অন্তঃসত্ত্বার আত্মহত্যার চেষ্টায় নাম জড়াল এক তৃণমূল বিধায়কের। এই নিয়ে শোরগোল মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায়। মেয়ের ‘খারাপ কিছু’ হলে বিধায়কই দায়ী থাকবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বধূর বাপের বাড়ির লোকজন। অন্য দিকে, ওই বিধায়ক জানিয়েছেন, তিনি সুপরামর্শ দিয়েছিলেন। চেয়েছিলেন, ওই বধূর সংসারে যেন ফাটল না ধরে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন যে বধূ, তিনি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ২০২২ সালে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। হঠাৎ তিনি জানতে পারেন, স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তার পরে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যান। ঘটনাক্রমে মিটমাটের জন্য বৌমার বাপের বাড়িতে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মঙ্গলবার এ নিয়ে বসে সালিশিসভা। সেখানে বিবাহবিচ্ছেদে অনড় যুবতীকে বেশ কিছু ‘পরামর্শ’ দেন বেলডাঙার তৃণমূল বিধায়ক হাসানুজ্জামান শেখ। অভিযোগ, তাঁর ‘আপত্তিকর মন্তব্যে’ অপমানিত হয়ে সালিশিসভা থেকে উঠে চলে যান বধূ। তার পর বাড়িতে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন পরিবারের লোকজন। এখন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন ওই অন্তঃসত্ত্বা। বধূর বাবার দাবি, মেয়ের শ্বশুরবাড়ির পক্ষ নিয়ে সালিশিসভায় সওয়াল করছিলেন বিধায়ক। তাঁর নিদানে অপমানিত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন মেয়ে। যদিও ঘটনার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন বেলডাঙার বিধায়ক।
বধূর বাপের বাড়ির লোকজনের দাবি, স্বামীর ব্যবহারে ক্ষুণ্ণ হয়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি ছেড়েছিলেন তাঁদের মেয়ে। সেই নিয়ে সালিশিসভায় বিধায়ক বেশ কিছু কথা বলেন। তিনি বিবাহবিচ্ছেদ করতে বারণ করেন বধূকে। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা যুবতী তাতে রাজি না-হওয়ায় তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেন বলে অভিযোগ।
বাড়ি থেকে অন্তঃসত্ত্বাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। প্রথমে তাঁকে যাওয়া হয়েছিল বেলডাঙা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন:
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বেলডাঙার তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘গ্রাম্য সালিশিসভায় আমাদের যেতে হয়। আমি চেয়েছিলাম, ওই সংসারটা জুড়ে থাকুক। তার জন্য যে এমন বেকায়দায় পড়ব ভাবতে পারিনি। আশা করছি, মেয়েটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।’’