Advertisement
২১ ডিসেম্বর ২০২৪
flood

flood: সারা রাত জেগে বাঁধ সারাল গ্রাম

২০০০ সালের বানে ভিটে মাটি হারানোর স্মৃতি যে এখনও টাটকা। সেই আতঙ্কে এখনও তাঁদের তাড়া করে।

 জেনারেটরের আলোর ব‍্যবস্থা করে কয়েকশো মিটার বাঁধ সারাচ্ছেন চাষিরা।

জেনারেটরের আলোর ব‍্যবস্থা করে কয়েকশো মিটার বাঁধ সারাচ্ছেন চাষিরা। নিজস্ব চিত্র।

সন্দীপ পাল
কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২১ ০৮:২৯
Share: Save:

রাত তখন প্রায় ১০টা। সকাল থেকেই ভাগীরথী জল ঢুকে জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতি আটকাতে গ্রামের চাষীরা বাঁধ মেরামত করে ভাগীরথী জল আটকাতে ব‍্যস্ত। জেনারেটরের আলোর ব‍্যবস্থা করে কয়েকশো মিটার বাঁধ সারাচ্ছেন চাষিরা। কেউ বস্তায় মাটি তুলছেন। কেউ আবার সেই বস্তা সাজিয়ে দিচ্ছেন বাঁধের গায়ে। কাজে কোনও বিরাম নেই। আর হবেই না বা কেন। কালীগঞ্জ ব্লক-সহ ওই গোবরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফুলবাগানে গত ২০০০ সালের বন্যার কথাগুলো এখানে ভুলতে পারেন না সূর্য, গোপিনাথ, ষষ্ঠী ঘোষরা। কিছুতেই না।

এখনও বর্ষার সময় টানা বৃষ্টি ও ব‍্যরেজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে শুনলেই ভয়ে বুক কাঁপে তাঁদের। কালীগঞ্জের ফুলবাগান, গোবরার গ্রামের বাসিন্দাদের মন পড়ে থাকে বাঁধের দিকে। কেউ খবরে কান রাখেন। কেউ আবার খোঁজ নেন ব‍্যারেজ থেকে জল কত ছাড়ল সেই মতো ব‍্যবস্থা নিতে।

২০০০ সালের বানে ভিটে মাটি হারানোর স্মৃতি যে এখনও টাটকা। সেই আতঙ্কে এখনও তাঁদের তাড়া করে। গত কয়েক দিন ধরে নিম্নচাপ বৃষ্টি ও ভাগীরথীর জল হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় গোবরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফুলবাগান এলাকার ভেড়ি বাঁধের উপর দিয়ে চাষের জমিতে জল ঢুকতে শুরু করেছে। কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার মাঠ, গ্রাম ঢোকার রাস্তা আগেই জলের তলায় চলে গিয়েছে। ফুলবাগান এলাকায় নদীর জল ঢোকা দেখে গ্রামের যুবকেরা শনিবার সারা রাত বাঁধের উপর জেগে রাত কাটালেন। পরিস্থিতি এমনই, তাঁদের সঙ্গে গ্রামের বয়স্কেরাও টর্চের আলো নিয়ে ভোর পর্যন্ত ওই ভেড়ি বাঁধের পাহারা দিলেন। কালীগঞ্জ ব্লকের ইতিমধ্যে ফুলবাগান চৌধুরীপাড়া থেকে প্রায় সকলকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, জোর বর্ষা ও ব‍্যারেজ থেকে জল ছাড়লেই ওই ভেড়ি বাঁধ ছাপিয়ে চাষের জমিতে জল ঢোকে। তাই ওই ভেড়ি বাঁধ সারাতে হবে।

শনিবার রাতে ওই যুবকদের সঙ্গে বাঁধ সারায়ের কাজে উপস্থিত ছিলেন ওই এলাকার পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের সূর্য ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষের এই বাঁধ নিয়ে চরম সমস্যা। কয়েকশো বিঘের ফসল এখন নষ্ট হয়েছে। অনেকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্রামের যুবকরা ভোর পর্যন্ত কাজ করে জল আটকাতে কাজ করেছেন।’’ কালীগঞ্জের বিডিও উৎপল দাস মহুরী বলেন, ‘‘বাঁধ সারাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আলোর ব‍্যবস্থা ব্লকের পক্ষ থেকে করে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ওদের পঞ্চায়েত থেকে টাকা দেওয়ার ব‍্যবস্থাও হবে।’’ তিনি জানান, ইতিমধ্যে চৌধুরীপাড়া, ফরিদপুরের সাধুগঞ্জ গ্রামের মধ্যে জল ঢুকেছে। বেশ কিছু এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

অন্য বিষয়গুলি:

flood dam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy