Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

কে আসল, কে নকল? মুর্শিদাবাদে গোঁজ-কাঁটায় ‘বিদ্ধ’ তৃণমূল, কাজ হচ্ছে না হুঁশিয়ারিতেও

‘গোঁজ’ প্রার্থী আটকাতে দৃশ্যত ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছিল শাসক তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, অতিসাবধানতা অবলম্বন করেই প্রার্থিতালিকা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই কৌশলেও পুরোপুরি আটকানো যায়নি গোঁজ কাঁটা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩ ১৯:১৩
Share: Save:

সকালেই এলাকায় প্রচার করে গিয়েছেন তৃণমূলের ঘোষিত প্রার্থী। তিনি চলে যাওয়ার পর বেলা গড়াতেই এসে হাজির আর এক জন। তিনি দলের ঘোষিত প্রার্থী না হলেও নিজেকে তৃণমূলের প্রার্থী বলে দাবি করেই প্রচার করে গেলেন! জানিয়ে গেলেন, নির্দল হলে কী হবে, তিনি ‘বিধায়ক মনোনীত প্রার্থী’। এঁদের মধ্যে কে আসল, আর কে নকল, কাকে ভোট দেওয়া উচিত— এই সব নিয়ে চিন্তায় মহাফাঁপড়ে পড়েছেন দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরা।

‘গোঁজ’ প্রার্থী আটকাতে দৃশ্যত ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছিল শাসক তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, অতিসাবধানতা অবলম্বন করেই প্রার্থিতালিকা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই কৌশলেও পুরোপুরি আটকানো যায়নি গোঁজ কাঁটা। মুর্শিদাবাদে সেই কাঁটায় বিদ্ধ শাসকদল! দলের ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের ‘কথায়’ যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। গত শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের তরফে সে কথা স্পষ্ট জানিয়েও দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার কোনও প্রভাব দেখা গেল না মুর্শিদাবাদে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে।

মুর্শিদাবাদে ২৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট আসন সংখ্যা ৫,১৪৮। সেখানে তৃণমূলের মনোনয়ন জমা পড়েছে ৬,৭২৪টি। শুধু তা-ই নয়, জেলার ২৬টি পঞ্চায়েত সমিতির ৭৪৮টি আসনেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে ৯৬০ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ৭৮ আসনের জেলা পরিষদেও শাসকদলের পক্ষে ৯৬টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গোঁজ প্রার্থী নিয়ে দলের অন্দরে আশঙ্কার আবহে প্রকাশ্যে ‘নির্দল প্রার্থী’দের সমর্থন করতে দেখা গিয়েছে জেলার চার বিধায়ককে। ‘অনুগামী’রা পঞ্চায়েত নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থিতালিকায় ঠাঁই না পাওয়ায় সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দলের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। ভরতপুরের ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি ও ব্লক সভাপতিদের গোপন আঁতাঁদের কারণে আমার অনুগামীরা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা টিকিট পাননি। তাই নির্দল হিসাবে লড়িয়েই প্রমাণ করে দেব, কার শক্তি কতটা।’’

এতেই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। নওদা এলাকার প্রবীণ তৃণমূল কর্মী আকসেদ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা সব নির্বাচনে জোড়া ফুল প্রতীকে ভোট দিই। কোনও প্রয়োজন হলে যেতে হবে বিধায়িকার কাছে। উনি বলছেন, নির্দলে ভোট দিতে। ওটাই নাকি আসল তৃণমূল।’’ ভরতপুরের রাজু বসাকও বলেন, ‘‘আমরা সত্যিই বুঝতে পারছি না, কাকে ভোট দেব। কাকে ভোট দেওয়া উচিত। এলাকার উন্নয়নের জন্য বিধায়ক মনোনীত প্রার্থীকেই ভোট দেওয়া উচিত। আবার দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার কথাও ভাবতে পারছি না।’’

জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এ সবে গুরুত্ব দিতে নারাজ। মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, ‘‘জোড়া ফুল প্রতীকে যাঁরা ভোটে লড়ছেন, একমাত্র তাঁরাই তৃণমূলের। তৃণমূলে থেকে কেউ যদি নির্দল হয়ে দাঁড়ান কিংবা নির্দলকে সমর্থন করেন, তা দল বিরোধী কাজ হিসেবে চিহ্নিত হবে। এদের বিরুদ্ধে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election 2023 TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy