—ফাইল চিত্র।
লকডাউনের সরকারি নিয়মবিধি অমান্য করে সঙ্গীদের নিয়ে গ্রামে ঢুকে ত্রাণ বিলির অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি সামনে আসা অস্বস্তিতে প্রশাসন।
দিন কয়েক আগে চাপড়ার চারাতলা গ্রামের এক বাসিন্দার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। গোটা গ্রাম ব্যারিকেড করে ফেলা হয়। গ্রামে ঢোকার মুখে তিনটি রাস্তাতেই বাঁশের ব্যারিকেড বসানো হয়। লাগানো হয় একাধিক সিসি ক্যামেরা। এমনকি, কেউ যাতে মাঠ দিয়ে লুকিয়ে গ্রামে ঢুকতে-বেরোতে না-পারেন তার জন্য গ্রামের চারপাশে পুলিশের পাঁচটা নজরদারি টাওয়ার তৈরি হয়। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘ওই গ্রামে এক জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। কোনও ভাবে অন্যদের মধ্যে যাতে ভাইরাস ছড়িয়ে না-পড়ে তার জন্য গোটা গ্রাম পুরোপুরি লকডাউন করে রাখাটা জরুরি।’’ কিন্তু কে শোনে কার কথা! ব্যারিকেড উপেক্ষা করে, সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে কয়েক জন দলীয় কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার চারাতলা গ্রামে ত্রাণসমগ্রী দিতে হাজির হলেন স্থানীয় বিধায়ক রুকবানুর রহমান। গ্রামে ঢুকে তাঁরা প্রায় চারশো জনকে চাল, আলু দিয়ে গেলেন। দিলেন প্রায় হাজার লিটার জল।
এতে গ্রামবাসীদের সুবিধা হলেও প্রশ্ন উঠেছে ভাইরাস প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অমান্য করা নিয়ে। বিরোধীরা তো সমালোচনার ঝড় তুলেইছেন, প্রশাসনের কর্তারাও অসন্তুষ্ট। বিজেপির উত্তর সাংগঠনিক জেলা কমিটির মিডিয়া কনভেনর সন্দীপ মজুমদার বলেন, ‘‘এমন তো নয় যে, করোনাভাইরাস তৃণমূলের নেতা-বিধায়কদের এড়িয়ে চলে। এটা আসলে সঙ্কীর্ণ রাজনীতির ফল।’’ আবার সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র কথায়, ‘‘ওই গ্রামের মানুষের খাবার, জলের ব্যবস্থা করার কথা প্রশাসনের বা সরকারের। এর থেকে প্রমাণ হয়ে গেল যে, সরকার তথা প্রশাসন সেটা করতে ব্যর্থ। তাই নিয়ম ভেঙে বিধায়ককে ত্রাণ নিয়ে ঢুকতে হল।’’ বিধায়কের যুক্তি, ‘‘করোনায় আক্রান্তের-সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে জেনেই গ্রামে গিয়েছিলাম। তা-ও বেশি ভিতরে ঢুকিনি। এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে জিনিসপত্র রেখে এসেছিলাম।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘লোকের ভিড়ে যাইনি। মানুষের পাশে থাকতে গিয়েছিলাম।’’ প্রশ্ন উঠছে, গ্রামে ঢোকার রাস্তায় পুলিশ কেন তাঁদের আটকে দিলেন না। বিডিও কী করে অনুমতি দিলেন? চাপড়ার ওসি নাদিম আখতার এই বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। তবে বিডিও অমিমেষ কান্তি মান্না বলেন, ‘‘ওই গ্রামে পর্যাপ্ত খাবার মজুত আছে। কোনও অভাব নেই। তবে, বিধায়ক মানুষের পাশে দাঁড়াতেই পারেন।’’ কিন্তু তাঁর সঙ্গে বাকি লোক কী করে ঢুকলেন তার সদুত্বর বিডিও দিতে পারেননি। জেলাশাসক বিভু গোয়েল ও কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলা সুপার জাফর ইকবাল কিদোয়াই, দু’জনেই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy