—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
২০২২ সালের মার্চ মাস। ভারতীয় রেলের তরফে দু’টি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ আটকাতে বিশেষ প্রযুক্তি পরীক্ষামূলক ভাবে সফল বলে জানিয়ে দেয় রেল। খোদ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ওই পরীক্ষায় অংশ নেন। ওই প্রযুক্তি ১০০ শতাংশ সাফল্য পেয়েছে বলে জানিয়েও দেন তিনি।
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি রেলের স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কবচ’। তবে সেই প্রযুক্তি পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনে প্রয়োগ করা হয়নি বলে সম্প্রতি একটি আরটিআই-এর (তথ্য অধিকার আইন) জবাবে জানিয়েছে পূর্ব রেল। ‘স্বয়ং সক্রিয়’ প্রযুক্তি কেন পূর্ব রেলে প্রয়োগ নয়? এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে।
রানাঘাটের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক জয়দেব মুখোপাধ্যায় মাসখানেক আগে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনে একটি আরটিআই করেন। তাতে রেলের কাছে দু’টি প্রশ্নের জবাব চান তিনি। প্রথমত, ট্রেনের সুরক্ষা ব্যবস্থা শিয়ালদহ-রানাঘাট শাখা অর্থাৎ শিয়ালদহ মেন শাখায় ‘কবচ প্রযুক্তি’ ব্যবহার করা হয় কি? দ্বিতীয়ত, যদি ওই শাখায় ‘কবচ প্রযুক্তি’ ব্যবহার না হয়ে থাকে, তবে কবে থেকে তা কার্যকর হবে?
প্রথম প্রশ্নের জবাবে রেলের তরফে জানানো হয়েছে— ‘‘শিয়ালদহ ডিভিশনে কবচ ট্রেন সুরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়া হয়নি।’’ আর দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাব— ‘‘সদর দফতর থেকে কাজের অনুমোদন এবং পরিকল্পনার পরেই কবচ ট্রেন সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রদান করা হবে।’’
বিষয়টি নিয়ে আবেদনকারী জয়দেব বলেন, ‘‘সম্প্রতি পর পর কয়েকটি রেল দুর্ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। দুর্ঘটনার পর শোনা গিয়েছে যে কবচ সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকলে হয়তো ওই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। তাই শিয়ালদহ মেন লাইনের ওই প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে কিনা জানতে চেয়েই আরটিআই করি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রেলের দেওয়া জবাবে এটা স্পষ্ট, অদূর ভবিষ্যতে ‘কবচ’ নামক আধুনিকতম রেল সুরক্ষা ব্যবস্থা শিয়ালদহ ডিভিশনে চালু হওয়ার কোনও আশা নেই।’’
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু বছর আগে নিজামুদ্দিন ও আগরা রুটে ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার গতিতে গতিমান এক্সপ্রেস ছোটানোর সময় ইউরোপীয় ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আদলে এ দেশেও ট্রেন ‘প্রোটেকশন ওয়ার্নিং সিস্টেম’ নিয়ে শুরু হয় কাজ। ওই প্রযুক্তির পরে কিছুটা বদল এনে গড়ে তোলা হয় ‘কবচ’ সুরক্ষা। মূলত জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) এবং আরএফআইডি (রেডিয়ো ফিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকশন) প্রযুক্তির সমন্বয়ে নির্ভুল ভাবে দু’টি ট্রেনের মধ্যের দূরত্ব নির্ণয় করতে পারে। রেললাইনে বসানো আরএফআইডি রিডার এবং ইঞ্জিনে বসানো ট্যাগের সাহায্যে ট্রেনের নির্ভুল অবস্থানের বার্তা পৌঁছয় স্টেশন কন্ট্রোলে। একই সঙ্গে চলার পথে সব সিগন্যালের রং এবং দূরত্ব চালক কেবিনে বসে
দেখতে পান।
কবচ ব্যবস্থায় চালক সিগন্যাল উপেক্ষা করলে বা অসতর্কতা বশত নির্দিষ্ট গতির তুলনায় বেশি গতিতে ট্রেন ছোটালে তা নিজে থেকেই থেমে যাবে। এড়ানো যাবে সিগন্যাল উপেক্ষার বিপত্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy