প্রতীকী ছবি।
ভোট প্রচারে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন মুর্শিদাবাদের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি। মৃত তৃণমূল নেতার নাম মোজাম্মেল হক (৪২)। বৃহস্পতিবার রাতে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার পাঁচগ্রামের হজ বিবি ডাঙা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। মৃত নেতা সাহেবনগরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি ছিলেন। গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে নবগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্য দিকে, ওই একই এলাকায় কংগ্রেস প্রার্থী রমজান শেখের বাবাকে লক্ষ্য করেও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। গুলিবিদ্ধ কংগ্রেস কর্মীর নাম মাহরুল্লাহ শেখ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই দুই ঘটনায় একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস। এলাকায় গুলি চলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পর্ব শেষে বাড়ি ফিরে ভোট প্রচারে বেরিয়েছিলেন সাহেবনগরের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মোজাম্মেল। মোজাম্মেলের প্রচার মিছিল হজ বিবি ডাঙা গ্রামে পৌঁছতেই তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। কিছু ক্ষণের মধ্যে শুরু হয় গণপিটুনি। পাল্টা প্রতিরোধ করলে তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে পর পর দু’রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মোজাম্মেল। গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল। তাঁর দাবি, কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতেই খুন হয়েছেন মোজাম্মেল। তৃণমূল নেতা খুনের প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টার নবগ্রাম বন্ধের ডাকও দিয়েছেন তিনি।
অন্য দিকে, পুত্র রমজান শেখের ভোট প্রচারে বেরিয়েছিলেন দীর্ঘ দিনের কংগ্রেস কর্মী মাহরুল্লাহ। ভোট প্রচারের সময় তাঁকে লক্ষ্য করে পিছন থেকে গুলি চালান দুষ্কৃতীরা। আহত মাহরুল্লাহকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। কংগ্রেসের দাবি, আহত কংগ্রেস কর্মীকে খুন করার চেষ্টা করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। কংগ্রেসের মুখপত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ভোট বানচাল করতে চাইছে তৃণমূল। কংগ্রেস কর্মীরা জীবনের বিনিময়ে হলেও তাদের রুখে দেবে।’’ আহত কংগ্রেস কর্মীকে হাসপাতালে দেখতে শুক্রবার নবগ্রাম যাওয়ার কথা রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর।
এই দুই ঘটনা প্রসঙ্গে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ভিজি সতীশ বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছেছে। দু’টি ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, রক্তপাত দিয়ে শুরু হয়েছিল মুর্শিদাবাদে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব। শেষও হল রক্তপাতে। মনোনয়নের প্রথম দিনে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে খুন হন কংগ্রেস কর্মী ফুল চাঁদ শেখ। যদিও এক পক্ষ দাবি করেছিল, ফুল চাঁদ নির্বাচনী হিংসার শিকার হননি, পারিবারিক অশান্তির জেরেই খুন হন। অন্য পক্ষ দাবি করেছিল, ফুল চাঁদের খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ রাজনীতি জড়িয়ে। মনোনয়নের শেষ দিন খুন হলেন মুর্শিদাবাদের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মোজাম্মেল হক। গুলিবিদ্ধ আরও এক কংগ্রেস কর্মী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy