Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Road on Bhairav River

ভৈরব নদীর মধ্যেই রাস্তা

১৪৫ মিটার লম্বা এই রাস্তার জন্য ভবিষ্যতে ভৈরবের গতিপথ রুদ্ধ হবে বলে আশঙ্কা। ঘোর বর্ষায় ভৈরবে জল বাড়লে সেই রাস্তা ধুয়েমুছেও যাবে বলে স্থানীয়দের ধারণা।

নদীর মধ্যেই ঢালাই রাস্তা। ইসলামপুরের গোপীনাথপুর ঘাটে।

নদীর মধ্যেই ঢালাই রাস্তা। ইসলামপুরের গোপীনাথপুর ঘাটে। নিজস্ব চিত্র।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
রানিনগর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪ ০৯:৫৯
Share: Save:

‘ভৈরব-জলঙ্গি’ নদীকে বাঁচাতে বছর চারেক আগে উদ্যোগী হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ভৈরব-জলঙ্গি বাঁচাও’। এ বারে সেই ভৈরবের বুকে কংক্রিটের রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠল মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি রানিনগর ও রানিতলা থানার মাঝে হরিরামপুর ফেরিঘাটে ভৈরবের বুকে কংক্রিটের ঢালাই রাস্তা তৈরি করেছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ। যা নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। ১৪৫ মিটার লম্বা এই রাস্তার জন্য ভবিষ্যতে ভৈরবের গতিপথ রুদ্ধ হবে বলে আশঙ্কা। ঘোর বর্ষায় ভৈরবে জল বাড়লে সেই রাস্তা ধুয়েমুছেও যাবে বলে স্থানীয়দের ধারণা।

তা হলে নদীর বুকে কেন এই রাস্তা?

যদিও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘খরার মরশুমে নদীতে জল থাকে না। সেই সময় সাধারণ মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। সে কথা ভেবে সেখানে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তবে গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।’’

যদিও নদী বিশেষজ্ঞ সুপ্রতিম কর্মকার বলেন, ‘‘নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে কখনও নষ্ট করা যায় না। নদীর খাত কতটা সেটা বোঝা যায় বর্ষাকালে যতটা জলসীমা থাকে তার উপরে। এ ভাবে রাস্তা নির্মাণ করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশকে অমান্য করা হয়েছে।’’ ভৈরবকে বাঁচানোর দাবিতে কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করছে ইসলামপুরের একটি সংস্থা। ওই সংস্থার কর্মকর্তা ধীমান দাস বলেন, ‘‘একটি সরকারি সংস্থা কী ভাবে এই ধরনের বেআইনি কাজ করল, তা ভেবে পাচ্ছি না। যাঁরা নদীর বুকে রাস্তা নির্মাণ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে অভিযোগ জানাব।’’

সূত্রের খবর, ভৈরবের দু’দিকে সাড়ে তিন মিটার চওড়া এবং ১৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তা তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা। বাসিন্দাদের দাবি, ‘‘এমন অবৈধ রাস্তা চাই না। আমরা হরিরামপুরে সেতু চাই।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘‘যখন নদী বাঁচানোর কথা উঠছে নানা মহলে, সেই সময়ে জেলা পরিষদের মতো একটি সংস্থা নদীর বুকে ঢালাই রাস্তা করছে। যা চরম ভাবে বেআইনি। এর সঙ্গে প্রশাসনের একটা অংশ জড়িয়ে আছে। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হোক।’’

স্থানীয়রা জানান, ভগবানগোলা ২ ব্লকে ভৈরবের উৎসমুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই নদ আজ মৃতপ্রায়। কিন্তু বর্ষাকালে তার রূপ বোঝা যায়। এই পরিস্থিতিতে ২০২০ সালে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন ‘ভৈরব-জলঙ্গি’ বাঁচাও কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Raninagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy