Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পেঁয়াজির দিন ফুরালো আসাদুলের

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আসাদুলের পেঁয়াজির কদর আশপাশের গাঁ-গঞ্জেও। সেখান থেকে সাইকেলে, পায়ে হেঁটেও মানুষজন আসতেন পেঁয়াজির খোঁজে।

এখন পেয়ারা বিক্রি করেন আসাদুল। নিজস্ব চিত্র

এখন পেয়ারা বিক্রি করেন আসাদুল। নিজস্ব চিত্র

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
রানিনগর শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১৯
Share: Save:

পেঁয়াজির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা প্রায় বিশ বছরের। সকালে কেনা পেঁয়াজ খোসা ছাড়িয়ে, কেটে-ভেজে, চোখ ভরা এক রাশ জল নিয়ে সন্ধ্যায় পেঁয়াজির প্রস্তুতি।

পেঁয়াজের সঙ্গে সেই সম্পর্কটাই ভেঙে যেতে বসেছে আসাদুলের। সীমান্তের গঞ্জ শেখপাড়ার চৌরাস্তার মোড়ে ফুটপাথের উপরে বিশ বছর ধরে পেঁয়াজির কারবার আসাদুল শেখের। বলছেন, ‘‘ফুটন্ত তেলে পেঁয়াজি ছাড়ার সেই দিনগুলো বড় মনে পড়ে।’’ পেঁয়াজের ছেঁকা লাগা দর দেখে আর পেঁয়াজ কিনতে পারেন না তিনি। সে সব অতীত করে এখন পেয়ারা বেচেন আসাদুল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আসাদুলের পেঁয়াজির কদর আশপাশের গাঁ-গঞ্জেও। সেখান থেকে সাইকেলে, পায়ে হেঁটেও মানুষজন আসতেন পেঁয়াজির খোঁজে। কিন্তু এখন এসে দেখেন, এক ঝুরি পেয়ারা নিয়ে বসে আছেন আসাদুল। সন্ধ্যায় আসাদুলের গনগনে আঁচ আর ফুটন্ত তেলের কড়াইয়ের বদলে নিঝুম দোকান দেখে ফিরে যান তাঁরা। তেলে ভাজা বিক্রি করার কাঠের পাটাতনে তখন পড়ে থাকে উপুর করা পেয়ারার ঝাঁকা।

বছর পঞ্চাশের আসাদুল শেখ বলছেন, ‘‘এক টাকা করে যখন পেঁয়াজির দর, তখন থেকে পেঁয়াজি ভাজছি। এর আগেও পেঁয়াজের দর নিয়ে ঝামেলায় পড়েছি। তবে বন্ধ করে দিতে হয়নি, তুলে রাখতে হয়নি সাধের তেল-কড়া। কিন্তু পেঁয়াজিতে যদি পেঁয়াজই দিতে না পারি তা হলে দোকান খুলে লাভ কী!’’ তাই বাজার থেকে পেয়ারা কিনে বেচছেন আসাদুল।

সাগরপাড়ার বাসিন্দা ইসলামপুর চক গার্লসের শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা মন্ডল প্রায় বছর দশেক ধরে ওই রাস্তায় যাতায়াত করেন। বলছেন, ‘‘দশ বছর ধরেই ওঁকে (আসাদুল) দেখছি পেঁজ়য়াজি ভাজতে। হঠাৎ করে দিন কয়েক আগে লক্ষ্য করলাম তাঁর ঝাঁকায় পেয়ারা। বাস থেকে নেমে পড়লাম।। সব শুনে মনখারাপ হয়ে গেল জানেন!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Onion Seller Onion Fry Onion Price
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE