প্রতীকী চিত্র
সাহেবনগর গুলি-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শামিম আখতারুজ্জামান ওরফে মিল্টনকে অবশেষে গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে জলঙ্গির ওই প্রান্তিক গ্রামে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে নিরীহ দুই গ্রামবাসীকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত, তৃণমূলের জলঙ্গি ব্লক সভাপতি তহিরুদ্দিন মণ্ডল এখনও ফেরার। পুলিশ অবশ্য এ দিনও চেনা সুরে আশ্বাস দিয়েছে, ‘খোঁজ চলেছে, অভিযুক্তেরা সকলেই গ্রেফতার হবে।’
সাহেবনগর কাণ্ড নিয়ে শুক্রবার উত্তাল হয়েছিল বিধানসভা। মু্খ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে তামাম বিরোধী দলগুলি থেকে জলঙ্গির আম-বাসিন্দা— সকলেই প্রায় এক সুরে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, শাসক দলের হাত মাথায় রয়েছে বলেই তহির এখনও পুলিশের ‘নাগালের’ বাইরে। বিধানসভায় বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর দাবি ছিল, ‘‘সবস্বতী পুজোয় বনধ বলেই শাস্তি স্বরূপ গুলি চালাতে হবে!’’ বাম নেতাদেরও কটাক্ষ ছিল, ‘‘এত দিনে বোঝা গেল কেন গ্রেফতার হচ্ছে না তহিরুদ্দিন!’’
এ দিন, মিল্টন গ্রেফতারের পরে বিরোধীরা ফের প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘তা হলে কি সেই চাপে পড়েই শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হল মিল্টনকে!’’ জেলার পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, ‘‘শনিবার ভোরবেলা বহরমপুরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শামিম আক্তারুজ্জামান ওরফে মিল্টনকে।’’ তবে জেলা পুলিশের একটি সূত্র বলছে, আদতে তাকে কলকাতার নিউটাউন এলাকা থেকে গ্রেফতার করার পর বহরমপুরে আনা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাকে জেরা করে ওই ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা করবে পুলিশ। এ দিন তাকে বহরমপুরের আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
কিন্তু তহির কোথায়? পুলিশের এক কর্তা জানান, নিউটাউন এলাকার একটি শপিং মলে, সিসি টিভি ক্যামেরায় তহিরকেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু মিল্টনকে গ্রেফতারের পরেই সে গা ঢাকা দিয়েছে। বিরোধীদের অনেকেরই অবশ্য পাল্টা দাবি, নিউটাউনের কোনও ফ্ল্যাটে নিশ্চয় তহির-মিল্টন এক সঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে ছিল। পুলিশ মিল্টনকে ধরলেও ‘ছাড়’ দিয়েছে তহিরকে।
সাহেবনগরের ঘটনায়, ওই দু’জনের দিকেই অভিযোগের তির ছিল গ্রামবাসীদের। ঘটনার পর ১৮ দিন কেটে গেলেও তহিরের কোনও খোঁজ কেন পাচ্ছে না পুলিশ— তা নিয়ে এ দিনও এলাকায় মিছিল হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যাঁদের বনধ ঘিরে ওই গুলি কাণ্ড, সেই নাগরিক মঞ্চের সদস্যদের দাবি, দেরিতে হলেও মিল্টনের গ্রেফতারে আমরা খুশি, কিন্তু তহিরকে আড়াল করতেই পুলিশ আপাতত মিল্টনকে ধরে পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছে।
সীমান্তের ওই জনপদে সাহেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামী মিল্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, বন্ধের দিন সালাউদ্দিন শেখকে নিজে হাতেই গুলি করেছিল মিল্টন। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিল সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy