মঞ্চে মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের উপস্থিতিতে তৃণমূল নেতার মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নিজস্ব ছবি।
মঞ্চে বসে রাজ্যের মন্ত্রী। রয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক এবং তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও। সেই সভামঞ্চ থেকেই আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের ঘর থেকে বেরোতে না দেওয়ার নিদান দিলেন শাসকদলের ব্লক সভাপতি! ‘গাজোয়ারি’ করে পঞ্চায়েত ভোটে জেতা যাবে না বলে দলীয় নেতা-কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রেক্ষিতে নদিয়ার চোপড়ার ব্লক তৃণমূল সভাপতি শুকদেব ব্রহ্মের ওই মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তা আরও জোরালো হয়েছে ওই মঞ্চেই রাজ্যের বিজ্ঞান ও জৈব প্রযুক্তি মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমানের উপস্থিতির কারণে।
এই মন্তব্য নিয়ে শাসকদলকে একযোগে আক্রমণ করেছে বিজেপি এবং সিপিএম। যদিও শুকদেবের দাবি, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ব্লক সভাপতির সাফাই, ‘‘আমি বোঝাতে চেয়েছিলাম, ওই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বামেরা সন্ত্রাস করে এসেছে। এ বার পুনরায় সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা হলে মানুষই গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।’’ শুকদেবের মন্তব্যের অপব্যাখ্যা হয়েছে বলে দাবি করে রুকবানুরও বলেন, ‘‘আমি ওঁর বক্তব্য ভাল করে শুনেছি। শুকদেব বলতে চেয়েছিলেন, যদি সন্ত্রাস হয়, তবে তার প্রতিরোধ হবে।’’ কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি কল্লোল খাঁ বলেন, ‘‘ভাষণ দেওয়ার উত্তেজনায় অনেক সময় মুখ ফস্কে অনেক কিছু বেরিয়ে পড়ে। দেখতে হবে উদ্দেশ্য খারাপ ছিল কি না।’’
শনিবার বিকেলে চাপড়া নতুন বাস স্ট্যান্ডে জনসভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেখানে শুকদেব বলেন, ‘‘৩৬৫ দিন তৃণমূল মানুষের কাজ করবে আর সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি এসে শান্ত চাপড়াকে অশান্ত করবে, আমরা এ সব মানব না। ভোটের দিন বিরোধীরা যাতে ঘর থেকে বাইরে বেরোতে না পারে, সেটা দেখতে হবে। ওঁদের ঘরে ঢুকিয়ে দেব। বের হতে দেব না।’’
স্থানীয় সূত্রে দাবি, শুকদেবের বিরুদ্ধে আগেও নানাবিধ অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। মাস কয়েক আগেই ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এক যুবককে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ‘ভোট-পরবর্তী হিংসা’র তদন্ত করতে হৃদয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল এলে তাদের গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগও উঠেছিল শুকদেবের বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে বেদবেরিয়া গ্রামে সিপিএম নেতা আসাদুল শেখকে খুনের অভিযোগ রয়েছে।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে এ বার রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘যেমন ঝাড়, তেমনি বাঁশ! তৃণমূল তো সন্ত্রাস করেই টিকে আছে। এ আর নতুন কী!’’ সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে কটাক্ষ করে বলেন, শুক্রবার দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বিরাট জনসভা দেখে আতঙ্কে ভুগছে শাসকদল। সুমিতের কথায়, ‘‘বামেদের জনপ্লাবন দেখে মাথা ঘুরে গেছে তৃণমূলের! ওরা বুঝতে পারছে, তৃণমূলের পায়ের নীচের জমি আলগা হচ্ছে। বামেদের সভায় ভিড় বাড়ছে। তাই সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy