E-Paper

জমি দিয়ে নিজেরাই রাস্তা বানাচ্ছে গ্রামে

ঘটনাটি তেহট্ট ১ ব্লকের কানাইনগর পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর গ্রামের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাহাদুরপুর থেকে কয়েকটি গ্রাম ও মাঠের মধ্যে দিয়ে ছিল কাঁচা রাস্তা।

বিনা পারিশ্রমিকে রাস্তা করছেন গ্রামবাসীরা। নদিয়ার কানাইনগর পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর গ্রামে।

বিনা পারিশ্রমিকে রাস্তা করছেন গ্রামবাসীরা। নদিয়ার কানাইনগর পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর গ্রামে। ছবি: সাগর হালদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪৬
Share
Save

প্রায় কুড়ি বছর ধরে জমিজটের কারণে আটকে ছিল গ্রামের একটি রাস্তা। এখন গ্রামবাসীদের একাংশ জমিদান করে, পঞ্চায়েতের সহায়তায় নিজেরাই বিনা পারিশ্রমিকে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করছে। দীর্ঘ দিন পর যাতায়াতের সমস্যা মিটতে চলেছে বলে খুশি গ্রামের মানুষও।

ঘটনাটি তেহট্ট ১ ব্লকের কানাইনগর পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর গ্রামের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাহাদুরপুর থেকে কয়েকটি গ্রাম ও মাঠের মধ্যে দিয়ে ছিল কাঁচা রাস্তা। যেটি দিয়ে গ্রাম থেকে সরাসরি কয়েক কিলোমিটার দূরের মৃগী ও নাজিরপুর এলাকায় পৌঁছে যাওয়া যায়। কিন্তু বাহাদুরপুর সাবেক পাড়া থেকে মাঠ পাড়া পর্যন্ত প্রায় ছ’শো মিটার রাস্তা প্রায় বহু বছর ধরে অত্যন্ত সরু ও মাটির রাস্তা ছিল। প্রায় কুড়ি বছর আগে সেই রাস্তা চওড়া করতে উদ্যোগী হন গ্রামবাসীরা। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় জমি। সে সময়ে থেকে সাবেক পাড়া এলাকার কোনও এক বাসিন্দা রাস্তা তৈরির একাংশ নিজের মালিকাধীন বলে দাবি করায় রাস্তা আর হয়ে ওঠেনি। সেই থেকে ওই কাচা রাস্তা দিয়েই চলাচল করে চলেছেন গ্রামবাসীরা।

জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সংস্কারহীন ওই রাস্তায় যাতায়াতের সমস্যা দূর করতে গ্রামবাসীরা আলোচনায় বসেন। সিদ্ধান্ত হয় রাস্তা সংস্কারের। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েতের সহায়তায় ইটের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে পুনরায় জমিজট তৈরি হয়। তবে এ বার স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই এগিয়ে আসেন। গ্রামের রাস্তা গড়ার জন্য জমিদানে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। কেউ চার শতক, কেউ এক কাঠা করে জমিদান করেন। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, যাঁরা রাস্তা তৈরির আগে জমি নিয়ে সমস্যা করেছিলেন, তাঁদের জমির পাশেই থাকা জমিদান করেন অন্য গ্রামবাসীরা। যাতে কোনও ভাবেই রাস্তা সংস্কারের কাজ আটকে না যায়, সে জন্য এই ব্যবস্থা। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে পাকা রাস্তা তৈরির কাজ। সেখানেও হাত লাগিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা প্রফুল্ল সরকার বলেন, “এই রাস্তার খুব দরকার ছিল। প্রায় কুড়ি বছর ধরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এখন অনেকে জমি দান করার পর পঞ্চায়েতের সহায়তায় বিনা পারিশ্রমিকে তিন-চারটি গ্রামের গ্রামবাসীরা নিজেরাই রাস্তা তৈরি করছেন।” পাশাপাশি, স্থানীয় গ্রামবাসী বীনা জোয়ারদার বলেন, “বর্ষাকালে এই রাস্তায় কাদা হয়ে যায়। সাবেক পাড়া থেকে মাঠপাড়ার শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে অনেকে যায়। আবার মাঠ পাড়ার দিক থেকে এই রাস্তা ধরেই অনেক বিভিন্ন কাজে যায়। পড়ুয়ারাও যায় হাই স্কুলে। সবার সমস্যা হচ্ছিল। এখন রাস্তা হচ্ছে।’’

রাস্তা তৈরিতে জমিদান করেছেন যোগেশ সরকার, আশানন্দ মণ্ডল, অমর চাঁদ বিশ্বাস। যোগেশ বলেন, “রাস্তার জন্য কয়েক জন আমায় জমিদানের কথা বলে‌ন। সকলের সুবিধার জন্য আমার চাষের জমি রাস্তার জন্য দিয়েছি।” অন্য দিকে, গ্রামের রাস্তা তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন সুশীল সরকার, সম্রাট চৌধুরী। তাঁরা এ দিন বলেন, “আমরাই অসুবিধার মধ্যে ছিলাম। যখন জমি পাওয়া গিয়েছে, তাই নিজেরাই কাজে লেগে পড়েছি।”

এই বিষয়ে কানাইনগর পঞ্চায়েত প্রধান টগরী ঘোষ বলেন, “সবার স্বার্থে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে নিজেরাই বিনা পারিশ্রমিকে রাস্তা করছেন। পঞ্চায়েত সাহায্য করেছে, আগামী দিনেও করবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tehatta road constrution

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।