হরিহরপাড়ার এই এলাকাতেই রবিবার রাতে খুন হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী। — নিজস্ব চিত্র।
মুর্শিদাবাদে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল তৃণমূল কর্মীর। রবিবার রাতে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে পর পর কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। তাতেই ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন যুবক। হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরেও খুন করা হয়ে থাকতে পারে তৃণমূল কর্মীকে। শুরু হয়েছে তদন্ত।
মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার অন্তর্গত পাড়াগ্রামের বাসিন্দা সনাতন ঘোষ। তিনি পেশায় দুধ ব্যবসায়ী। রবিবার রাতেও ব্যবসার কাজ সেরেই বাড়ি ফিরছিলেন বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। অভিযোগ, বাইকে করে ফেরার পথে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকায়। সনাতন কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলি চালাতে শুরু করে তারা। পর পর গুলি লাগে তাঁর গায়ে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে যান তিনি। এর পর দুষ্কৃতীরা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়েরা গিয়ে সনাতনকে উদ্ধার করে প্রথমে হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। পরে তাঁর অবস্থান অবনতি হলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে সনাতনের। তিনি এলাকায় দীর্ঘ দিনের তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী রকি শেখ বলেন, ‘‘এই খুনের নেপথ্যে রয়েছে বিজেপির চক্রান্ত। লোকসভা ভোটে এলাকায় তৃণমূলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন সনাতন। সেই কারণেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। এমনিতেই ওই দিকের বুথে বিজেপির উৎপাত বেশি। এ বারের ভোটেও ওই বুথে বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে।’’
তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিজেপির সভাপতি শাখারাভ সরকার বলেন, ‘‘যিনি খুন হয়েছেন তিনি নিজেও দুষ্কৃতী। তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের অন্তর্দ্বন্দ্বে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছি। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।’’
স্থানীয় সূত্রে খুনের নেপথ্যে অন্য একটি তত্ত্বও উঠে এসেছে। হরিহরপাড়া এলাকায় বাদল ঘোষ নামের এক ব্যক্তি কয়েক বছর আগে খুন হয়েছিলেন। তিনি এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন। ওই খুনের অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই সনাতন। তিনি এবং তাঁর পরিবার কয়েক বছর এলাকাছাড়া ছিলেন বলেও দাবি স্থানীয় সূত্রে। অনেকে বলছেন, সেই পুরনো শত্রুতা থেকেই বদলা নিতে সনাতনকে খুন করা হল। মৃতের পরিবারও সেই অভিযোগই করেছে। সনাতনের আত্মীয় রেণুকা ঘোষ বলেন, ‘‘বাদল ঘোষের খুন হওয়ার পর সনাতনের নাম করা হয়েছিল। তার পর থেকে বেশ কয়েক বার ওকে মারার চেষ্টা হয়েছে। কিছু দিন আমরা এলাকাছাড়া ছিলাম। এই খুনে বাদলের পরিবার যুক্ত বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’’
মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাজিদ ইকবাল খান বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পুরনো শত্রুতা এবং জমি সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই এই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। মৃতের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সামগ্রিক ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy