—প্রতীকী চিত্র।
নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অনেকেই। তবে তাঁরা দলের প্রার্থীর হয়ে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন নাকি বিরোধীদের সুবিধা করে দিতে অন্তর্ঘাতে জড়াবেন, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। গোটা জেলা জুড়ে এমন বহু এলাকা আছে যেখানে আপাতদৃষ্টিতে শান্তির পরিবেশ দেখা গেলেও ভেতরে অন্তর্ঘাতের চোরা স্রোত বইছে তৃণমূলের অন্দরে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের টিকিট না-পেয়ে যাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তাঁদের ভূমিকা কী হতে পারে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যুযুধান দুই গোষ্ঠীর নেতারা মুখে ‘সৌভ্রাতৃত্বের’ কথা বললেও বাস্তবে যে বিরোধী গোষ্ঠীর প্রার্থীদের হয়ে তাঁরা লড়াই দেবেন না তা সহজেই অনুমেয়।বরং কোথাও বিরোধী দলের হয়ে কাজ করার সম্ভবনা উড়িয়ে দিতে পারছেন না শাসক দলের নেতারাই। একান্তে তা তাঁরা স্বীকারও করেছেন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, তেহট্ট ১ ব্লকে বিধায়ক তাপস সাহা ও জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য তথা প্রার্থী টিনা ভৌমিক সাহার দ্বন্দ্ব রাজনৈতিক মহলে চর্চিত বিষয়। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের টিকিট বণ্টনে টিনার দাপট দেখা গিয়েছে।
জেলা পরিষদে তাপস গোষ্ঠীর কেউ টিকিট পাননি। তাই সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিয়েছিলেন বিধায়ক। তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে তাপস বলেছেন, নিজের অনুগামী প্রার্থীদের হয়ে মাঠে নামলেও বিরোধী গোষ্ঠীর অর্থাৎ টিনার গোষ্ঠীর প্রার্থীদের দায়িত্ব নেবেন না। উল্টো দিকেও একই ঘটনা ঘটবে বলে আশঙ্কা অনেকের। প্রসঙ্গত, এই ব্লকে জেলা পরিষদে তিনটি আসনের তৃণমূলের ছয়টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল।
তৃণমূলের আরও একটি স্পর্শকাতর এলাকা হল করিমপুর ১ ও ২ ব্লক। সেখানে জেলা পরিষদের প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। পরে দলের নির্দেশে টিকিট না-পাওয়া প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। সূত্রের খবর, প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক মহুয়া মৈত্র ও বর্তমান বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়ের গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব উপর উপর মিটলেও বাস্তবে তা থেকে গিয়েছে বলে একান্তে মেনে নিচ্ছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, প্রার্থী বাছাই নিয়ে যা ঘটেছে, তাতে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দলে বিরোধিতার সুর থাকবে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, গোটা হরিণঘাটা ব্লকে তৃণমূল আড়াআড়ি ভাগ হয়ে আছে। এক দিকে, হরিণঘাটা ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ। অন্য দিকে, তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূলের হরিণঘাটা ব্লক সভাপতি নারায়ণচন্দ্র দাস। এ বারে চঞ্চল ও তাঁর ঘনিষ্ঠেরা টিকিট পাননি। তাই এখনও পর্যন্ত ময়দানে দলের হয়ে নামতে চঞ্চল শিবিরের কাউকে দেখা যায়নি। নামার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। বরং অন্তর্ঘাতের সম্ভবনা স্পষ্ট হচ্ছে সেই ব্লকে।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও গত ১২ জুন রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে ফের দলে ফেরেন প্রদীপকুমার সরকার। তিনি রানাঘাট ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিতে কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। রানাঘাট-১ ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে পাঁচটিতেই এ বছর বিদায়ী প্রধান ও উপ-প্রধানেরা টিকিট পাননি। সূত্রের খবর, রানাঘাট ১ ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তাপস ঘোষের অনুগামী হওয়ায় টিকিট পাননি তাঁরা। টিকিট পাননি তাপস নিজেও। দলত্যাগীদের টিকিট পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাপস। সেখানেও অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
যদিও নদিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলেন, “সকলেই তৃণমূলের এক এক জন সৈনিক। তাঁরা টিকিট পান বা না-পান দলের হয়েই লড়াই করেন। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy