Advertisement
E-Paper

নার্সিংহোমের পরিকাঠামোয় নজরদারি

বহরমপুর শহর এবং শহর লাগোয়া এলাকায় যদি এমন ধরনের নার্সিংহোম গজিয়ে ওঠে, তবে গ্রামীণ এলাকা বিশেষত ব্লক সদর বা মহকুমা সদরগুলিতে তো এমন নার্সিংহোম ভূরি ভূরি গজিয়ে উঠবে।

স্বাস্থ্য ভবন।

স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ০৯:৫১
Share
Save

পরিকাঠামো ছাড়াই যেখানে সেখানে গজিয়ে উঠেছে নার্সিংহোম বা বেসরকারি হাসপাতাল। এমনই অভিযোগ উঠছে জেলা জুড়ে। অভিযোগ, এই সব জায়গায় না আছে ২৪ ঘণ্টার জন্য ‘রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার’ (আরএমও), না আছে নার্সিং স্টাফ। এমনকি, বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাও নেই বলে অভিযোগ। একাধিক নার্সিংহোমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক কথায়, পরিকাঠামো ছাড়াই সে সব নার্সিংহোমে চিকিৎসা চলছে।

দিন কয়েক আগে বহরমপুরের এমন এক নার্সিংহোমে হানা দিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর রোগী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে না কেন, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস (শো-কজ়) পাঠান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

প্রশ্ন উঠছে, বহরমপুর শহর এবং শহর লাগোয়া এলাকায় যদি এমন ধরনের নার্সিংহোম গজিয়ে ওঠে, তবে গ্রামীণ এলাকা বিশেষত ব্লক সদর বা মহকুমা সদরগুলিতে তো এমন নার্সিংহোম ভূরি ভূরি গজিয়ে উঠবে। এ নিয়ে নজরদারি বাড়ানোর দাবি উঠেছে। বহরমপুরের বাসিন্দা সুরজিৎ গনাই বলেন, ‘‘আমরা উন্নততর পরিষেবা পেতে টাকা খরচ করে নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে যাই। তা হলে সেখানে গিয়ে পরিকাঠামো মিলবে না কেন? আমরা চাই, স্বাস্থ্য দফতর এ দিকে নজর দিক।’’

তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ স্যানাল বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলিতেও আমরা নজরদারি চালাই। নিয়ম মেনে নার্সিংহোম বা বেসরকারি হাসপাতাল না চললে আমরা তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করি। ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রুলস মেনে সে সব না চললে পদক্ষেপ করা হয়।’’

প্রোগ্রেসিভ নার্সিংহোম অ্যান্ড হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের মুর্শিদাবাদের জেলার চেয়ারম্যান শ্যাম অধিকারী বলেন, ‘‘ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী যে যে পরিকাঠামো থাকা দরকার, তা মেনেই পরিকাঠামো করার জন্য আমরা নার্সিংহোম মালিকদের বলেছি। নিয়ম না মানলে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব না, সে কথাও জানানো হয়েছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৫টি শয্যা পিছু ২৪ ঘণ্টার জন্য এক জন আরএমও থাকার কথা। কিন্তু বহু নার্সিংহোম সেই নিয়ম মানে না। শুধু তাই নয়, ২৪ ঘণ্টার আরএমও থাকেন না। রোগী এলে ডাক্তারকে ডাকা (অনকল আরএমও) হয়। দিন কয়েক আগে বহরমপুরে যে নার্সিংহোমে সিএমওএইচ-সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা হানা দিয়েছিলেন, সেখানে সব সময়ের জন্য আরএমও থাকেন না বলে সে দিন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছিলেন। এ ছাড়াও বহু নার্সিংহোমে ২৪ ঘণ্টার জন্য যে সংখ্যাক আরএমও থাকার কথা, তা থাকে না বলে অভিযোগ। আবার সাধারণ শয্যার ক্ষেত্রে পাঁচটি শয্যা পিছু এক জন প্রশিক্ষিত নার্সিং স্টাফ থাকার কথা এবং আইসিইউয়ের ক্ষেত্রে তিনটি শয্যা পিছু এক জন প্রশিক্ষিত নার্সিং স্টাফ থাকার কথা। বহু নার্সিংহোমে এই নিয়মও মানা হয় না বলে অভিযোগ। আবার প্রতিটি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্যের (বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট) জন্য ঘর থাকার নিয়ম। সেই সঙ্গে ওয়ার্ডগুলিতে বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্টের জন্য আলাদা আলাদা বালতি রাখার কথা। সে সব ঠিক মতো মানা হয় না বলে অভিযোগ। পরিকাঠামোর আরও নানা অভাব রয়েছে। তবে এত পরিকাঠামোর অভাব থাকলেও স্বাস্থ্য দফতর আরও কড়া কেন হচ্ছে না, সে প্রশ্ন উঠেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Berhampore

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}