নশিপুর হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র
দু’দিন ধরে জ্বর সারছিল না নির্মলচরের গিরিমণ্ডলের বাসিন্দা, বছর পঞ্চান্নর সমর মণ্ডলের। চর পেরিয়ে নশিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি। তখনও লকডাউন শুরু হয়নি। তবে দেশে করোনার সংক্রমণ সবে শুরু হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের লাইন দেখে চমকে ওঠেন তিনি। ভিড় এতই যে দু’জন চিকিৎসক রোগী দেখতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রায় দু’ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখাতে পেরেছিলেন তিনি।
ভগবানগোলা-২ ব্লকের নশিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এমন অভিজ্ঞতা কমবেশি প্রায় সকলেরই হয়েছে। আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা এই হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে অনেকেই নানা অভিযোগ করতেন। আউটডোরে লম্বা লাইন তথা রোগীর চাপ বুঝেও কেন হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো হয় না, সেই নিয়েও অনেকের ক্ষোভ ছিল। তবে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ায় খুশি বাসিন্দারা। এর আগে হাসপাতালে এসে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হবে বলে অনেকেই গ্রামীণ চিকিৎসকদের কাছে ছুটে যেতেন। এখন তাঁরাই ভিড় করছেন হাসপাতালে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত এক মাস ধরে হাসপাতালের আউটডোরে মোট পাঁচ জন চিকিৎসক বসছেন। কয়েক দশক আগে তৈরি হয়েছিল নশিপুর গ্রামীণ হাসপাতাল। তবে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ ছিল, হাসপাতালে আউটডোরে রোগীদের চাপ প্রচণ্ড থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যদি ওই দু’জন চিকিৎসকের একজন কোনও কারণে অনুপস্থিত থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দা সহিদুল শেখ রবিবার বললেন, ‘‘করোনার আবহে এখন হাসপাতালে পাঁচ জন চিকিৎসক। লকডাউনে যানবাহনও মিলছে না। ফলে সকলেই হাসপাতালেই ভিড় করছেন।’’ বর্তমানে ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই আউটডোরে পাঁচ জন করে চিকিৎসক রোগী দেখছেন। পাশাপাশি, নশিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে জ্বরের রোগীদের দেখার জন্যও আলাদা ইউনিট খোলা হয়েছে।। সেখানে থার্মাল স্ক্রিনিং যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থাও হয়েছে। ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকেরা অনেকেই হাসপাতালে আসছেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে। সাধারণ জ্বরে ভোগা অনেকেও করোনা কিনা নিশ্চিত হতে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসছেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁদের শারীরিক অবস্থার শংসাপত্রও দেওয়া হচ্ছে। ভগবানগোলা-২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উৎপল মজুমদার বলেন, ‘‘হাসপাতালে রোগীরা এসে যাতে ভিড় না করেন, সেই জন্যই বাড়তি চিকিৎসককে এখানে আনা হয়েছে। পাঁচ জন করে চিকিৎসক আউটডোরে বসছেন। আগে এই ব্লকে চিকিৎসকের অভাব থাকায় তা সম্ভব হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy