ষষ্ঠীতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে খাদ্যেৎসব। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।
কেউ বানিয়ে এনেছেন পিঠেপুলি, কেউ আবার পায়েস। শীতের মিঠে রোদে কেবল মিষ্টি খাবার নয়, উল্টো দিকে স্টলে দেখা মিলল ফুচকা, ঘুগনি, পরোটারও। এখানেই শেষ নয়, খুদে পড়ুয়ারা কেউ বাড়ির কলাগাছ থেকে পাকা কলা নিয়ে হাজির হয়েছে স্কুল প্রাঙ্গণে, কেউ আবার এনেছে পেয়ারা। সোমবার ডোমকলের ষষ্ঠীতলা হাই স্কুলে ছাত্র সপ্তাহের শেষ দিনে খাদ্যোৎসব (ফুড ফেস্টিভাল) আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে তাক লাগিয়ে দিয়েছে প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল পড়ুয়ারা। শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে পিকনিকের আনন্দে মেতে উঠেছিল গোটা স্কুল। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ছাত্র-ছাত্রীদের এত আনন্দ করতে দেখে তাঁরাও আপ্লুত।
ডোমকলের ষষ্ঠীতলা হাই স্কুলে প্রায় বারোশো ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করে। ছাত্র সপ্তাহে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে সপ্তাহের শেষ দিন একটু অন্য রকমের আনন্দে ছাত্রদের মেতে ওঠার সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সরকারি নির্দেশিকার তালিকায় খাদ্য মেলা করা যেতে পারে বলে জানানো হয়েছিল। তা দেখেই শিক্ষক শিক্ষিকাদের মনে হয়েছিল খাদ্যোৎসব আয়োজন নিয়ে। আর যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই নিজে হাতে খাবার তৈরি করে এ দিন হাজির হয়েছিল স্কুলে। ১৫টি স্টল তৈরি করে সেখানে সেই খাবার বিক্রি করেছে তারা। ক্রেতা কখনও শিক্ষক, কখনও সহপাঠী বন্ধুরা। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সেবিকা খাতুন, আজমিরা খাতুন ও সুরাইয়া খাতুন ২০০ টাকা খরচ করে চাউমিন তৈরি করেছিল নিজেরা। দু’ ঘণ্টার খাদ্য মেলায় ৩৭৫ টাকা লাভ হয়েছে তাদের স্টলে। যা দেখে বেজায় খুশি পড়ুয়ারা। হাসনেহেনা, মাইশা, শিখা খাতুন স্টল দিয়েছিল ঘুগনি, ঁপরোটাঁর। মেলা শেষে মুচকি হাসি তাদের মুখেও। নিজের হাতে ঝালমুড়ি, পেয়ারা, ফুচকা বিক্রি করে দিনের শেষে লাভ দেখে হাসি ফুটেছে খুদে পড়ুয়াদের। শিক্ষিকা সুমনা সরকার গাজর, পেঁপের হালুয়া, পিঠেপুলির স্টল দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘একেবারে অভিনব এই উদ্যোগে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি আমরাও ভীষণ খুশি। লেখাপড়ার পাশাপাশি খাবার তৈরি এবং তা বিক্রি করে যে স্বনির্ভর হওয়া যায়, সেটা একেবারে হাতে-কলমে বুঝে গেল পড়ুয়ারা। আমরাও বুঝতে পারলাম লেখাপড়ার পাশাপাশি এমন উদ্যোগের কতটা প্রয়োজনীয়তা আছে।’’ ময়ূরী মন্ডল এবং আকাশী খাতুন নামে ২ পড়ুয়া বাড়ি থেকে গাছের পাকা কলা এনে তা বিক্রি করেই নতুন স্বাদের খাবার চেটেপুটে খেয়েছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ মহম্মদ গুল বলছেন, "প্রত্যন্ত এলাকায় স্কুল আমাদের। এই এলাকায় কখনও খাদ্যমেলা হয় না। সেখানে প্রথম এমন উদ্যোগ নিতে গিয়ে সাতপাঁচ ভাবতে হয়েছিল আমাদের। কিন্তু আজকে মেলার আয়োজনের পর বুঝতে পারলাম আমাদের পড়ুয়াদের মধ্যেও অনেক প্রতিভা লুকিয়ে আছে। ওরা নানা ভাবে স্বনির্ভর হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy