—প্রতীকী চিত্র
গোলমাল ও বোমায় দলীয় কর্মীর মৃত্যুর জেরে চাপড়ায় ব্লক যুব সভাপতির পদে রদবদল ঘটাতে পারে তৃণমূল। দলের একটি সূত্রের দাবি, বর্তমান সভাপতি রাজীব শেখকে সরানোর কথা ভাবছেন জেলা নেতৃত্ব। তাঁর বিকল্প হিসেবে বৃত্তিহুদা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বাবলু ঘোষের নাম আলোচনায় রয়েছে। যদিও কেউই তা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে রাজি নন।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবারই রাজীবকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন দলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি হাসানুজ্জামান শেখ। যদিও এই বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাননি তিনি। এ দিন হাসানুজ্জামান শুধু বলেন, “যা বলার, দল বলবে।”
তৃণমূলের একটি অংশের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই রাজীব শেখের নানা কাজকর্মে বিরক্ত জেলা নেতৃত্বের একাংশ। তাঁর হঠকারি সিদ্ধান্তে বহু সময়ে দলকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর ডানা ছাঁটার কথা তাঁদের বিবেচনায় ছিল। ব্রহ্মনগরে বোমাবাজিতে দলীয় কর্মী নিহত হওয়ার পরে তাঁদের হাতে সেই সুযোগ এসে গিয়েছে। কেননা রাজীবের হাত ধরে যারা বিজেপি থেকে দলে ফিরেছিল তারাই সেদিন বেতবেড়িয়া থেকে ব্রহ্মনগরে গিয়ে বোমাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছিল। ফলে প্রকারান্তরে চাপড়া ব্লক আবার অশান্ত হয়ে ওঠার পিছনে রাজীবকেই দায়ী করছেন নেতৃত্বের ওই অংশ।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, প্রথম থেকেই বর্তমান কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা সাংসদ মহুয়া মৈত্রের অপছন্দের তালিকায় ছিলেন রাজীব। এখন দলের উচ্চ নেতৃত্বও একেবারেই চাইছেন না যে বিধানসভা ভোটের আগে কোনও ভাবে চাপড়ায় অশান্তি হোক বা গোষ্ঠী কোন্দল মাথাচাড়া দিক। তাঁরা মনে করছেন, রাজীবের ডাঁনা ছাঁটলেই ব্লকে দলের ভিতরে আশান্তি কমবে।
যদিও তা মানতে নারাজ রাজীব-ঘনিষ্ঠেরা। তাঁদের বক্তব্য, সিপিএমের প্রবল দাপটের সময়ে রাজীব জীবনের ঝুঁকি নিয়েও চাপড়া বাঙ্গালঝি কলেজে ছাত্র রাজনীতি করে এসেছেন। ওই কলেজে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি। চাপড়ায় তৃণমূলের বাড়বাড়ন্তের পিছনে তাঁর অবদান কম নয়। দলের ভিতরে তাঁর বিরোধী পক্ষের কথা শুনে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দিলে আখেরে দলেরই ক্ষতি হবে। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের একাংশ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারেন।
বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গ উঠতেই রাজীব অবশ্য কার্যত আকাশ থেকে পড়ে দাবি করেন— “কই এমন কোনও কথা তো আমি শুনিনি। আমাকে কেউ এই বিষয়ে কিছু জানাননি।” যদিও তাঁকে সরিয়ে কাকে শেষ পর্যন্ত ব্লক যুব সভাপতি করা হতে পারে তা নিয়েও চাপড়ায় দলের অন্দরে জোর জল্পনা চলছে। দলেরই একটি সূত্রের দাবি, এ ক্ষেত্রে জেলা নেতৃত্বের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই আছেন বৃত্তিহুদা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তথা হুদা গ্রামের বাসিন্দা বাবলু ঘোষ। শিক্ষিত ও বাগ্মী যুবক বাবলু দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় দলটা করে আসছেন।
]সামনে আসছে অন্য একটি হিসেবও। তৃণমূলের একটি অংশের দাবি, চাপড়ায় তৃণমূলের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে সংখ্যালঘুরা আসীন। বিজেপির উত্থানের সময়ে তাই অন্তত এক জন সংখ্যাগুরু নেতাকে তুলে এনে ভারসাম্য আনতে চাইছেন জেলা নেতৃত্ব। সেই কারণেই এত দিন পরে বাবলু ঘোষের নাম উঠে আসছে। যদিও বাবলুও দাবি করেন, ‘‘আমাকে এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলেননি।’’
চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান বলেন, “এই বিষয়ে আমার সঙ্গে কেউ কিছুই আলোচনা করেননি। তবে এটা শুধু বলতে পারি যে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে রাজীব যথেষ্ট জনপ্রিয়। ভাল সংগঠক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy