Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bidhan Chandra Krishi Viswavidyalaya

বাইরের নেতাদের উৎসাহ কেন, প্রশ্ন বিসিকেভি-তে

বিসিকেভি-র অধ্যাপকদের অনেকেই মনে করছেন, শাসক দলের কোনও কোনও নেতা নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে মরিয়া। তাঁরাই কিছু পড়ুয়াকে সামনে ঠেলে দিয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে চাইছেন।

সাংবাদিক বৈঠকে বিসিকেভি-র উপাচার্য গৌতম সাহা।

সাংবাদিক বৈঠকে বিসিকেভি-র উপাচার্য গৌতম সাহা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হরিণঘাটা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪০
Share: Save:

বহিরাগতদের হস্তক্ষেপের কারণেই বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিসিকেভি) অচলাবস্থা কাটতে চাইছে না বলে মনে করছেন শিক্ষক-পড়ুয়াদের বড় অংশ। এমনটা চলতে থাকলে আগামী দিনে পরিস্থিতি জটিলতর হবে বলেও তাঁদের আশঙ্কা।

মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিসিকেভি-র উপাচার্য গৌতম সাহা বলেন, “আমরা পড়ুয়াদের সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকছি। তাঁরা কোথায় থাকবেন, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়। বাইরের লোক যদি তাতে মাথা গলায় তা হলেই অসুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিরক্ষার আলোচনার জন্য যে ধরনের পরিবেশ দরকার তার উল্টোটা যদি হয়, তা হলে অসুবিধা হবেই।”

বিসিকেভি-র অধ্যাপকদের অনেকেই মনে করছেন, শাসক দলের কোনও কোনও নেতা নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে মরিয়া। তাঁরাই কিছু পড়ুয়াকে সামনে ঠেলে দিয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে চাইছেন। আর সেই কারণেই কলেজের ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ লেগেই আছে। ফলে, পঠনপাঠন শিকেয় উঠছে।

হরিণঘাটার এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসক দলের কর্মী-অধ্যাপকদের দাপট অনেক দিনের। পরে শিক্ষক-কর্মীদের একটা বড় অংশ ‘যৌথ মঞ্চ’ গঠন করে। সেই মঞ্চ যথেষ্ট প্রভাবশালী। এর উপর রাজ্যপাল উপাচার্য পদে গৌতম সাহাকে নিয়োগের পর যৌথ মঞ্চের বাইরে জনা কয়েক তৃণমূলপন্থী শিক্ষকের সঙ্গে তাঁর বিরোধ বাধে। অনৈতিক কাজের অভিযোগে তাঁদের এক জনকে সাসপেন্ড এবং এক জনকে বদলি করেন কর্তৃপক্ষ। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়।

শিক্ষক-ছাত্রদের অনেকেরই দাবি, এর মধ্যে বাইরের কিছু টিএমসিপি নেতার ইন্ধনে ছাত্রাবাসের দুই দল ছাত্রের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। তার জেরে একাধিক বার ফটক আটকে পঠনপান বন্ধ রাখা হয়। আবার ‘মধ্যস্ততাকারী’ হিসাবে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় স্থানীয় পুরপ্রধান, এক পুরপ্রতিনিধি তথা টিএমসিপি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতিকে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আলোচনায় কেন বাইরের রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত থাকবেন? উপাচার্য গৌতম সাহার ব্যাখ্যা, “তালাবন্ধের পর ছাত্রেরা কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের কথা শুনতে চাইছিল না। তাদের বোঝাতেই পুরপ্রধানকে ডেকেছিলাম।” কল্যাণী মহকুমাশাসক অভিজিৎ সামন্ত বলেন, “সমস্যা সমাধানের জন্য জনপ্রতিনিধি হিসাবে কেবল পুরপ্রধানকেই উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করেছিলাম। তাঁর সঙ্গে এক পুরপ্রতিনিধিও আসেন।”

হরিণঘাটার পুরপ্রধান, তৃণমূলের দেবাশিস বসু বলেন, “আমি নিজে থেকে যাইনি। আমাকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু আলোচনায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, উপাচার্য তা না মানাতেই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।” গোটা পর্বে আগাগোড়া ‘অতিসক্রিয়’, জেলা টিএমসিপির প্রাক্তন সভাপতি রাকেশ পাড়ুইয়ের ‘ভূমিকা’ ও ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন তুলছেন দলেরই অনেকে। মঙ্গলবার রাকেশ দাবি করেন, “উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে বিজেপির কার্যালয় বানাতে চাইছেন। তার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।” উপাচার্য বলেন, “আমরা মহকুমাশাসককে বলেছি, ছাত্রদের নিয়ে আবার বসব। কিন্তু বাইরের লোক যেন মাথা না গলায়।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy