—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মহালয়া পেরনো ইস্তক ঠাকুর দেখার ভিড়ে নাজেহাল অবস্থা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল থেকে কল্যাণীর সব রাস্তার। ট্রেন প্রবল গুঁতোগুঁতি।
গঙ্গার ধার বরাবর ব্যারাকপুর আর কল্যাণী শিল্পাঞ্চলে প্রশাসনিক অনুমতি পাওয়া দুর্গাপুজোর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। ঘিঞ্জি ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে থিমপুজোর ছড়াছড়ি। ব্যারাকপুর শহর তো বটেই। তা বাদে বেলঘরিয়া, বরাহনগর, পানিহাটি, ইছাপুর, হালিশহর, কাঁচরাপাড়ায় অসংখ্য থিম পুজো। করোনা ভীতি কাটার পর গত বছর থেকে পুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। চতুর্থী থেকেই বিটি রোড, ঘোষপাড়া রোড, এসএন ব্যানার্জি রোডের মতো শিল্পাঞ্চলের প্রধান সড়কগুলিতে সন্ধ্যায় গাড়ির গতি শূন্য থেকে কুড়ি-র কাঁটায় উঠছে বড় জোর। ভিতরের রাস্তাগুলিতে তো কথাই নেই। বেশ কিছু রাস্তা নো এন্ট্রি করেছে পুলিশ। যান নিয়ন্ত্রণে পথে নামানো হয়েছে অতিরিক্ত তিনশো পুলিশ কর্মীকে। তাতেও পঞ্চমীর রাত থেকে বেলাগাম অবস্থা।
ব্যারাকপুরে পুজোর সময় রাস্তার ধার জুড়ে অসংখ্য খাবারের দোকান। সেগুলিতে লাইন দিয়ে খাবার কেনার কারণে ভিড় যেমন আছে, প্রতিমা দেখতে আসা মানুষের ঢল নামছে বিরিয়ানির দোকানগুলিতেও। সব মিলিয়ে রাস্তা আর চলাচলের যোগ্য নেই। গত কয়েক বছর ধরে আবার এই শিল্পাঞ্চল, এমনকি কলকাতা থেকেও কল্যাণীমুখী হচ্ছেন পুজো দেখতে বেরনো মানুষজন।
এমনিতে সাজানো শহর কল্যাণীর পুজোয় উন্মাদনার চেয়ে সাবেকিয়ানাই বেশি চিরকাল। কিন্তু গত এক দশকে সেখানেও প্রতিযোগিতা বেড়েছে। ফাঁকা জায়গায় বিশালকায় মণ্ডপ, মেলা, বিজয়া কার্নিভালে সারিবদ্ধ প্রতিমা নিরঞ্জন দেখার মতো বিষয় হয়ে উঠেছে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে কাজ চললেও এমনি দিনে আগের তুলনায় অনেকটাই দ্রুত উত্তর শহরতলি থেকে সেখানে পৌঁছনো যায়। তা ছাড়া ট্রেন তো আছেই। যে ভিড়টা নদিয়ার অন্য প্রান্ত থেকে এতদিন কলকাতামুখী হত, কল্যাণীতে পাল্লা দিয়ে থিম পুজো শুরু হওয়ায় তার অনেকটা এই শহরে ঢুকছে।
কল্যাণীর আইটিআই মোড়ের লুমিনাস ক্লাবের পুজো, এ নাইন স্কোয়ার পার্কের পুজো ও রথতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব পুজো কমিটি লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে থিমের মণ্ডপ, প্রতিমা সজ্জার প্রতিযোগিতায় নেমেছে এ বার। এই তিনটি পুজোর টানে গত বছর থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তের, এমনকি কলকাতার মানুষও কল্যাণীমুখী হচ্ছেন। আইটিআই মোড়ে লুমিনাস ক্লাবের পুজো ২০১৩ সাল নাগাদ থিমের মণ্ডপ করে প্রথম চমক এনেছিল। সেই পুজোর অন্যতম আয়োজক অরূপ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “শুধু ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল কেন, সারা রাজ্যের মানুষের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও অনেকে আমাদের মণ্ডপ ও প্রতিমা দেখতে আসছেন।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর পুজোয় প্রতি দিনই প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের ভিড় হয়েছে। এই বছরে এখনও পর্যন্ত গড়ে প্রায় এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ ২০ হাজার মানুষের ভিড় হচ্ছে। কলকাতার মানুষজনও কল্যাণীমুখী হচ্ছেন। তার জেরে যানজটে হচ্ছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে জুড়ে। ট্রেনেও তিলধারণের জায়গা নেই। রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে কল্যাণী মেন স্টেশন ও শিল্পাঞ্চল স্টেশন মিলিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গড়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ কল্যাণীর পুজো দেখতে নামছে। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, আজ থেকে চার দিন অর্থাৎ শুক্র, শনি, রবি ও সোমবার আপ কল্যাণী সীমান্ত লোকাল বিকাল ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ঘোষপাড়া স্টেশনে দাঁড়াবে না। তবে ডাউন লোকাল যথারীতি থামবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy