প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ছবি মাথার উপরে দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন তৃণমূল নেতাদের।
তৃণমূল নেত্রী তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা করে এসেছেন। প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন। এমন ছবি চেনা, কিন্তু মুর্শিদাবাদের তৃণমূল জ্যোতি বসুর নাম শুনলেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠত বছর কয়েক আগেও। অথচ এ বছর তাঁর প্রয়াণ দিবসে সিপিএমকেও রীতিমতো পিছনে ফেলে দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে একাধিক তৃণমূল নেতা জ্যোতি বসুর ছবি দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন সকাল থেকে। যা দেখে বাম নেতারা বলছেন, হয়তো পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছেন। কেউ কেউ আবার আরও একধাপ এগিয়ে বলছেন, এদের এটাও একটা নাটক। বাম সংস্কৃতিকে নকল করে ওরা মুখোশের আড়ালে থাকা মুখটাকে ঢাকতে চাইছে। তৃণমূল নেতাদের অবশ্য দাবি, এটা বামেদের নয় তৃণমূলের সংস্কৃতি। আগাগোড়াই তৃণমূল নেত্রী সেই সংস্কৃতির প্রমাণ দিয়েছেন। যেটা বাম নেতৃত্ব কল্পনাও করতে পারে না।
মুর্শিদাবাদে রাজনৈতিক ভাবে বিরোধী মানেই তার ছায়া বাড়ানো যাবে না। এমনকি এক সময় রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলে সেই বাড়িতে বিয়ে দেওয়া যাবে না বলেও ফতোয়া দেওয়া হয়েছিল রাজনৈতিক দলের নেতাদের পক্ষ থেকে। ফলে মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস, অধুনা তৃণমূলের নেতাদের কাছে জ্যোতি বসু যে খুব একটা শ্রদ্ধার নযন, সেটাও তারা ঠারে ঠারে প্রমাণ দিয়েছিলেন বারবার। তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে জ্যোতি বসুকে নিয়ে কখনও এমন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন দেখা যায়নি কংগ্রেস বা তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে।
এ দিন কিন্তু সকাল সকাল জ্যোতি বসুর ছবি তাঁর মাথার উপরে বসিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন রানিনগর ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাহ আলম সরকার। তাঁর দাবি, ‘‘সিপিএমের কার্যকলাপকে আমরা ঘৃণা করি। কিন্তু জ্যোতি বসু এ রাজ্যের দীর্ঘ দিনের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ, আর আমরা রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে ব্যক্তি জ্যোতি বসুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। এর মধ্যে অন্যায় কিছু নেই, নাটকীয়তাও নেই। এটাই আমাদের দলের সংস্কৃতি।’’
রানিনগর বিধানসভার বিধায়ক তৃণমূলের সৌমিক হোসেনও এ দিন শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জ্যোতি বসুর ছবি মাথার উপরে বসিয়ে। তাঁর দাবি, ‘‘রাজনীতি করি, তাই এমন এক জন রাজনীতিবিদের প্রয়াণ দিবসের শ্রদ্ধা জানানো খুব স্বাভাবিক। পরিবারেও এই সংস্কৃতিতে আমরা বড় হয়েছি, দলের নেত্রীর কাছ থেকেও এটাই শিখেছি।’’ যদিও এর আগে কখনও সামাজিক মাধ্যমে জ্যোতিবাবুকে নিয়ে এমন বিনম্র শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের ছবি কেন দেখা যায়নি, তার সদুত্তর মেলেনি তৃণমূল নেতাদের গলা থেকে। ডোমকলের নতুন বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের দাবি, ‘‘আগে কী হয়েছে আমি জানি না, তবে দলের নেত্রীকে দেখছি বিরোধীদের সম্মান শ্রদ্ধা জানাতে। আমরাও সেই পথেই চলি।’’
ডোমকলের এরিয়া কমিটির সম্পাদক সিপিএমের মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, ‘‘দেখলাম তৃণমূল নেতারা জ্যোতিবাবুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। যদি শুভবুদ্ধির উদয় হয় সেটা ভাল। আর যদি নাটক হয় তা হলে সেটা কষ্টের।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলছেন, ‘‘আদতে এদের নিজস্ব কোনও সংস্কৃতি নেই। কখনও বামেদের গান, স্লোগান ধার করে। এ বার হয়তো জ্যোতিবাবুকে হাইজ্যাক করতে চায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy