হয়েছে আরও কম। সঙ্গে কনকনে হাওয়া ঠান্ডার কামড় বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন অবস্থা আরও কয়েক দিন চলবে বলেই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।
এ দিন সকাল থেকেই রাস্তাঘাটে লোক কম ছিল। বাস, অটো যাত্রী হারিয়েছে। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির তরফে অসীম দত্ত বলেন, “বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল অন্য দিনের থেকে গড়ে ২০ শতাংশ কমেছে। রুটে চলা বাসের ট্রিপও ছাঁটাই হয়েছে। লোকজন ভীষণই কম ছিল।” তবে খুশি পোশাক ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ ঠান্ডায় বাজারে চাহিদা বাড়ছে হাতমোজা, টুপি, মাফলার, কান পট্টি, উলের ব্লাউজ ইত্যাদির। সে ভাবে ঠান্ডা না-পড়ায় এ বার খুচরো ও পাইকারি পোশাক বিক্রেতাদের ব্যবসা ভাল হয়নি। হাড় কাঁপানো শীতে তাঁদের মুখে চওড়া হাসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy