Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sagardighi

জলে ভাসছে পথ, প্রশাসন তবু নির্বিকার

গত তিন সপ্তাহে দুর্ঘটনায় তিন জনের পা ভেঙেছে, একজনের হাত। 

শীতেও ভাসছে রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।

শীতেও ভাসছে রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৩০
Share: Save:

ভরা শীতেও বেহাল রাস্তা নিয়ে দুর্ভোগের শেষ নেই সাগরদিঘির দিয়ারা গ্রামের বাসিন্দাদের। অভিযোগ, পলসণ্ডা থেকে দিয়ারা হয়ে বাড়ালা স্টেশন পর্যন্ত সাত কিমি পিচের রাস্তার পুরোটাই বেহাল। তবে সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থা দিয়ারা গ্রামে ঢোকার আগে প্রায় ৫০০ মিটার অংশের। প্রতিদিনই সেখানে মোটরবাইক, লছিমন, অটো দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে। গত তিন সপ্তাহে দুর্ঘটনায় তিন জনের পা ভেঙেছে, একজনের হাত।

লছিমন চালক জাফর শেখের কথায়, ‘‘ওই রাস্তায় মালবোঝাই ভ্যান নিয়ে যেতে গিয়ে বহুবার বিপদে পড়েছি। দু’চারজন লোক কোনওরকমে ঠেলে-ঠুলে রাস্তার একদিকে কাত হয়ে পড়া ভ্যান তুলেছি।’’ কিন্তু কেন এই অবস্থা? গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই রাস্তার পাশেই রয়েছে একটি ট্যাপ কল। পঞ্চায়েত থেকে মোটর বসিয়ে জল তোলা হয় সেখানে। ট্যাপ দিয়ে ২৪ ঘণ্টাই জল পড়ে যায়। ওই এলাকার কয়েকটি বাড়ির নিকাশির জল ও ট্যাপের জল একটি-ই নালা দিয়ে বেরিয়ে যেত ফাঁকা জমিতে। ফলে রাস্তায় জল জমত না। কিন্তু মাসকয়েক ধরে এই নিকাশির জল যাওয়ার নালামুখ বন্ধ। অভিযোগ, একদল জমি মালিক সেই নিকাশি নালা মাটি আটকে বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে প্রায় ছ’মাস ধরে জল জমছে ওই রাস্তায়। জমা জলে পিচের আস্তরণও উঠে যাচ্ছে। বসে যাচ্ছে রাস্তাও।

ওই গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাসনাত মল্লিক বলেন, ‘বহুবার পঞ্চায়েতকে বলেছি সমস্যা সমাধানের জন্য। কোনও লাভ হয়নি। প্রতিদিনই দুর্ঘটনায় হাত, পা ভাঙছে কারও না কারও। এই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে পলসণ্ডায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ওঠা যায়। গোটা রাস্তাটাই বেহাল। তবে গ্রামে ঢোকার মুখে ৫০০ মিটার অংশ দিয়ে যাওয়া ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।’’

স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক আতাউল হক বলছেন, ‘‘করোনার জেরে স্কুল বন্ধ। তাই পড়ুয়াদের যাতায়াত করতে হচ্ছে না। তা না হলে কত পড়ুয়া যে দুর্ঘটনার মুখে পড়ত, তার ইয়ত্তা নেই।’’ ওই গ্রামেরই একদল যুবক দিনকয়েক আগে রাস্তার জমা জল বের করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু জমির মালিকদের বাধায় তাঁরা পিছু হটেন। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি শুরু হলে সাগরদিঘি থানার পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। বিবাদের মীমাংসা করে দেওয়ার পাশাপাশি জমি মালিকদের নিকাশি নালা কেটে দিতে বলে যায় পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, রাস্তা লাগোয়া বাড়ির মালিকদের রাস্তায় জল ফেলা বন্ধ করতে বলে। কিন্তু পুলিশের হস্তক্ষেপেও অবস্থার বদল ঘটেনি।

এ নিয়ে সাহাপুর বাড়ালা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নেবুল মার্জিত বলেন, ‘‘রাস্তার অবস্থা বিপজ্জনক। কিন্তু রাস্তা সারানোর মতো অর্থ আমাদের হাতে নেই। এখনকার নিয়মে নির্দিষ্ট প্ল্যান এস্টিমেট জমা দিয়ে অগ্রিম অনুমোদন ছাড়া পঞ্চায়েতের কাজ করা যাবে না। পঞ্চায়েতের নিজস্ব তেমন তহবিলও নেই যে রাস্তাটি সারাই করব।’’ এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য ভারতী হাঁসদা বলছেন, ‘‘আমায় ওই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। রাস্তার দুরবস্থার কথা জেলা পরিষদে বলা হয়েছে। বছরে এলাকার জন্য ৫০০ মিটার রাস্তা তৈরির বরাদ্দও আসে না। তাই কিছুই করা যাচ্ছে না।’’

এলাকার প্রাক্তন প্রধান সিপিএমের আবুল হাসান আজাদের কটাক্ষ, ‘‘দুয়ারে সরকার, পাড়ায় পাড়ায় সমাধান কর্মসূচি নিচ্ছে রাজ্য সরকার। সাগরদিঘির প্রশাসনও তার শরিক। তাদের কি নজরে পড়ে না রাস্তাটির দুরবস্থা!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sagardighi Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy