প্রতীকী ছবি।
খেয়া পারাপার বন্ধ হলেই সুনসান হয়ে যায় ভাগীরথীর পাড়। নিশুতি রাতে নৌকা বেঁধে বাড়ির পথ ধরেন মাঝিরা। কিছুক্ষণ পরেই রাতের নৈঃশব্দ্য খানখান করে নদীর পাড়ে ঝপাঝপ কোপ পড়ে কোদালের। ট্রলিতে মাটি বোঝাই হয়ে গেলে গর্জে ওঠে একের পর এক ট্রাক্টর। তার পরে সারিবদ্ধ ভাবে সেই ট্রাক্টর ফিরে যায় চেনা গন্তব্যে। শক্তিপুরের রামনগর, বিদুপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাগীরথীর পশ্চিম পাড় নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত। কৃষিজমি থেকে বসতবাড়ি সবই নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। অথচ ওই এলাকাতেই মাটি চুরির ঘটনা ঘটছে। প্রশাসন সব জেনেও চুপ।
মাটি-লুটের বিষয়ে এলাকার লোকজন প্রশাসনকে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না বলেই অভিযোগ। নদী পাড়ের পাশের জমি থেকেও মাটি চুরি হচ্ছে। সেই জমির মালিক পলাশি সুগার মিল কর্তৃপক্ষ। মিলের ফার্ম ম্যানেজার রফিক শেখের অভিযোগ, “রাতের অন্ধকারে নদীর পাড় লাগোয়া জমির মাটি কাটা হচ্ছে। সে ব্যাপারে আমাদের কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি। আমরা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।”
অভিযোগকারীদের একাংশ জানাচ্ছেন, শক্তিপুর বাজারে এক ট্রাক্টর মাটি বিক্রি হয় ৬০০-৬৫০ টাকায়। সেই মাটি যখন কাটা হচ্ছে তার দাম ৩০০-৩৫০ টাকা। স্থানীয় ভাবে কিছু মাটি মাফিয়া সেই টাকায় চুক্তি করে মাটি বিক্রি করছে। তারা কেউ ৫০ থেকে ১০০ বিঘা জমি জবরদখল করে কারবার চালাচ্ছে। রামনগরের প্রশান্ত ঘোষ বলছেন, “এই মাটি মাফিয়ারা এলাকারই লোক। তারা পেশির জোরে জমি দখল করে রেখেছে। মিলের লোকজন প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রকাশ্যে মারও খেয়েছেন। মাটি নিয়ে এই এলাকায় বিরাট ব্যবসা চলছে। তার লাভও খাচ্ছে অনেকেই। এ দিকে, যাঁদের জমি তাঁদের লোকসান হচ্ছে আর নদী পাড়ের বাসিন্দারা ভাঙনের আতঙ্কে সিঁটিয়ে থাকছেন।’’
চলতি মাসেই রামনগর ও বিদুপাড়া এলাকার বেশ কিছু লোকজন স্থানীয় ব্লক ও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। সেই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখার সুপারিশ করেছেন বেলডাঙা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ সভাপতি ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ। রামনগরের বাসিন্দা ও পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি যাদব ঘোষ বলেন, “রাতের অন্ধকারে নদীর পাড় থেকে রোজ মাটি চুরি হচ্ছে। এই এলাকা ভাঙনপ্রবণ। এ ভাবে মাটি কাটলে মানুষ সমস্যায় পড়বেন। অথচ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
বেলডাঙা ২ বিডিও সমীররঞ্জন মান্না বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে বিষয়টা দেখতে বলা হয়েছে।” বেলডাঙা ২ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে আমরাও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy