ফাইল চিত্র
কম দামে আলু বিক্রির জন্য ‘প্রশাসনিক চাপ’-এর প্রতিবাদে আলু বিক্রিই বন্ধ করে দিলেন কৃষ্ণনগর শহরের পাইকারি আলু ব্যবসায়ীরা। ফলে শহর জুড়ে আলুর আকাল। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই সুযোগে আবার না চড়া দামে আলু বিক্রি শুরু হয়ে যায়। তবে আজ, বুধবারও যদি শহরে আলু না ঢোকে তা হলে শূন্য ভাঁড়ারে সামাল দেওয়া মুশকিল হবে।
বেশ কিছু দিন ধরেই রোজকার বাডারে চন্দ্রমুখী ও জ্যোতি আলুর দাম চড়ছে। করোনা কালে আলুর ‘অস্বাভাবিক’ দাম বৃদ্ধি রুখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারগুলিতে অভিযান শুরু হয়। পুলিশের লোকজন বাজারে গিয়ে দাম খতিয়ে দেখতে শুরু করে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলা সূত্রের খবর, এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের দু’টি টিম তৈরি করা হয়েছে। একটি কৃষ্ণনগর মহকুমা, অন্যটি তেহট্ট মহকুমায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এর পাশাপাশি স্থানীয় থানার পুলিশও নজরদারি চালাচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে আলুর চালান দেখতে চাওয়া হচ্ছে। আর এতেই ব্যবসায়ীদের একটা অংশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে চন্দ্রমুখী আলুর পাইকারি দর ছিল ৩২.৮০ প্রতি কেজি, খুচরো দর কেজিতে ৩৫-৩৬ টাকা। জ্যোতি আলুর পাইকারি দর ছিল কেজি প্রতি ২৯.৭৫ টাকা, খুচরো দর কেজিতে ৩৩-৩৪ টাকা। কৃষ্ণনগরের আলুর পাইকারদের অভিযোগ, সাদা পোশাকের পুলিশ এসে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে জ্যোতি আলু বিক্রি করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। তাঁরা জানিয়ে দেন, ওই দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়। শহরের পাইকারি আলু ব্যবসায়ী অনির্বাণ সরকার, বাপি নন্দীরা বলছেন, “আমরা হুগলি থেকে জ্যোতি আলু প্রায় ২৯ টাকা কেজি দরে কিনছি। পরিবহন ও অন্য খরচ মিলিয়ে দাম পড়ছে কেজি প্রতি সাড়ে উনত্রিশ টাকা। সেটা খুচরো বিক্রাতাদের কাছে ২৯ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। খুচরো বিক্রেতারা কী করে ৩০ টাকার মধ্যে আলু বিক্রি করবেন?”
পাত্রবাজারের গোপাল বিশ্বাস শহরের অন্যতম বড় আলুর পাইকার। সেই সঙ্গে তিনি খুচরো আলুও বিক্রি করেন। গোপালবাবু বলেন, “এক বস্তা অর্থাৎ ৫০ কেজি আলু কিনলে তার মধ্যে তিন-চার কেজি খারাপ বেরোয়। তা বাছাই করতে হয় পয়সা দিয়ে লোক রেখে। খুচরো আলু বিক্রিতে আবার প্রতি কেজিতে ২৫-৩০ গ্রাম বেশি চলে যায়। কেজি প্রতি চার টাকা দাম বেশি না রাখলে লোকসান।” ব্যবসায়ীদের দাবি, শেষ পর্যন্ত পুলিশ প্রশালনের লোকজন তাদের দু’টাকা বেশি দরে আলু বিক্রি করার কথা বলেছিল। গোপালবাবুর দাবি, “কোনও ভাবেই মাত্র দু’টাকা বেশি দরে খুচরো বিক্রি করা যায় না। সেই কারণেই আমরা আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি।”
কৃষ্ণনগর শহরে প্রতি দিন প্রায় দেড় হাজার বস্তা আলু ঢোকে। গত দু’দিন তা ঢোকেনি। পাইকারি আলু ব্যবসায়ীদের গুদামে আপাতত আলু প্রায় নেই। খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে যা সামান্য আলু ছিল, তা-ও শেষ। ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, কালোবাজারি যদি হয়েই থাকে, তা হচ্ছে আড়তে। সেখানে দাম কমাতে না পেরে প্রশাসন তাঁদের চাপ দিচ্ছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই অবশ্য বলেন, “আমরা ব্যবসায়ীদের বেশি দামে অলু বিক্রির না করার জন্য সতর্ক করছি। কিন্তু কোথাও দাম বেঁধে দিয়ে চাপ তৈরি করা হচ্ছে না।” রাতে পাইকারেরা জানান, পুলিশ-প্রশাসন যদি অন্যায় ভাবে চাপ না দেয়, শহরের জোগান যাতে যথাসাধ্য ঠিক থাকে, তাঁরা সেই চেষ্টা জারি রাখবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy