Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Jayprakash Majumder

Jayprakash Mazumder: ধারে কেনা টিভির টাকা দেবে কে? জয়প্রকাশ তৃণমূলে যেতেই প্রশ্ন উঠছে করিমপুরে

আক্ষেপ শুনে চায়ের দোকানে বসে থাকা এক অশীতিপর বৃদ্ধ বাঁকা হেসে বলে উঠলেন, ‘‘এ বার তো সুদে-আসলে পাবে হে!’’ সঙ্গেসঙ্গেই আড্ডায় হাসির রোল উঠল। আচমকা এক যুবক ফুট কাটলেন, ‘‘তিনি যখন দলেই নেই তখন তোমার টাকা ফেরত দেওয়ারও কোনও প্রশ্নই ওঠে না। ও যাঁরা নিয়েছেন তাঁরাই টাকা শোধ দেবেন।’’

২০১৯ সালে করিমপুরে উপনির্বাচনের প্রচারে জয়প্রকাশ মজুমদার।

২০১৯ সালে করিমপুরে উপনির্বাচনের প্রচারে জয়প্রকাশ মজুমদার। —ফাইল চিত্র।

প্রণয় ঘোষ
করিমপুর শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২২ ১৬:৪৬
Share: Save:

বিজেপি ছেড়ে জয়প্রকাশ মজুমদার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই গুঞ্জনটা চাউর হতে শুরু করেছে করিমপুরে।
‘‘টাকাটা বোধহয় আর পাওয়া হল না! আর দেবেই বা কে?’’ মৃগেন বিশ্বাসের আক্ষেপ মেশানো মন্তব্যটা শুনে চায়ের দোকানে বসে থাকা অশীতিপর বাঁকা হেসে বললেন, ‘‘এ বার তো সুদে-আসলে পাবে হে!’’ সঙ্গে সঙ্গে আড্ডায় হাসির রোল। আচমকা এক যুবক ফুট কাটলেন, ‘‘তিনি যখন দলেই নেই তখন তোমার টাকা ফেরত দেওয়ারও কোনও প্রশ্ন ওঠে না। ও যাঁরা নিয়েছেন, তাঁরাই শোধ দেবেন।’’

আড্ডা কিছুটা গড়াতেই রহস্য ফাঁস হল। ২০১৯ সালের বিধানসভা উপনির্বাচনে করিমপুরে বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছিলেন জয়প্রকাশ। বিজেপি সূত্রে খবর, সেই নির্বাচনের ফল দলীয় কার্যালয়ে বসে সরাসরি দেখার জন্য একটি ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি সেট কিনেছিলেন জয়প্রকাশ এবং তাঁর পুত্র যশ মজুমদার। স্থানীয় বিজেপি কর্মী মৃগেনের দাবি, করিমপুর বাজারের একটি বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকান থেকে কেনা হয়েছিল ওই টিভিটি। তাঁর আরও দাবি, ওই টিভি-র টাকা মেটানো হয়নি। টাকা দেওয়ার ‘জিম্মাদার’ ছিলেন তিনি নিজেই। তাই এখন ফাঁপরে পড়েছেন মৃগেন। টিভি-র দোকানে প্রায় তিন বছর ধরে বাকি ১৮ হাজার টাকা! আরও একটি বিধানসভা নির্বাচন পেরিয়ে পদ্মের জয়প্রকাশ এখন জোড়াফুল শিবিরে। মৃগেনের প্রশ্ন, ‘‘ওই ঋণ এখন কে শোধ দেবে?’’

মৃগেন নিজেকে ‘জিম্মা’মুক্ত করার নানাবিধ চেষ্টা করেছেন। দলের সকলের সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দলের জেলা থেকে রাজ্য স্তরের নেতাদের বিষয়টি জানিয়ছিলাম। তবে সুরাহা হয়নি। বেশ কয়েক বার ব্যক্তিগত ভাবে জয়প্রকাশবাবুর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।’’ মৃগেনের দাবি, ‘‘বিধানসভা নির্বাচন শেষ হতেই দলীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্রের সঙ্গে ওই টিভিটিও কলকাতা নিয়ে চলে গিয়েছেন জয়প্রকাশ এবং তাঁর পুত্র।’’ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের যুক্তি, টিভি সেটই যখন ‘বেপাত্তা’ তখন দাম দেওয়ার প্রশ্ন নেই। জিনিসটি দলীয় দফতরে থাকতে তাঁরা নিশ্চয়ই দাম দিতেন। কিন্তু যুক্তি আর পাল্টা যুক্তির বেড়াজালে পড়ে মৃগেন এখন অথৈ জলে।

মৃগেনের অভিযোগ যদিও উড়িয়ে দিয়েছেন জয়প্রকাশ। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতির কথায়, ‘‘২০১৯ সালে ভোট হয়েছিল। এখন ২০২২ সালে এসে এই সব কথা উঠছে। আমি দলবদলের পর এই সব কথা মনে পড়ছে? আমি কোনও টিভিই কিনিনি।’’

সব শুনে চায়ের দোকানের আড্ডায় থাকা করিমপুরের এক প্রৌঢ় ব্যবসায়ীর মন্তব্য, ‘‘সব ঋণ শোধ দেওয়া যায় না। সব ঋণ শোধ দিতেও নেই।’’ আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে মৃগেনের স্বগতোক্তি, ‘‘ভবিষ্যতে রাজনীতি করলেও আর কোনও দিন কোনও কিছুর মধ্যস্থতা করব না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jayprakash Majumder TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy