প্রতীকী চিত্র।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ সভাধিপতি পদে বসতে আগ্রহী সদস্যদের কাছ থেকে বায়োডাটা চাইলেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। চলতি মাসের ১৬ তারিখ ওই দুই পদের নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে চলতি সপ্তাহের দশ তারিখের মধ্যে আগ্রহী ব্যক্তিদের বায়োডাটা জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
সেই সঙ্গে তৃণমূল ত্যাগী দুই জেলা পরিষদ সদস্যর সদস্যপদ খারিজ হল। ৩ জুন তাঁদের সদস্যপদ খারিজের নির্দেশ দিয়েছেন মালদহের ডিভিশনাল কমিশনার। সূত্রের খবর, খারিজ হওয়া ওই দুই সদস্য হলেন দ্রোপদী ঘোষ ও নাসির শেখ। সূত্রের খবর, বেলডাঙার তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য দ্রোপদী ঘোষ বিধানসভা নির্বাচনের আগে কলকাতায় বিজেপির অফিসে গিয়ে সেই দলে নাম লেখান। অন্যদিকে রঘুনাথগঞ্জের তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য নাসির শেখ দল ছেড়ে বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস অফিসে গিয়ে নাম লেখান। পরে তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে পরাজিত হন। নির্বাচন চলাকালীন জেলা পরিষদের তৃণমূলের দলনেতা তজিমুদ্দিন খান মালদহের ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁদের সদস্যপদ খারিজের আবেদন জানান। সম্প্রতি তাঁদের ভার্চুয়াল শুনানিও হয়। এর পরে মালদহের ডিভিশনাল কমিশনার গোলাম আলি আনসারি তাঁদের সদস্যপদ খারিজের নির্দেশ দেন।
সূত্রের খবর, জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল ওরফে মধুর ব্যক্তিত্ব পছন্দ ছিল না জেলার কোনও নেতার। রাজ্য নেতৃত্বও একপ্রকার বাধ্য হয়েই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ মধুকে মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু পদে বসে তাঁর নামে দলেরই একাংশ নেতা ছাড়াও জেলা পরিষদের অধিকাংশ সদস্যের নানান অভিযোগে জেরবার হয়েছিল তৃণমূল ভবনও। তাই মধুর দলত্যাগ একপ্রকার নিশ্চিত হতেই তাকে ওই পদ থেকে বহিষ্কার করে একদিকে যেমন ভারমুক্ত হয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা তেমনি জেলা পরিষদের ভাবমূর্তিও বদলে ফেলার চেষ্টা শুরু হয়েছিল সেই সময় থেকেই। বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্য পাওয়ার পর তৃণমূল নেতারা সংগঠন সহ সর্বস্তরেই স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরবার চেষ্টা করছেন। আর তাই নতুন করে জেলা সভাধিপতির পদে কাউকে বসানোর আগে সেই সদস্যের ভাবমূর্তির দিকেও নজর দিতে চাইছেন তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির পাশাপাশি শিক্ষিত ও সহনশীল ব্যক্তিত্বকেই ওই দুই পদে বসাতে চাইছেন তাঁরা।
কিন্তু দলের ৬৫ জন জেলা পরিষদের সদস্যদের কোনও একজনের মধ্যে সবক’টি গুণ কার আছে তা বাছতে হন্যে হচ্ছেন তৃণমূলের কোর কমিটির নেতারা। তারই সমাধান সূত্র খু্ঁজতে সোমবার জেলার জোড়া মন্ত্রী সহ কোর কমিটির প্রায় সব সদস্যই সমবায়িকার পার্বণ অনুষ্ঠান বাড়িতে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে কোনও একজন বা দু’জন ব্যক্তি নয় জেলা পরিষদের সকল সদস্যদের কাছেই ওই পদে বসতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছ থেকে বায়োডাটা চাওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। সেক্ষেত্রে ইচ্ছুক ব্যক্তির দেওয়া জীবনপঞ্জী পড়ে একলপ্তে ওই ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও জানা যাবে। আর তার সঙ্গে দলের প্রতি ওই ব্যক্তির আনুগত্য কতখানি জেলা নেতৃত্বের দেওয়া সেই তথ্যও বায়োডাটার সঙ্গে জুড়ে রাজ্য নেতাদের কাছে পাঠানো হবে দশ তারিখের পর। বিশেষ সূত্রের দাবি, জেলা সভাধিপতি জেলার প্রধান মুখ হওয়ায় সেই পদে ‘মুখরা’ কাউকে যেমন জেলা নেতারা চাইছেন না তেমনি নিজস্ব গোষ্ঠী নিয়ে চলতে পারে বলে মনে হলে সেই সব ব্যক্তিত্বদের এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছেন তাঁরা।
জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, “বায়োডাটা আমরা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠাবো। তাদের সঙ্গে আলোচনার সাপেক্ষেই ঠিক হবে জেলা পরিষদের পরবর্তী সভাধিপতি ও সহকারি সভাধিপতি পদে কে বসবেন।”
আর সেই কারণে চলতি মাসের ১৬ তারিখ জেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ দুই পদের নির্বাচনের আগের দিন ১৫ তারিখ সন্ধ্যা ছ’টায় জেলার সব বিধায়ক, জেলা পরিষদের সব সদস্যদের নিয়ে জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে একটি আলোচনা সভাও ডাকা হয়েছে বলে জানান তাহের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy