Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

করোনার ভয় সত্ত্বেও নজরদারি নিয়ে সংশয় জেলার প্রান্তে

কল্যাণীর বহু লোকজনই একটু ভাল করে বাজারহাট করার জন্য উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরে যান। কাঁচরাপাড়ার জামাকাপড়ের বাজার এখন বন্ধ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মনিরুল শেখ
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৫৭
Share: Save:

করোনা সংক্রমণের কারণে কলকাতা ও সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ইতিমধ্যেই ‘রেড জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনা থেকে নদিয়ায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে পুলিশি নজরদারি কতটা, তা নিয়ে দুই জেলার সীমানা এলাকার আশপাশের বাসিন্দাদের যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

কল্যাণীর বহু লোকজনই একটু ভাল করে বাজারহাট করার জন্য উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরে যান। কাঁচরাপাড়ার জামাকাপড়ের বাজার এখন বন্ধ। কিন্তু অনেকেই মাছ বা রেয়াজি খাসির মাংস কিনতে বাগমোড়ে যান। কল্যাণীর রথতলা, বুদ্ধপার্ক, সেন্ট্রাল পার্কের মতো জায়গাগুলি থেকে বীজপুর একেবারেই কাছে। দুই এলাকার লোকজনের যোগাযোগও যথেষ্ট। ফলে আনাগোনাও স্বাভাবিক। নদিয়ার রানাঘাট ও কল্যাণী এই দুই মহকুমায় এখনও পর্যন্ত করোনা থাবা বসাতে পারেনি। ফলে উত্তর ২৪ পরগনার সংসর্গ বাঁচানোই এখন নদিয়া প্রশাসনের লক্ষ্য হওয়ার কথা। কিন্তু বুধবার দুপুরেও নদিয়ার হরিণঘাটা থানার নিমতলা আর গোপালনগরের মধ্যে রাস্তায় কার্যত কোনও নজরদারিই চোখে পড়েনি।

তবে কোনও প্রহরা যে নেই, তা নয়। এ দিনই কল্যাণীর বাসিন্দা সুনীল পাহাড়ি বলেন, “লকডাউনের প্রথম দিকে দিব্যি কাঁচরাপাড়ায় যাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড কড়াকড়ি শুরু হয়েছে।“ কল্যাণীর রথতলার একটি ছোট সেতু রয়েছে। সেটি পার হলেই উত্তর ২৪ পরগনা শুরু। দিন কয়েক ধরে ওই জায়গায় পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। ফলে লোকজন জবাবদিহি এড়িয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে পারছেন না। তবে কল্যাণী আর কাঁচরাপাড়ার মধ্যে কিছু অলিগলি রাস্তা রয়েছে। সেগুলিতে পুলিশ পাহারা নেই। সেগুলি দিয়ে লুকিয়ে-চুরিয়ে যাতায়াত চলছে। কল্যাণীর চর জাজিরার বাসিন্দা কাশীনাথ মাহাতোর কথায়, “দিন তিনেক আগে বীজপুরের কাঁপা মোড়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়া দরকার ছিল। লক্ষ্ণী সিনেমার পাশ দিয়ে একাধিক গলি হয়ে চলে গিয়েছিলাম।“

একই ভাবে হরিণঘাটার সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর, গোপালনগর, হাবড়া ও গাইঘাটা থানার যোগাযোগ রয়েছে। হরিণঘাটার নিমতলা বাজার থেকেই শুরু হচ্ছে গোপালনগর থানা। বুধবার দুপুরে নিমতলায় গিয়ে দেখা যায়, দুই জেলার সীমানায় কোনও পুলিশ নেই। স্থানীয় বাসিন্দা শুভদীপ সাহার দাবি, কয়েক দিন আগেও পুলিশ পাহারা ছিল। তবে প্রতি দিন থাকে না। তবে গোপালনগরের দিকে অনেকটা এগিয়ে গেলে মাঝে-মধ্যেই পুলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছে।

গত সোমবার নদিয়ার নগরউখড়ার বাসিন্দা মৃন্ময় ভৌমিক ওষুধ কিনতে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় গিয়েছিলেন। তাঁর অভিজ্ঞতা, “নদিয়ার ঝিকড়া পার হতেই উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থানা। সেখানে পুলিশ আমাকে ধরেছিল। আমি প্রেসক্রিপশন দেখাতে ছেড়েও দেয়। তবে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়ার সময়ে ‘থার্মাল স্ক্রিনিং‘-এর কোনও ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়াও বিশেষ কারণ দেখিয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গিয়ে লোকজন দীর্ঘ সময় থাকছে, একাধিক জায়গায় ঘোরাঘুরি করে তবেই বাড়ি ফিরছেন। এটাও প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। হরিণঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গৌতম কীর্তনিয়ার মতে, “হাবড়ার সঙ্গে নদিয়ার সীমানা পুরোপুরি সিল না করলে যে কোনও সময়ে বিপদ হতে পারে।’’ রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ অবশ্য বলেন, “দুই জেলার সীমানায় সব ক’টি পয়েন্টে নাকা চেকিং করা হচ্ছে। প্রত্যেককে ধরে জানতে চাওয়া হচ্ছে, কেন পথে বেরিয়েছে। যথাযথ কারণ ছাড়া কাউকে জেলায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।“

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy