Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Lok Sabha Election 2024

জনসভায় নেই আবীররঞ্জন, নেই উজ্জ্বলও

নদিয়া জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল দীর্ঘ দিনের বিষয়। কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলার মতো রানাঘাট সাংগঠনিক জেলাতেও সেই কোন্দল বারবার সামনে এসেছে।

—প্রতীকী চিত্র।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০৯
Share: Save:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা মঞ্চেই ফের প্রকট হল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। মঞ্চে দেখা গেল না দলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ আবীররঞ্জন বিশ্বাসকে। দেখা গেল না জেলার একমাত্র মন্ত্রী তথা প্রবীণ নেতা উজ্বল বিশ্বাসকেও। যা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই নেতাকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভার মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণই জানানো হয়নি।

নদিয়া জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল দীর্ঘ দিনের বিষয়। কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলার মতো রানাঘাট সাংগঠনিক জেলাতেও সেই কোন্দল বারবার সামনে এসেছে। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে অনেক জায়গাতে ভিতরে ভিতরে কোন্দলের চোরাস্রোত বজায় থাকলেও চাপড়া বিধানসভা এলাকায় তা মাঝে মধ্যেই প্রকাশ্য চলে আসছে বলে তৃণমূলেরই কর্মী-সমর্থকদের একাাংশের দাবি। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রেও একই অবস্থা। যার ছাপ দেখা গেল রবিবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের জনসভাতেও।

দত্তপুলিয়ার এই জনসভায় দেখা মিলল না রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ আবীররঞ্জন বিশ্বাসের। তিনি আবার রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়কও। কেন তাঁকে দেখা গেল না? জবাবে আবীররঞ্জন বলেন, “ওই জনসভায় যাওয়ার জন্য আমায় কেউ কিছুই বলেননি। শনিবার রাতে প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী শুধু আমায় ফোন করেছিলেন। তিনি নাকি আমাকে ও উজ্জ্বল বিশ্বাসকে বলার জন্য জেলা সভাপতিকে অনুরোধ করেছিলেন। তার পরেও অবশ্য আমায় দলের তরফে সেখানে যাওয়ার কথা কিছুই বলা হয়নি।”

দলের কর্মীদেরই একাংশের দাবি, রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আবীররঞ্জন বিশ্বাসের ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা সকলেরই জানা। লোকসভা নির্বাচনে আগেও ওই অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি। তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন, মুকুটমণি অধিকারীকে প্রার্থী করে বিজেপির মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট ব্যাঙ্কে ফাটল ধরানো সম্ভব হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়া দরকার ছিল। এক আবীর-ঘনিষ্ঠের কথায়, “দাদাকে না ডেকে কর্মীদের মধ্যেই একটা নেতিবাচক বার্তা দেওয়া হল। এর ফল ভুগতে হবে দলকে।”

কৃষ্ণনগর ১ ব্লকের ভালুকা ও জোয়নিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত দু’টি রানাঘাট লোকসভার অন্তর্গত। এই এলাকা থেকে কর্মীদের নিয়ে ছ’টি বাস অভিষেকের জনসভায় গিয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। শুধু মন্ত্রী হিসাবে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য জেলার বর্ষীয়ান এই নেতাকে আলাদা গুরুত্ব দেয় দল। যে কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতাদের কর্মসূচিতে বরাবরই তাঁকে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে। সেই উজ্জ্বল বিশ্বাসকে রবিবার মঞ্চে না দেখে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে উজ্জ্বল বিশ্বাসকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়নি। মুকুটমণির ঘনিষ্ঠমহল থেকেও জানা গিয়েছে যে, তিনিও চেয়েছিলেন আবীররঞ্জন বিশ্বাস ও উজ্জ্বল বিশ্বাস এই সভামঞ্চে উপস্থিত থাকুন। তাঁদের দু’জনকে নিমন্ত্রণ জানানো হোক। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উজ্জ্বল বিশ্বাস অবশ্য বলছেন, “আমার এলাকায় আগে থেকেই প্রচার কর্মসূচি ঠিক হয়েছিল।” তবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কিনা, তা খোলসা করেননি নেতা।

অভিষেকের জনসভা ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে এমন অস্বস্তিকর নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করায় কিছুটা হলেও বিব্রত রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,“দলের সাংগঠনিক বিষয়ে আমি সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলতে চাই না।”

যদিও এ দিন রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সবার নিজের নিজের লোকসভা নিয়ে ব্যস্ত থাকার নির্দেশ থাকায় উজ্জ্বল বিশ্বাসকে বলা হয়নি। আর আবীররঞ্জন বিশ্বাসের তো আসার কথা আছে। দলের ভিতরে কোনও সমস্যা নেই।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy